গর্ভাবস্থায় ব্যথাদের সামলাতে ভরসা রাখুন ঘরোয়া উপায়ে। ছবি: শাটারস্টক।
হরমোনের ওঠা–পড়া ও শারীরিক পরিবর্তনের ফলে গর্ভাবস্থায় নানা ধরনের ব্যথা–বেদনা হয়। যত শরীর ভারী হতে শুরু করে, তত বাড়ে তার প্রকোপ। ওষুধপত্রও এ সময়ে বিশেষ খাওয়া যায় ন । ফলে সাধারণ নিয়মকানুন মেনে সে সব কমিয়ে রাখতে হয়।
এ সময় সবচেয়ে বেশি হয় পা–কোমর ব্যথা। প্রায় ৫০ শতাংশ গর্ভবতী মহিলার পায়ের শিরায় টান ধরে অসহ্য ব্যথা হয়। কারও হয় কব্জি ব্যথা। প্রসবের পর ধীরে ধীরে সব ঠিকঠাক হয়ে যায়, কাজেই উপশমের উপায় জানলে তেমন ভয়ের কিছু নেই।
কী করে সামলাবেন এমন হঠাৎ হানা দেওয়া ব্যথাদের? রইল হদিশ।
আরও পড়ুন: মধু-লেবুর জল নয়, মেদ গায়েব করতে ভরসা রাখুন এই পানীয়তে!
পায়ের শিরায় টান
রাতে শোওয়ার পরই বেশি হয়। পায়ের মাংসল অংশে শুরু হয় তীব্র যন্ত্রণা। সঙ্গে সঙ্গে পা মেলে পায়ের পাতাকে হাত দিয়ে নিজের দিকে টানলে কষ্ট কমে যায়। মালিশ করলেও আরাম হয়। সমস্যা এড়াতে শোওয়ার আগে দেওয়ালে হাত রেখে দু’ফুট মতো দূরে দাঁড়িয়ে, সামনে ঝুঁকে ১০ সেকেন্ড থেকে ৫ সেকেন্ড রিল্যাক্স করুন। ৩–৪ বার করে। জল খান পর্যাপ্ত। মদ, মিষ্টি, নরম পানীয়, চর্বিযুক্ত খাবার কম খান। না কমলে দিনে ২–৩ বার ৪০০ মিগ্রা ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন ই খেতে হতে পারে।
কোমর ব্যথা
যোগা, হাঁটা, সাঁতার বা অ্যারোবিক্স করুন। ভারী জিনিস তুলবেন না। বাচ্চাকে চেয়ার বা বিছানায় উঠিয়ে তবে কোলে নিন। মাটি থেকে কিছু তুলতে হলে কোমর ঝোঁকাবেন না, হাঁটু ভেঙে তুলুন। ভারী জিনিস বইতে হলে দু’হাতে ওজন ভাগ করে নিন। হিল তোলা জুতোর বদলে ফ্ল্যাট বা ভাল স্পোর্টস জুতো পরুন। সোজা হয়ে দাঁড়ান। কোমরের কাছে কুশন দিয়ে সোজা বসুন। পায়ের উপর পা রেখে বসবেন না। এতে কোমরে বেশি চাপ পড়ে। পাশে বা পিছনে কিছু করতে গেলে সেই দিকে ঘুরে কাজটা করুন। পাশ ফিরে শোওয়ার সময় পেটের নীচে বালিশ রাখুন। আরামদায়ক, দৃঢ় বিছানায় ঘুমোন। গদি নরম হলে উপরে কার্ডবোর্ড লাগান। বিশ্রাম নিন। বাড়াবাড়ি কষ্টে ডাক্তারের পরামর্শ মতো সাপোর্ট করসেট পরুন।
পা ব্যথা
কিছু ক্ষণ দাঁড়ালেই যদি পা ব্যথা হয়, শরীরের ওজন দু’পায়ে সমান ভাবে রেখে ও হাঁটু রিল্যাক্সড রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ান। আরামদায়ক জুতো পরুন। একটানা দাঁড়িয়ে না থেকে মাঝে মাঝে হাঁটুন। একটু বসুন।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সুস্থ থাকতে ভরসা রাখুন এ সব ব্যায়ামে, ঝরবে মেদও!
কারপাল টানেল সিনড্রোম
গর্ভাবস্থায় ১৮–২০ সপ্তাহের পর হাতের পাতা ফুললে নার্ভে চাপ পড়ে শুরু হয় কব্জি ব্যথা, আঙুলে সূচ ফোটানোর অনুভূতি ও আঙুলের গাঁটে আড়ষ্ট ভাব। রাতে কষ্ট বাড়ে। ব্যাঘাত হয় ঘুমের। রোগের প্রকোপ কমাতে, ঘুমের সময় হাত বালিশের উপর রাখুন যাতে তরল জমতে না পারে। সকালে উঠে হাত ঝুলিয়ে জোরে ঝাঁকান। কষ্ট বেশি হলে স্প্লিন্ট পরতে হতে পারে।
তবে এ সব উপায়েও ব্যথা আয়ত্তে আনতে না পারলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামরশ নিন।