সাধের কাঠের আসবাব নতুনের মতো রাখার উপায় জেনে নিন। ছবি: সংগৃহীত।
পুরনো দিনের কাঠের আসবাব মানে তার আভিজাত্যই আলাদা। শাল, সেগুন বা মেহগনি কাঠের খাট, আলমারি বা ড্রেসিং টেবিল যা-ই থাকুক না কেন, সেগুলির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণও জরুরি। আপনার পূর্বজদের দেওয়া পুরনো দিনের কাঠের আসবাবপত্র সঠিক যত্ন নিয়ে রাখলে তা যেমন বাড়ির শোভা বাড়ায়, তেমনই আপনার রুচিরও পরিচয় দেয়। কিন্তু যদি কাঠের আসবাব হেলাফেলায় থাকে বা তার যত্ন নেওয়া না হয়, তা হলে দেখবেন তাড়াতাড়ি সেগুলিতে ঘুণ ধরতে শুরু করেছে। ঘুণপোকা কাঠের আসবাবের ভিতরেই তাদের ঘাঁটি তৈরি করে। ফলে ভিতরে ভিতরে ক্ষয়ে যেতে শুরু করে আসবাব।
কী ভাবে যত্ন নেবেন?
১) ঘুণপোকা ভেজা কাঠেই জন্মায়। ভেজা, স্যাঁতসেঁতে জায়গাতেই ডিম পাড়ে। কাঠের আসবাব সব সময় শুকনো রাখতে হবে। বর্ষার দিনে আরও বেশি সতর্কতা জরুরি। আসবাবে জল পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তা মুছে ফেলুন। কখনওই ভেজা কাপড় দিয়ে কাঠের আসবাব পরিষ্কার করবেন না। সব সময় শুকনো সুতির কাপড়ে আসবাব ভাল করে মুছে রাখতে হবে।
৩) কাঠের আসবাবে কোনও ছিদ্র হয়েছে কি না লক্ষ্য রাখুন। পুরনো দিনের কাঠের আসবাব হলে এমন হতে পারে। তেমন দেখলে কারিগর ডেকে ঠিক করিয়ে নিতে হবে। মোম বা গালা জাতীয় কিছু দিয়ে আসবাবের ছিদ্র বন্ধ করে দেওয়া প্রয়োজন। না হলে ওই ছিদ্রপথেই ঘুণপোকা আসবাবে ঢুকে ডিম পাড়বে।
৪) আপনার সাধের সেগুন বা মেহগনি কাঠের খাট বা আলমারির বয়স কি অনেক? তা হলে এক বার বার্নিশ বা রঙের প্রলেপ লাগিয়ে দিন। রঙের উগ্র গন্ধ কোনও পোকামাকড়ই সহ্য করতে পারে না।
৫) কাঠের আসবাবে ঘুণ ধরতে শুরু করলে সেই আসবাব বাকিগুলির থেকে আলাদা করে রাখুন। তবে ঘুণপোকা ধরেছে মানেই আসবাবটি বাতিল করে দিতে হবে তা কিন্তু নয়। কারিগর ডেকে ঘুণ ধরা অংশটি ফেলে দিন। সেই জায়গাটিতে মেরামত করে দিতে বলুন। তা হলেই সমস্যার সমাধান হবে।
৬) বোরন পাউডারও ঘুণের থেকে আসবাবকে বাঁচাতে পারে। বাজার থেকে কিনে এনে আসবাবে স্প্রে করতে পারেন।
৭) নিমতেল যে কোনও পোকামাকড়ের উপদ্রব কমাতে পারে। বাড়িতে যদি পোকার উৎপাত বাড়ে, তা হলে সপ্তাহে তিন দিন নিমতেল বাড়ির মেঝে, কাঠের আসবাবে স্প্রে করুন। উপকার পাবেন।
৮) নারকেল তেলের সঙ্গে কর্পূর মিশিয়ে আসবাবের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় প্রলেপ দিতে পারেন। তা ছাড়া চায়ের লিকারও উপকারী। দুধ-চিনি ছাড়া চায়ের লিকার ঘন করে তৈরি করুন। এর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ভিনিগার মিশিয়ে আসবাবের যে জায়গাগুলিতে ঘুণ ধরেছে সেখানে লাগিয়ে দিন।
৯) আরও একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে। কাঠের আসবাব যদি বানাতে দেন, তা হলে খেয়াল করবেন কী ধরনের কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। ভেজা কাঠ হলে তা দ্রুত নষ্ট হবে। পেশাদার কাউকে দিয়ে কাঠ যাচাই করিয়ে নিন।