দীপাবলি হোক একটু অন্যরকম। ছবি: সংগৃহীত।
দুর্গাপুজোর পর থেকে ক্রমশ আবহাওয়া বদলাতে শুরু করে। সকাল, সন্ধ্যায় হালকা ঠান্ডা ভাব। এই সময় বাতাসও কিছুটা দূষিত হতে শুরু করে। তার উপর কালীপুজো, দীপাবলির সময় বাজি ফাটানোর জেরে সেই মাত্রাও বেড়ে যায়। বাতাসে বিষ মানে, তাতে ক্ষতি সকলেরই। পরিবেশকে বাঁচাতে সকলে উদ্যোগী না হলে, বিপদ আরও বাড়বে বই কমবে না।
এমন সময় আলোর উৎসব পালন করতে পারেন একটু অন্য ভাবে। সমস্ত আনন্দই থাকবে, তার সঙ্গে থাকবে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা। এ থেকে বড়দের দেখেই শিখবে খুদে। কী ভাবে কালীপুজো, দীপাবলিকে পরিবেশবান্ধব করে তুলবেন?
বাতি
দীপাবলি আলো ছাড়া কি ভাবা যায়? এখন সুবিধার জন্য প্লাস্টিকের বাতি, প্রদীপ, ফুল, রকমারি আলো পাওয়া যায়। ব্যাটারি দিয়ে এগুলি জ্বলে। যখন এ সব ছিল না, ঘর সাজত মাটির প্রদীপে। অন্দর কিংবা বহির্সজ্জায় ফিরিয়ে আনতে পারেন পুরনো ছোঁয়া। এখন রকমারি নকশা করা প্রদীপ পাওয়া যায়। তা দিয়েই সাজিয়ে ফেলুন বাড়ি।
রঙ্গোলি
এই উৎসবে রঙ্গোলি দেওয়ার চল মূলত অবাঙালিদের মধ্যে। তবে এখন বহু বাঙালি ঘরেও রঙ্গোলি দেওয়া হয়। খুদেদেরও এই পর্বে শামিল করতে পারেন। তবে বাজারচলতি রং নয়, রঙ্গোলির জন্য বেছে নিন জৈবিক রং।
ফুল
অন্দরসজ্জায় কৃত্রিম ফুল বা জিনিসপত্রের বদলে ব্যবহার করুন টাটকা ফুল। দূষণ কমাতে ঘরে রাখুন গাছের ছোঁয়া। অন্দরসজ্জায় সবুজের ব্যবহারে ঘর যেমন সুন্দর দেখাবে, তেমনই কিছুটা হলেও ঘরের ভিতরের বাতাস শুদ্ধ থাকবে।
বাজি
শব্দবাজি নিষিদ্ধ। কিন্তু তার পরেও বোমা, কালীপটকা, দোদোমার মতো শব্দবাজি ফাটে। এই বিষয়ে শুরু থেকে সচেতন হলে, শব্দ-দৌরাত্ম্য কমানো সম্ভব। খুদের হাতে বাজি তুলে দিতে হলে বেছে নিন পরিবেশবান্ধব ‘সবুজ বাজি’। সিআইএসআর-নিরি (ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট)-র দীর্ঘ গবেষণার ফল সবুজ বাজি। এই বাজিতে বেরিয়াম যৌগ ব্যবহার করা হয় না। বাজি পোড়ালে বাষ্প বেরিয়ে আসে, তাই খুব বেশি ছাই বা ধুলো বার হয় না। তবে এতে দূষণের মাত্রা কম হলেও, একেবারেই যে হয় না তা নয়। তাই শুধু বাজি পোড়ানোয় উদ্যাপন সীমাবদ্ধ না রেখে অন্য ভাবেও উৎসব উপভোগ করতে পারেন।
উপহার
উৎসবের উপহারও এমন হোক, যাতে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা থাকে। সেখানে গাছ দেওয়া যেতে পারে। উপহারের তালিকায় থাকতে পারে বীজ ভরা কাগজের পেন। তবে উপহার যা-ই হোক না কেন, প্লাস্টিক দিয়ে তা মোড়ানো চলবে না। বাদ দিতে হবে ক্ষতিকর জিনিসটি।
এ ছাড়াও উৎসবের মরসুমে ঘর সাজাতে বেছে নিতে পারেন এলইডি আলো। এতে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়। পরোক্ষ ভাবে যা পরিবেশের জন্য ভাল। এ ছাড়া পোশাক হিসাবেও পরিবেশবান্ধব, জৈব রংয়ের শাড়ি, জামা বেছে নিতে পারেন।