সমস্যার সমাধানের জন্য আস্থা রাখুন কিছু নিয়মের উপর। ছবি: শাটারস্টক।
সমস্যার শেষ নেই। রোজনামচায় কোন ফাঁকে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে রয়েছে কোন সমস্যা, তা কেউ জানে না। আবার যে সমস্যারা সামনে এসেছে তারাও যে খুব নিয়ম মেনে সমাধানের পথ বাছতে পেরেছে এমন নয়। বরং কোনটা আগে করবেন কোনটা পরে তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে তৈরি হচ্ছে নতুনতর সমস্যা৷ দিশেহারা হয়ে যাচ্ছেন।
অনেকেই সমস্যা সমাধানের পথ বাছতে গিয়ে হিমশিম খান। কী ভাবে কোন সমস্যা সমাধান করব, তা বুঝে উঠতে উঠতে আর একটা সমস্যা ঘাড়ের কাছে শ্বাস ফেলতে থাকে। কী করবেন এরকম পরিস্থিতিতে?
মনোবিদদের মতে, এই ধরনের সমস্যায় প্রথমই সমস্যাগুলোকে ভয় না পেয়ে বন্ধু ভেবেই সমাধানের পথ ভাবতে বসা উচিত। সমস্যাকে যত এড়িয়ে যেতে চাইবেন, তা সাময়িক মুক্তি দিলেও অন্য সমস্যার আকারে ফের দেখা দেবে। একসঙ্গে অনেক নয়, বরং এক এক করে করতে হবে সমাধান। এ বিষয়ে কী বলছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সুতনয়া পাল?
আরও পড়ুন: ঠান্ডা বা গরম খেলেই দাঁতে শিরশিরানি? ঘরোয়া উপায়ে সমাধান হাতের মুঠোয়
প্রথমে ভাল করে ভেবে দেখুন, সত্যিই কি কোনও সমস্যা হয়েছে, না এটা আপনার বোঝার ভুল৷ খাতা–কলম নিয়ে লিখতে বসে যান৷ যে যে কারণে মন বিক্ষিপ্ত, তা পর পর লিখুন৷ পাশাপাশি তার কারণগুলিও লিখলে সত্যি কোনও সমস্যা হয়েছে কি না তা পরিষ্কার হয়ে যাবে৷ একাধিক সমস্যা পাওয়া গেলে সেগুলিকে পর পর লিখুন৷ দেখুন এর মধ্যে কোনটা এখনই সামলাতে হবে৷ কোনটা পরে করলেও চলবে৷ আর কোনটার সমাধান হাতের বাইরে, অন্তত এই মুহূর্তে৷ হাতের বাইরের সমস্যার কথা আপাতত ভুলে যান৷ এখনই যা সামলানো দরকার, তা নিয়ে ভাবুন৷ একসঙ্গে একাধিক সমস্যার কথা ভাববেন না৷ গুরুত্বের ভিত্তিতে যে কোনও একটিকে চিহ্নিত করে নিন৷ সমস্যাটাকে ভাল করে বুঝুন৷ দরকার হলে কাগজে লিখুন বা এ ব্যাপারে দক্ষ কারও সঙ্গে আলোচনা করুন৷ কী কী সমাধান হতে পারে তা দেখুন৷ ধরুন কর্মক্ষেত্রে জটিলতা এতই বেড়েছে যে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন৷ কী করবেন? বসের দ্বারস্থ হবেন? অফিসে কোনও সংগঠন থাকলে সেখানে জানাবেন? সমঝোতা করবেন না কি নতুন চাকরি খুঁজবেন? একই ভাবে অন্য যে কোনও সমস্যায় সম্ভাব্য সমাধান কী কী হতে পারে তা পর পর লিখুন৷ প্রতিটি সমাধানের সুবিধা–অসুবিধা কী আছে তা লিখুন পাশে পাশে৷ লাভ–ক্ষতির নিরিখে বিচার করে এর মধ্যে থেকে সবচেয়ে সুষ্ঠু সমাধানটি বেছে নিন৷ এবার ডেডলাইন ঠিক করে কাজে লেগে যান৷ সে পথেও বাধা আসবে, সেগুলি কী ভাবে সামলাবেন তা আগে থেকে ছকে নেওয়ার চেষ্টা করুন৷ সবসময় পারবেন না অবশ্যই, তখন সামলাতে হবে মাথা ঠান্ডা করে বা দক্ষ কারও পরামর্শ মেনে৷
আরও পড়ুন: সঙ্গীর হাতে হাত রেখে আলতো চাপ দিলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে একাধিক অসুখ
হুড়োহুড়ি নয়, সমস্যা এলে তার সমাধানও করুন ধাপে ধাপে।
সমাধান হয়ে যাওয়ার পর আর ভাল-মন্দ বিচারে যাবেন না৷ হয়তো আরও ভাল সমাধান আসতে পারত, কিন্তু তা নিয়ে আক্ষেপ করলে কোনও লাভ তো হবেই না, বরং সময় ও ঘুম দুই-ই নষ্ট হবে৷ তার চেয়ে পরের সমস্যা নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হওয়ার মাঝের অবসরে একটু রিল্যাক্স করুন৷ এত যুক্তি, বিচার–বিবেচনার মধ্যে না গিয়ে, আবেগ ও বোধের উপর নির্ভর করেও সমাধান করা যায়৷ মন যা চাইছে কিছুটা তাই করে ফেলা৷ হঠকারিতা নয়৷ শান্ত ভাবে মনের গভীরে খুঁজে দেখা, সে কী চাইছে৷ ধরা যাক, সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছে৷ কোন রাস্তায়, কী ভাবে তাকে জুড়ে দেওয়া যায় সেই যুক্তি না সাজিয়ে যদি একটু সময় নিয়ে, খুব সততার সঙ্গে মনকে জিজ্ঞেস করা যায়, সে কী চায়— উত্তর একটা আসবেই৷ সেই উত্তর অনুযায়ী কাজ করা যেতে পারে৷ একে বলে ‘ক্রিয়েটিভ প্রবলেম সলভিং’৷ তবে বুঝতেই পারছেন, এই পদ্ধতিতে ঝুঁকি বেশি৷ কাজেই সবচেয়ে ভাল হয় দুটো পদ্ধতিকে একসঙ্গে মিশিয়ে নিলে৷ আবেগকে সঙ্গে নিয়ে একটু চোখ কান খোলা রেখে কাজ করলে৷
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।