এই ফল কেন রোজ খেতেই হবে? ছবি: শাটারস্টক থেকে নেওয়া
আজকাল প্রায় সব মরসুমেই বাজারে এই ফলের দেখা মেলে। ফলে রোজকার ডায়েটে এটি রাখতে অসুবিধে নেই। আর ভিটামিন সি-যুক্ত এই ফলে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে ভরপুর। কার্ডিওভাসকুলার অসুখ, ছানির সমস্যা, বার্ধক্যের ছাপ? তা হলে রোজ অবশ্যই এই ফল খেতে হবে।
কোন ফলের কথা বলা হচ্ছে বলুন তো? একে ‘আন্ডাররেটেড সুপারফুড’ বলে উল্লেখ করেছেন পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তী। যদিও অল্প ঝাল নুন মিশিয়ে এই ফলের টুকরো মুখে দিলেই স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে টিফিন ভাগ করে খাওয়া কিংবা ছুটির দুপুরে লীলা মজুমদার পড়ার কথা মনে পড়বেই। ঠিকই ধরেছেন। গরিবের আপেল মানে পেয়ারার কথাই বলা হচ্ছে।
পেট ভাল রাখতে পেয়ারা খান নিয়মিত। পেয়ারায় রয়েছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট ও অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল গুণ। যা ডায়ারিয়াতে ম্যাজিকের মতো কাজ দেয়। এ ছাড়াও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। স্ট্রেস দূর করতেও পেয়ারার জুড়ি মেলা ভার।
আরও পড়ুন: খাদ্যতালিকায় রাখতেই হবে চিনাবাদাম, জেনে নিন কতটা আর কী ভাবে খাওয়া উচিত
কেন জানেন? কারণ পেয়ারায় রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম। পেশী আর স্নায়ুতন্ত্র রিল্যাক্সে সাহায্য করে ম্যাগনেসিয়াম। করোনা আবহে এমনিতেই মানুষের মধ্যে স্ট্রেস বেড়েছে, তাই এই ফল রাখতেই পারেন ডায়েটে। সর্দি-কাশির সমস্যা দূর করতেও ডায়েটে থাকুক একটি পেয়ারা।
আরও পড়ুন: ভেগান ডায়েট কী? এ নিয়ে যা আপনাকে মাথায় রাখতেই হবে
পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তী বলেন, “ডায়াবিটিস রুখতে পেয়ারার জুড়ি মেলা ভার। নিয়মিত পেয়ারা খেলে টাইপ-২ ডায়াবিটিস হওয়া থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। ফলে মানবদেহে সুগারের পরিমাণ শুষে নিয়ে তা অনেকটাই কমিয়ে দেয় পেয়ারা। এ ছাড়াও অ্যান্টি অক্সিড্যান্টের মাত্রা বেশি থাকায় ক্যানসার প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে এই ফল। প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় জীবনীশক্তি বাড়িয়ে জীবাণু সংক্রমণেও সাহায্য করে এই ফল। ১০০ গ্রাম আপেলে যেখানে এক মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে, পেয়ারায় তার পরিমাণ ২১২ মিলিগ্রাম। অন্য দিকে, এই ফল ভিটামিন এ-র ভাণ্ডার। যা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।’’
পেয়ারায় রয়েছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট ও অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল গুণ। ছবি : শাটারস্টক।
আরও পড়ুন: করোনা-আবহে দাঁতের চিকিৎসায় অবহেলা করছেন? কী বলছেন চিকিৎসকেরা?
পেয়ারায় থাকা ভিটামিন বি-৯ ও ফলিক অ্যাসিড গর্ভস্থ শিশুর স্নায়ুর বিকাশে সাহায্য করে। তাই অন্তঃসত্ত্বাদের ক্ষেত্রেও এই ফল খেতে বলেন চিকিৎসকরা। ভিটামিন বি থ্রি ও বি সিক্স থাকায় মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এই ফল। ফলে মস্তিষ্ক সচল থাকে। পেয়ারা হজমশক্তি যেমন বাড়ায়, তেমনই কমলালেবু, আপেল, আঙুরের মতো ফলের থেকে পেয়ারায় গ্লুকোজের পরিমাণও কম থাকে। ভিটামিন সি-এ উপস্থিত কার্টিনিন ফ্যাট ভেঙে দেয়। তাই এই ফল ওজন কমাতেও সাহায্য করে। ভাল রাখে ত্বকও।
কী ভাবে খেতে হবে পেয়ারা?
জ্যাম কিংবা জেলি নয়। একটা গোটা পেয়ারা ধুয়ে খেলে সবথেকে ভাল। কেটে খেলেও নুন ছাড়াই ফল খেলে উপকার পাওয়া যাবে। একান্তই চাইলে বিট নুন ব্যবহার করা যেতে পারে।