— প্রতীকী চিত্র।
দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। সকালে ঘুম চোখ খুলে যে ব্রাশটি মুখে দিয়ে দাঁত মাজতে হয়, তা-ও প্লাস্টিকের। সকালে শিশুর মুখের সামনে যে দুধের গ্লাসটি ধরেন, সেই দুধের প্যাকেটও প্লাস্টিক দিয়েই তৈরি। স্বাস্থ্য সচেতন, তাই অফিসে রান্না করা বাড়ির খাবার নিয়ে যান। কিন্তু সেই খাবার নিয়ে যান প্লাস্টিকের টিফিন বক্সে। সেই খাবার খাওয়ার আগে তা আবার মাইক্রোওভেনে গরমও করে নেন। এ ছাড়া রান্না করা খাবার রাখার জন্যেও অনেকে প্লাস্টিকের বাক্স ব্যবহার করেন। অনেকে বলে্ ফ্রিজে ধাতুর, ভারী বাক্স ব্যবহার করলে নাকি বিদ্যুৎ পোড়ে বেশি। তাই মোটা অঙ্কের বিদ্যুতের বিলে রাশ টানতে প্লাস্টিকের বাক্সে খাবার রাখেন বেশির ভাগ মানুষ। মাইক্রোওয়েভ প্রুফ বাক্স হলে, ফ্রিজ থেকে বার করা খাবার গরম করতেও সুবিধা হয়।
তবে দীর্ঘ দিন ধরে চলা এই অভ্যাস নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা। কারণ, উদ্বৃত্ত খাবার প্লাস্টিকের বাক্সতে রেখে, তার পর তা আবার গরম করার প্রক্রিয়াটি স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই ভাল নয়। প্লাস্টিক গরম করলে তা থেকে নানা ধরনের রাসায়নিক নির্গত হয়। যা খাবারের সঙ্গে মিশে শরীরে প্রবেশ করলে, তা থেকে ক্যানসারের মতো জটিল রোগ হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, প্লাস্টিকজাত বর্জ্য থেকে পরিবেশ এবং অন্যান্য প্রাণীদেরও প্রাণসংশয় ঘটতে পারে।
বড় বড় চিকিৎসক থেকে বিজ্ঞানীদের মত, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে কাচের পাত্র বা বাক্স ব্যবহার করাই ভাল। আর একান্ত বাইরে কোথাও গেলে যদি কাচের জিনিস নিয়ে যেতে অসুবিধা হয়, সে ক্ষেত্রে যে সব টিফিন বাক্স ‘পলিথিলিন টেরেফ্থ্যালেট’ বা ‘পেট’ বলে চিহ্নিত, সে গুলিই ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্লাস্টিকের কৌটো বা টিফিন বক্সে যদি খাবার রাখতেই হয়, সে ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখতে হবে?
১) এমন কৌটো কিনতে হবে যা ‘ফুড গ্রেড’ বা ‘বিপিএ’ মুক্ত।
২) যত দামি হোক না কেন, খাবার গরম করার ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের কোনও পাত্র ব্যবহার না করাই ভাল।
৩) প্লাস্টিকের কোনও বাক্সে বা পাত্রে আঁচড়ের দাগ পড়ে গেলে বা কোনও অংশ ফেটে বা নষ্ট হয়ে গেলে তা আর ব্যবহার না করাই ভাল।
৪) কী ধরনের প্লাস্টিক কেমন তাপ সহ্য করতে পারে, তা জেনে সেই অনুযায়ী মাইক্রোওয়েভের তাপমাত্রা সেট করতে হবে।
৫) বেঁচে যাওয়া খাবার প্লাস্টিকের কৌটোতে রাখলেও তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খেয়ে ফেলতে হবে।