শীতের শুরুতে চুলের যত্ন নিন এ ভাবে, ঝরবে না, ফাটবে না গোড়া

মাঝেমাঝে চুলকেও রাখতে হয়। যাতে তা হয়ে ওঠে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share:

চুল নিয়ে ভোগান্তি মেয়েদের সারা বছর। ঋতু ভেদে শুধু তার ধরন বদলে যায়। এখন তো শীত আসছে। অতএব শীতকালে চুলের নির্দিষ্ট কিছু সমস্যা রয়েছে, যা ইতিমধ্যেই হানা দিতে শুরু করে দিয়েছে। এখন আপনি বলতেই পারেন, তার জন্য হেয়ার প্যাক ব্যবহার করবেন কেন? এতে কি সমস্যার সমাধান হবে?

Advertisement

হেয়ার প্যাকের গুণ হচ্ছে, মাত্র কুড়ি মিনিটে এই মিশ্রণ চুলে যে পুষ্টি জোগাবে, তাতে একাধারে কন্ডিশনিং হবে, ঔজ্জ্বল্য আসবে, চুল থাকবে হাইড্রেটেড এবং দৈর্ঘ্যও বাড়বে। আর এর জন্য সালঁয় গিয়ে আপনাকে বাড়তি টাকা গুনতেও হবে না। তাই চুলের শীতকালীন সমস্যা যদি কোনও রোগ বা ওষুধের কারণে না হয়ে থাকে, তা হলে হেয়ার মাস্কের পরম যত্ন আস্তরণের মতো এমন ভাবে বসে থাকবে যে, তা ভেদ করে শীত চুলে কামড় বসাতে পারবে না।

Advertisement

সমস্যা কী কী?

প্রাকৃতিক কারণেই এই মরসুমে চুলে অভাব হয় ময়শ্চরাইজ়ারের। চুলে আর্দ্রতা হারানোর পাশাপাশি ড্রায়ারের ব্যবহার বা হেয়ার ট্রিটমেন্টের কারণে সমস্যা আরও বাড়ে। ফলে চুল হয় শুষ্ক। রুক্ষতা বাড়ে, চুল উসকোখুশকো দেখায়। স্ক্যাল্প ড্রাই হয়ে যায় বলে, খুসকির সমস্যা তো শীতকালে ভীষণ ভাবে মাথাচাড়া দেয়। তাই মাস্ক ব্যবহারের আগে দেখে নেওয়া প্রয়োজন, কী কারণে আপনি মাস্ক ব্যবহার করতে চান। সব সমস্যার সমাধান যে একই হবে, তা কিন্তু নয়।

কোন সমস্যায় কী মাস্ক?

খুসকির জন্য

শীতকালের ভীষণ চেনা সমস্যা। সারা বছর না থাকলেও এই মরসুমে অত্যন্ত জাঁকিয়ে বসে খুসকি। এর জন্য একটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে দু’টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ভাল করে মিশিয়ে স্ক্যাল্পে লাগান। শুকিয়ে গেলে ভাল করে ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিন। অথবা হাফ কাপ দইয়ের সঙ্গে দু’টেবিল চামচ লেবুর রস ও এক টেবিল চামচ মধু ব্লেন্ডারে ভাল করে মিশিয়ে নিন। একঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। লেবু এবং দই চুল খুসকিমুক্ত রাখে, অন্য দিকে মধু ময়শ্চারাইজ় করে। ফলে চুল হয় ফুরফুরে।

চুল পড়ার সমস্যায়

• এক টেবিল চামচ নারকেল তেল ও এক টেবিল চামচ মধু একটি পাত্রে নিয়ে ভাল করে মেশান। তার পরে তা গরম করে চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত ভাল করে মাখিয়ে, পুরো চুল ঢেকে রাখুন শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে। পরে ভাল করে ধুয়ে নিন।

• নারকেল তেল ও দারচিনি গুঁড়ো— দু’টি উপাদানই এক টেবিল চামচ করে মিশিয়ে নিন। মাঝখান দিয়ে সিঁথি করে চুল দু’ভাগ করে নিন। চুলের মাঝখান থেকে নীচ অবধি প্যাক লাগান। আঙুলের ডগা দিয়ে স্ক্যাল্পে ভাল করে মাসাজ করুন। তার পরে পুরো চুল তুলে মাথায় শাওয়ার ক্যাপ বা তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন। ৩০-৪৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। সপ্তাহে একদিন যে কোনও প্যাক লাগাতে পারেন।

তৈলাক্ত চুলের জন্য

একটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে হাফ পাতিলেবুর রস ভাল করে মিশিয়ে একটি পাত্রে রাখুন। মিশ্রণটি এতটাই ভাল করে মেশাবেন, যাতে তা খুব স্মুদ হয়ে যায়। সম্ভব হলে এর সঙ্গে এক কাপ নারকেলের দুধ এবং দু’টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মেশাতে পারেন। এতে আরও ভাল ফল পাবেন। এ বার মিশ্রণটি চুলের গোড়া থেকে ডগা অবধি আঙুল দিয়ে লাগিয়ে নিন। আধঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণটি লাগানোর ফলে চুল যেমন পুষ্টি পায়, তেমনই একদম গোড়া থেকে ময়শ্চারাইজ়ডও হয়। চুলের ডগাও ভাঙে কম।

শুষ্ক চুলের জন্য

এ ধরনের চুলের জন্য অলিভ অয়েল খুব উপকারী। কারণ শুষ্ক চুলের ন্যাচারাল কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে এটি। ফলে স্ক্যাল্পের ড্রাইনেসও কমে। একটি পাত্রে দু’টেবিল চামচ ব্রাউন সুগার ও এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল নিয়ে ভাল করে মেশান। তার পরে চুলের গোড়া থেকে ডগা অবধি ভাল করে মেখে মিনিট কুড়ি রেখে দিন। পরে শ্যাম্পু করে নিন। চটজলদি গ্লো আনতে এই প্যাকের জুড়ি নেই।

ফ্রিজ়িনেস দূর করতে

এ ধরনের সমস্যার সমাধানে কলার বিকল্প নেই। কলায় থাকা ন্যাচারাল অয়েল, পটাশিয়াম, ভিটামিন এবং অন্যান্য উপাদান চুলের ময়শ্চার ধরে রাখে আর ফ্রিজ় দূর করে। আর এ কাজে কলার যোগ্য দোসর দই। একটি কলার সঙ্গে দু’চামচ দই এবং এক চামচ মধু নিন। মিক্সিতে সব ক’টি উপাদান ভাল করে মিশিয়ে নিন। তার পরে চুলের গোড়া থেকে নীচ অবধি ভাল করে মিশ্রণটি লাগান। ৩০-৪০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। ব্যস, ফ্রিজ়িনেস উধাও!

চুল ভাল রাখতে তাই এ বার হেয়ার মাস্কের শরণাপন্ন হয়ে দেখুন। সমস্যা তো মিটবেই, চুলও থাকবে উজ্জ্বল। শুধু দরকার একটু ধৈর্য আর সময়।

মডেল: হিয়া মুখোপাধ্যায়

ছবি: দেবর্ষি সরকার

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement