মা হওয়া যতটা আনন্দের, ততটাই ধকলের। মা হওয়ার আগে ও পরে শারীরিক এবং মানসিক নানা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় মেয়েদের। সেই সময়ে ওজন বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু প্রসবের পরেও যদি মায়ের ওজনে লাগাম না থাকে, তখন তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
প্রসবের পর মায়েদের শরীর দুর্বল থাকে, তাই খুব বেশি কসরত করা সম্ভব হয় না। আবার, সন্তানকে স্তন্যপান করাতে হয় বলে ডায়েট থেকে সব ধরনের খাবার বাদও দেওয়া যায় না। তাই আগের মতো ছিপছিপে চেহারায় ফিরে আসতে তাঁদের বেশ বেগ পেতে হয়। তবে, প্রশিক্ষকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত কয়েকটি আসন অভ্যাস করতে পারলে কোমর, তলপেটের গঠন আবার আগের জায়গায় ফিরে আসতে পারে।
পালকাসন: ম্যাটের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে হাত দু’টিকে সামনের দিকে ভাঁজ করে কাঁধ বরাবর রাখুন। এ বার হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে শরীরকে উপরের দিকে ঠেলে তুলুন। শরীর উপরে তোলার সময়ে পায়ের শরীরের সমস্ত ভর থাকবে হাতের তালু ও পায়ের বুড়ো আঙুলের উপর।
বাকি শরীরটা হাওয়ায় ভাসবে। কনুই যাতে ভাঁজ না হয়, সে দিকেও নজর রাখুন। পেটও টেনে রাখবেন ভিতরের দিকে। প্রথম প্রথম দশ সেকেন্ড এমন করে থাকার অভ্যাস করুন। তার পর আয়ত্তে এলে ধীরে ধীরে সময় বাড়াবেন। দু’পায়ের মাঝের ফাঁকও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমিয়ে আনবেন।
অধোমুখ শবাসন: প্রথমে মাটির দিকে মুখ করে শুয়ে পড়ুন। তার পর মাটি থেকে কোমর উঁচু করে তুলে ধরুন। পা এবং হাতের উপর ভর দিয়ে রাখুন। মাটির সঙ্গে দেহের অবস্থান এমন ভাবে থাকবে, যেন দেখতে ত্রিভুজের মতো লাগে।
সি-সেকশন হওয়ার পরে পেট, কোমর সংলগ্ন অঞ্চল খুবই স্পর্শকাতর হয়ে থাকে। তাই কোমর ভাঁজ করা বা পেট মুড়ে নিচু হওয়ার সময়ে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকতে হবে।
নৌকাসন: এই আসনটি করতে প্রথমে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। এর পর শ্বাস নিতে নিতে নিতম্ব ও কোমরে ভর দিয়ে দেহের উপরের অংশ এবং পা একসঙ্গেই উপরের দিকে তুলুন। আপনার বাহু ও পায়ের পাতা একই দিকে থাকবে। নৌকা বা ইংরেজি এল আকৃতির মতো অবস্থায় থাকুন ১০ থেকে ৩০ সেকেন্ড।
প্রথম দিকে একেবারেই ব্যালান্স রাখতে পারবেন না। তাই মাটি থেকে খুব বেশি উঁচুতে পা তোলার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন হলে হাতের দু’পাশে ফোমের ব্লক রাখতে পারেন। ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে আবার প্রথম অবস্থায় ফিরে আসুন। তিন থেকে চার বার এই আসনটি অভ্যাস করতে হবে।
ভুজঙ্গাসন: ম্যাটের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এ বার হাতের তালু্ মেঝের উপর পাঁজরের দুই পাশে রাখুন। এর পর কোমর থেকে পা পর্যন্ত মাটিতে রেখে হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে বাকি শরীরটা ধীরে ধীরে উপরের দিকে তুলুন।
এর পর মাথা বেঁকিয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে ৩০ সেকেন্ড থাকার পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে যান। প্রথম দিকে এই আসন তিন বার করুন। পরবর্তী কালে পাঁচ-ছ’বারও করতে পারেন।
সেতুবন্ধনাসন: প্রথমে মাটিতে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাঁটু ভাঁজ করে পা দুটো নিতম্বের কাছে রাখুন। এ বার ধীরে ধীরে মাটি থেকে কোমর তুলে ধরুন।
এ বার দুই হাত টান টান করে, গোড়ালি স্পর্শ করার চেষ্টা করুন। এই অবস্থানে ১০ সেকেন্ড থাকুন। চার থেকে পাঁচ বার এই ভাবে অভ্যাস করুন।