কোভিড-১৯ থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেবে মাল্টি মাস্ক, দাবি দীপক পাঠানিয়ার।
মাস্ক এবং ফেস শিল্ড এই দুয়ের ব্যবহারে জেরবার আপনি? কখনও মাস্কের স্ট্র্যাপ খুলে যাচ্ছে, আবার কখনও ফেস শিল্ডের সঙ্গে মাস্ক পরে কাজ করতে অসুবিধা, এদিকে খোলার উপায়ও নেই। এই সমস্যারই সমাধান হতে চলেছে খুব তাড়াতাড়ি। গোয়ার এক ডিজাইনার বানিয়ে ফেলেছেন মাস্ক ও ফেস শিল্ডের প্রোটোটাইপ। একটা মাত্র স্ট্র্যাপ দিয়ে বাঁধা এই প্রোটোটাইপ মাল্টি মাস্ক ব্যবহারের জন্যও সুবিধাজনক, এটি সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেবে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে দাবি দীপক পাঠানিয়া নামে এই ডিজাইনারের।
মার্চ মাসে প্রথমে করোনার অস্তিত্ব মিলেছিল, তারপর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে কোভিড-১৯, সেই সময়ই দীপক বুঝতে পেরেছিলেন মাস্ক এবং ফেস শিল্ড ভবিষ্যতে অন্যতম ভূমিকা পালন করতে চলেছে। এদিকে জৈব বর্জ্যের ফলে পৃথিবী ক্রমাগত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলেছে মাথায় ছিল সে কথাও। তখনই মাস্ক তৈরির ভাবনা শুরু করেন পাঠানিয়া। সেন্টার ফর ইনকিউবেশন অ্যান্ড বিজনেস অ্যাকসিলারেশনের (সিআইবিএ) দলের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মী, রাজনীতিবিদ, নিরাপত্তা রক্ষী, রিটেল কর্মী, সরকারি কর্মী এবং শিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের কথা মাথায় রেখে পুনর্ব্যবহারযোগ্য মাস্ক ডিজাইন করতে শুরু করেন তাঁরা ।
কী রয়েছে এটিতে
• এই ফেস শিল্ডটি মাস্কে সংযুক্ত করা, সঙ্গে রয়েছে স্ট্র্যাপটি।
• ফেস শিল্ডটি চাইলে খুলেও রাখা যেতে পারে প্রয়োজনমতো।
• ফেস শিল্ডটি চাইলে আবার মাস্কে জুড়েও নেওয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে কোনও স্ট্র্যাপের প্রয়োজন হবে না।
• মাল্টি মাস্ক পরলে কথা বলার সমস্যা হবে না। ফিল্টার পেরিয়ে গেলেও বাধা পড়বে না কথোপকথনে।
• মাস্কটি ধোওয়া যাবে।
•পরবর্তীতে ইলেকট্রনিক ফিল্টারও ফিট করা যেতে পারে মাস্কে। ফলে অডিও-ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়েও সমস্যা হবে না।
এই মাস্কের গ্রহণযোগ্যতা
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের ছাত্র পাঠানিয়া ইতিমধ্যেই এই মাল্টি মাস্কের জন্য পেটেন্টের আবেদন জানিয়েছেন। বিশ্বের আর কোথাও এমন কাজ হয়নি বলেই দাবি করেছেন তিনি। সম্প্রতি তিনি নিজের একটি সংস্থা তৈরি করেছেন, সেটি সিআইবিএ-র সঙ্গে কাজ করছে। মাস্কটির চূড়ান্ত ডিজাইন ঠিক করতে পুণের এক ডিজাইন সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধছেন দীপক।
আরও পড়ুন: কীভাবে শুরু মাস্কের ব্যবহার, এই মুহূর্তে কোন কোন বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে
বিশ্বের প্রথম মডিউলার মাল্টি মাস্ক তৈরি করে ফেলেছেন দীপক এবং তাঁর সহযোগীরা, দাবি এমনই। প্রথমে ক্রাউড ফান্ডিং অর্থাৎ জনগণের থেকেই টাকা সংগ্রহ করা এবং আমেরিকার ক্রাউড ফান্ডিং সাইট ইন্ডিগোগোর মাধ্যমে টাকা তোলার উদ্যোগ শুরু করেছেন দীপক।
তিনি বলেন, বিশ্বের সর্বত্র সেরা হিসাবে এই মাল্টি মাস্ক জায়গা করে নিক এমনই চান তাঁরা। তাই প্রোটোটাইপ পর্যায়ের জন্যই জনগণের থেকে তহবিল গড়ে কাজ করতে চাইছেন, ফলে এটির গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কেও ধারণা করা সহজ হবে বলে মনে করেন তিনি।
ত্রি স্তরীয় সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ চিকিত্সকের। ফাইল ছবি।
কী বললেন চিকিৎসকরা
এই প্রসঙ্গে মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, এই মাস্কটির ভাবনা ভাল এতে সন্দেহ নেই। তবে ব্যবহারকারীরাই সঠিক বলতে পারবেন। তবে অনেক মানুষের দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের প্রয়োজন রয়েছে। সেটা করার পরই বোঝা যাবে এর গুরুত্ব। এই মুহূর্তে বলা মুশকিল আদৌ এটি সফল কি না, কারণ ভাইরাস আটকাতে কতটা সক্ষম হবে এই মাস্ক তা দেখার প্রয়োজন রয়েছে।
এন-৯৫ ভালভবিহীন হলে তবেই তা ব্যবহার করা উচিত। ফাইল ছবি
জনস্বাস্থ্য চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, এই মুহূর্তে নানা রকম মাস্কই বাজারে আসছে। তবে সুরক্ষার কারণে সার্জিকাল ত্রি স্তরীয় মাস্ক ব্যবহার করতে পারলেই ভাল। ভালভবিহীন এন-৯৫ কিংবা ত্রি স্তরীয় সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন দুই চিকিৎসক।
আরও পড়ুন: জ্বরের মধ্যে দাঁত মাজতে গিয়ে রক্ত? ডেঙ্গি হেমারহেজিক ফিভার নয় তো
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)