শীতের রাতে অনেক সময়েই পায়ে টান ধরে। অনেকে যন্ত্রণায় উঠে পড়েন। অনেকক্ষণ ধরে একই ভঙ্গিতে বসে থাকলেও এ রকম টান ধরতে দেখা যায়। অনেকের আবার একটা আঙুল পাশের আঙুলের উপরেও উঠে যায়। প্রচণ্ড ব্যথায় কুঁকড়ে যাওয়ার ঘটনাও অস্বাভাবিক নয়। কেন এমন টান ধরে? উত্তর খোঁজার পালা এ বার।
পায়ে টান ধরে কেন?
জেনারেল ফিজিশিয়ান ডা. সুবীরকুমার মণ্ডলের কথায়, ‘‘এর পিছনে অনেক কারণ আছে। সাধারণত ডিহাইড্রেশন, ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালান্স (সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়ামের মাত্রার হেরফের হলে এই ধরনের ইমব্যালান্স দেখা যায়), ভিটামিন ই এবং ডি-এর অভাবে পেশিতে টান পড়ে। গর্ভাবস্থায় এই সমস্যা বেশি হতে দেখা যায়। ডায়াবিটিক রোগীদের পায়েও এই ধরনের টান বেশি হয়।’’ শীতকালে এমনিতেই জল খাওয়া কম হয়। ফলে ডিহাইড্রেশনে এই সমস্যা বাড়ে। শোয়ার সময়ে অনেকে এক পাশ ফিরে শোন। অনেকক্ষণ এক পায়ে চাপ পড়লেও পেশিতে টান লাগতে পারে। তা ছাড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে এই সমস্যাও বাড়তে পারে। বয়স্ক মানুষের শরীরের পেশি কমতে থাকে, ফলে পেশিতে চাপ পড়ে বেশি।
কী করা যেতে পারে
ভিটামিন ই এবং ডি-র অভাব দেখা দিলে, সাপ্লিমেন্ট নেওয়া দরকার। শীতকালে তাই রোদ পোহানোও জরুরি। ভিটামিন ডি-র প্রধান উৎস কিন্তু সূর্যালোক। সারা দিনে অন্তত তিন-চার লিটার জল খেতে হবে। অ্যাথলিট হলে তাঁদের জলের প্রয়োজন আর একটু বেশি। জল পেশিকেও হাইড্রেটেড রাখে। ফলে তার সংকোচন ও প্রসারণ সহজে হয়। বিশেষত, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস ঈষদুষ্ণ জল খেয়ে শুতে যান। এতে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। খেয়াল রাখবেন, পায়ের তলা যেন বেশি ঠান্ডা না হয়। কিছু বিশেষ ধরনের মোজা পাওয়া যায় রাতে পরার জন্য। তেমন মোজা পরে ঘুমোতে যেতে পারেন। যখন পায়ে টান ধরবে, উঠে আগে একটু জল খেয়ে নিন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। তার পরে পায়ের পাতা উপর-নীচ করার চেষ্টা করলেই দেখবেন, আস্তে আস্তে পেশির টান ঠিক হয়ে যাবে। এই ব্যথা বারবার ফিরে এলে, হাঁটাচলায় অসুবিধে হলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নার্ভ বা হৃদ্রোগের পূর্বাভাস হিসেবেও এই ধরনের ক্র্যাম্প হতে পারে।