লিফ্ট ব্যবহার না করে দিনের মধ্যে বার কয়েক সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে হ্যামস্ট্রিংয়ের জোর বাড়ে। ছবি: শাটারস্টক।
শরীরের বাড়তি মেদের দিকে নজর দেওয়া মানেই ডায়েট আর শরীরচর্চার কথাই স্বাভাবিক ভাবে ভেবে বসেন সকলে। এগুলো ছাড়া মেদ কমানোর খুব শর্ট কাট রাস্তা কিছু নেইও। তবে অনেকেরই ধারণা, জিমে গিয়ে ওয়েট লিফ্টিং করা অথবা ট্রেডমিলে দৌড়ে ঘাম ঝড়ানোই আদতে শরীরচর্চা। কিন্তু শরীরের গড়ন ধরে রাখা, বাড়তি মেদ ছেঁটে ফেলার একমাত্র উপায় শুধুমাত্র জিম নয়। অন্তত ফিটনেস বিশেষজ্ঞ সুকোমল সেন তেমনটাই মনে করেন।
তাঁর মতে, ‘‘সুস্থ-সবল শরীর চাইলে নানা ধরনের শারীরিক কসরতই উপায়। হাঁটা, জগিং, সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা করা তার মধ্য অন্যতম। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা শরীরের শক্তি বৃদ্ধি , মাংশপেশীর গঠন এবং ভারসাম্য দৃঢ় করতে খুবই কার্যকর একটা কসরত। বেশি ক্যালোরি ঝরানো এবং পেশীর টোনিংয়ে সাহায্য করে এই কসরত।’’
লিফ্ট ব্যবহার না করে দিনের মধ্যে বার কয়েক খুব সাধারণ এই কসরত করলে হ্যামস্ট্রিংয়ের জোর বাড়ে। হাঁটুর মাংসপেশী মজবুত হওয়ার পাশাপাশি জোটে আরও অনেক উপকার। জানেন সে সব কী কী?
আরও পড়ুন: স্তন ক্যানসার নিয়ে জীবনের বার্তা ইডেন জুড়ে, গোলাপি রঙে মাতছে শহর
একসঙ্গে একাধিক মাংসপেশীকে প্রভাবিত করে: সমতল ভূমিতে দৌড়নো কিংবা হাঁটার চেয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সময় শরীরের মাংসপেশীগুলি বেশি সক্রিয় থাকে। সমতলে হাঁটার সময় শুধুমাত্র পায়ের পেশিই সক্রিয় থাকে। তবে সিঁড়িতে চড়ার সময় আপনার গ্লুটস, কোয়াডস এবং হ্যামস্ট্রিং একসঙ্গে কাজ করে। মেদমুক্ত পেশীর জন্য এটি খুব কার্যকর একটি কসরত।
বাড়বে শরীরের ভারসাম্য এবং শক্তি: সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সময় পায়ের স্থির পেশী, গোড়ালি এবং পেরোনাল টেনডন শরীরের ভারসাম্য রক্ষার্থে একসঙ্গে কাজ করে থাকে। এই কসরতের ফলে আপনার শরীরিক শক্তির বিকাশ ঘটে। কসরতের শুরুর দিকে পায়ে টান ধরা বা ব্যাথা অনুভূত হলেও পরে নিজেকে তরতাজা লাগবে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে: সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা হার্ট সুস্থ রাখতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনেও সাহায্য করে। এই কসরতের ফলে ধমনীতে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয় এবং হৃদস্পন্দন ঠিক থাকে।
মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল: শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঘটার ফলে হরমোন গ্রন্থি থেকে গুড হরমোনের ক্ষরণ হয়। যার ফলে মানসিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। মন ভাল থাকে।
আরও পড়ুন: প্রাতঃরাশে অবশ্যই রাখুন ডিম, কিন্তু এই পদগুলি না রাখাই ভাল
সিঁড়ি ভাঙার নিয়ম
সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামাকে দৈনিক কসরতের তালিকায় ফেলার আগে কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন।
আপনার কসরতের ভঙ্গিমা যেন ঠিক থাকে। মেরুদন্ড সোজা রাখুন, সামনের দিকে ঝুঁকে পড়বেন না। শুরুতেই তাড়াহুড়ো নয়। ধীরে ধারে শুরু করুন এবং পরে এর সময়সীমা বাড়ান। এই কসরতের জন্য সঠিক স্পোর্টস শু-এর প্রয়োজন। যে কোনও জুতো পরে এই কসরত করলে পায়ে টান ধরা বা চোট লাগার আশঙ্কা থেকে যায়।
যদি হাঁটাচলায় সমস্যা বা বাতের সমস্যা থাকে তবে এই কসরত করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ।