উৎসবের আবহে ফুল-আলোয় সেজে উঠুক ঘর।
সামনেই আলোর উৎসব। বাঙালির কালীপুজো, অবাঙালিদের দিওয়ালি। উৎসব যার কাছে যেমনই হোক না, এই সময় ঘরের ভিতর এবং বাইরে আলোকসজ্জায় সাজানোর চল রয়েছে। প্রদীপ, টুনি-সহ রকমারি আলোয় প্রায় সকলেই যে ভাবে পারেন, সাজিয়ে তোলেন বাড়ি।
তবে শুধু বাড়ির বাইরে নয়, উৎসবের দিনে ঘর সাজানো হবে না, তা-ও কি হয়? অন্দরসজ্জায় খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে টেবিল। বসার ঘরে সোফার সামনে টেবিল রয়েছে। কেউ সেই ঘরে এলে সোফায় বসার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর নজর পড়বে সেখানে।
দীপাবলির সময় বসার ঘর হোক বা খাওয়ার ঘরের টেবিল, সাজিয়ে তুলতে পারেন নানা ভাবে। সেখানে রাখতে পারেন সাবেকি ছোঁয়া। আবার আধুনিকতার মিশেলে সেখানে নিজস্ব রুচি-পছন্দের ছাপও রাখতে পারেন।
আলো-ফুলের যুগলবন্দি
ঘরের মধ্যমণি হয়ে থাকা টেবিলটিকে আলোর উৎসবে ফুল, আলোয় সাজাবেন। নানা ভাবেই সে কাজ করতে পারেন। একেবারে সাবেকি কায়দায় অন্দরসজ্জা করতে গেলে ব্যবহার করতে পারেন পিতলের সুদৃশ্য থালা। দীপাবলির আগে মিনাকারি থালার বিক্রি বেড়ে যায়। শুধু থালা নয়, পিতলের রকমারি নকশার ঘর সাজানোর জিনিসও পাওয়া যায়। যেখানে একই সঙ্গে ফুল রাখা যায়, আবার মোমবাতিও। তেমনই কিছু বেছে নিতে পারেন। থালায় রকমারি ফুলের পাপড়ি সাজাতে পারেন। আবার থালার বদলে বাটি নিয়ে তাতে জল দিয়ে রকমারি জারবেরা ফুল ভাসিয়ে দিতে পারেন। এর সঙ্গে কয়েকটি ভাসমান বাতি যোগ করলেই, ঘরের রূপ বদলে যাবে।
আলো-ফুলে ছোঁয়ায় অন্দরসজ্জায় থাক উৎসবের আবহ। ছবি: সংগৃহীত।
টিব
তবে যদি আধুনিকতার ছোঁয়া আনতে চান, ব্যবহার করতে পারেন কাচের পাত্র, ওয়াইন গ্লাস। ফুল সাজানোর কাঁটায় কোনও টাটকা সুন্দর ফুল ডাঁটি সমেত আটকে তার উপরে ওয়াইন গ্লাসটি উপুড় করে দিতে পারেন। পাশাপাশি দু’টি গ্লাস এ ভাবে সাজাতে হবে। গ্লাসটির ডাঁটির মতো অংশের শেষপ্রান্তে বসিয়ে দিন দু’টি সুদৃশ্য বাতি। তারই পাশে বেশ বড় স্বচ্ছ কাচের ছড়ানো গামলায় জল নিয়ে তাতে ভাসিয়ে দিন সাদা বা রঙিন জারবেরা।
বাতি
আলোর উৎসবে রকমারি বাতিতেও সাজিয়ে তোলা যায় টেবিল। ছোট, বড়, লম্বা, খাটো, রকমারি বাতিদান পাওয়া যায়। কোনওটি কাচের, কোনওটি রট আয়রনের, কোনওটি পিতলের। সেই সমস্ত বাতিদানে মানানসই বাতির ব্যবস্থা করলেই ঘর ভরবে আলোয়। আবার মাটির সুদৃশ্য পাত্রে জলের উপর বাতিও ভাসিয়ে দিতে পারেন। সুগন্ধি বাতি উৎসবের আবহে অন্য মাত্রা দেবে।
রকমারি বাতি দানে, জ্বলে উঠুক বাতি। টেবিল সাজাতে পারেন এ ভাবেও। ছবি: সংগৃহীত।
রঙ্গোলি
টেবিলটি যদি স্বচ্ছ কাচের হয়, তা হলে রঙ্গোলিও করতে পারেন। দীপাবলির সময় রঙ্গোলি দেওয়া অবাঙালিদের অনেকেরই রীতির মধ্যে পড়ে। তবে সেই রীতি ছাড়াই শুধু ঘর সাজাতে টেবিল জুড়ে গুঁড়ো রঙে নকশা তুলতে পারেন। তার সঙ্গে জ্বলন্ত মাটির প্রদীপের ছোঁয়া থাকলে রূপ আরও ভাল লাগবে।
ভাস্কর্য
টেবিলের র্শোভা বর্ধনে রাখতে পারেন মূর্তি, ভাস্কর্য। ছবি: সংগৃহীত।
তবে সাবেকি ছোঁয়া যে রাখতেই হবে, এমন নয়। আধুনিক অন্দরসজ্জার সঙ্গে টেবিলের সাজ মানানসই করতে বেছে নিতে পারেন যে কোনও ভাস্কর্য। সেই তালিকায় মূর্তি থেকে থাকতে পারে ‘মডার্ন আর্ট’-এর ছোঁয়াও।
টেরারিয়াম
টেরারিয়ামেও সেজে উঠতে পারে উৎসবমুখর বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত।
একটু অন্য ভাবে টেবিল সাজাতে চাইলে বেছে নিতে পারেন বিভিন্ন ধরনের টেরারিয়াম। ছোট আকারের গাছপালা, শৈবাল, নানা রঙের পাথর দিয়ে সাজানো হয় এগুলি। বাহারি টেরারিয়াম টেবিল সাজাতে ব্যবহার করলে, ঘরে যেমন সবুজের ছোঁয়া থাকবে, তেমনই তা দৃষ্টিনন্দনও হবে।