করোনার দুশ্চিন্তা ক্রমেই ঠেলে দিচ্ছে অন্য অসুখের দিকে। ছবি: শাটারস্টক।
করোনা-লকডাউন-আমপান মিলিয়ে পরিস্থিতি একেবারেই ভাল নয়। নিজের এবং কাছের মানুষদের নিয়ে অসহায় দুশ্চিন্তা যেমন আছে, তেমনই সংসার ও ঘরে বসে অফিস সামলানোর চাপও রয়ে গিয়েছে। এর উপর আবার এই পরিস্থিতিতে বেসরকারি সংস্থায় চাকরি থাকবে কি না, থাকলেও কত দিন, বেতন কাটা হবে কি না, কাটলেও কী পরিমাণে কাটা হবে... এ সব নিয়েও উদ্বেগে রয়ছেন অনেকেই। আর এ সব থেকে অ্যাংজাইটি অ্যাটাক হওয়ার শঙ্কা থেকেই যায়।
মনোবিদ অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ের মতে, “এই পরিস্থিতিতে সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষজনই অস্থির হয়ে পড়ছেন। যাঁরা মানসিক উদ্বেগের রোগী, তাদের তো এই সময় স্বাভাবিক ভাবেই অসুখ বাড়বে। বাতাসে দূষণ কম বলে এখন সাধারণ শ্বাসকষ্ট কম হলেও অ্যাংজাইটি অ্যাটাক থেকে হওয়া শ্বাসকষ্ট কিন্তু দিন দিন বাড়ছে।’’
সাধারণত, কোনও কারণে আমাদের দুশ্চিন্তা বেড়ে গেলে, বা ভয় পেলে অনেকেই জোরে জোরে শ্বাসপ্রশ্বাস নেন। কারও বা বুকে চাপ লাগে, অস্বস্তি হয়। মাথা ঘোরা, গা গোলানো, ঘাম হওয়া, দম বন্ধ লাগা এগুলোও অ্যাংজাইটি অ্যাটাকের অন্যতম লক্ষণ। আসলে ভয় পেলেই মস্তিষ্কের রক্তে আপদকালীন হরমোন বা অ্যাড্রিনালিন বেশি পরিমাণে মেশে। তাই তখন রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ ঠিক থাকলেও তখন শ্বাসকষ্টের অনুভূতি হবে। সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেমই এই অবস্থার জন্য দায়ী।
আরও পড়ুন: লকডাউনে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন, কী কী করবেন?
সংক্রমণের পরিস্থিতিতে হলুদ মেশানো দুধ নেই খাদ্যতালিকায়? অজান্তেই কী কী ক্ষতি হচ্ছে জানেন!
চাকরির দুশ্চিন্তাও বাড়াচ্ছে উদ্বেগ। ছবি: শাটারস্টক।
কী করবেন?
• মনোবিদ অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ের মতে, প্রথমেই মনে রাখতে হবে, এমন পরিস্থিতি আপনার একার নয়। কমবেশি অনেকেরই। তাই এই পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। যাঁরা চাকরির জন্য নতুন কোথাও আবেদন করছেন বা যাঁরা নিজের অফিস নিয়ে চিন্তায় আছেন, তাঁরাও লকডাউন কেটে না যাওয়া অবধি সে ভাবে কোথাও কোনও সমাধান খুঁজে পাবেন না হয়তো। এই সময়টুকু নিজেকে দিতে হবে।
• খুব ভয় পেলে বা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা হলে মেডিটেশন করুন। এমন কোনও বন্ধুর সঙ্গে কথা বলুন, যাঁর সঙ্গে অনেক মনের কথা ভাগ করতে পারেন, যিনি আপনাকে বোঝেন।
• প্রাণায়াম করলে বা নিয়মিত ব্যায়াম করলেও মনাসিক উদ্বেগ থেকে উপকার পাওয়া যায়।
• তা ছাড়া আজকাল অনলাইনে মনোবিদের সঙ্গে কথা বলে সেশন নেওয়া যায়। কোনও ভাবেই মনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।