হাঁটার উপকার পেতে হলে মেনে চলতে হবে হাঁটার নিয়মও। ছবি: শাটারস্টক।
আধুনিক জীবনযাত্রা, পেশাগত চাপ ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে যে সব অসুখ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে, তাদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হাঁটাকেই অন্যতম সমাধান হিসাবে বাতলান চিকিৎসকরা। ডায়াবিটিস থেকে রক্তচাপ, কোলেস্টেরল থেকে ওবেসিটি— দাওয়াই শুধু মাইলের পর মাইল হাঁটা। কাজের ফাঁকে হাঁটার সময় পাওয়া যাচ্ছে না বলে টেনশনও কম নেই।
অনেকে তো হাঁটাহাঁটির প্রভাব আরও বাড়াতে গাঁটের কড়ি খরচ করে জিমেও ভর্তি হন। কিন্তু আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই, কতটা হাঁটা আর কী ভাবে হাঁটা প্রয়োজন। আর এই অজানা কারণেই অনেক সময় নিয়ম মেনে শরীরচর্চা করলেও সহজে ঝরতে চায় না মেদ। অথবা অসুখের ভোগান্তি পিছু ছাড়ে না।
ফিটনেস এক্সপার্ট ও ডায়েট বিশেষজ্ঞ রেশমি মিত্রের মতে, ‘‘কতটা হাঁটছি তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কী ভাবে হাঁটছি। মোটামুটি ৩০ মিনিট হাঁটা খুবই জরুরি, কিন্তু এই ৩০ মিনিট মানে, তা কখনওই ভেঙে ভেঙে কয়েক ধাপে নয়। বরং একটানা হেঁটে বা দু’ধাপেই তা ৩০ মিনিট পূর্ণ করা উচিত।’’ এ ছাড়াও হাঁটার জন্য বেশ কিছু নিয়ম মানা দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। দেখে নিন সে সব।
আরও পড়ুন: গরম তেলের ছিটে লেগেছে? এ ভাবে আরাম পান
পোষ্য নিয়ে হাঁটতে বেরোন? আজই এই অভ্যাস সরান। ছবি: শাটারস্টক।
এক টানা অনেক ক্ষণ নয়। চেষ্টা করুন অন্তত ৩০ মিনিট থেকে ৪০ মিনিট হাঁটার। এতে হৃৎপিণ্ড যে গতিশীল অবস্থায়পৌঁছয় তার স্থায়ীত্ব বেশ কিছু ক্ষণ থাকে। ফলে শরীরের মেদ ঝরাতে বা অসুখ মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। ধীরে ধীরে বা খুব দ্রুত নয়, বরং ঘণ্টায় ২.৫ থেকে ৩ কিলোমিটার গতিতে হাঁটুন। অনেকই বাড়ির ছাদে বা ছোট মাঠের এ মাথা-ও মাথা হাঁটেন। এতে কিন্তু খুব একটা কাজ হয় না। বার বার বাঁক বদলে হাঁটার গতি কমে ও একটানা সোজা পথ ধরে হাঁটার যে উপকার তা মেলে না। বরং চেষ্টা করুন রাস্তা ধরে বা বড় পার্কে একটানা অনেকটা হাঁটতে। দিনের যে কোনও একটি নির্দিষ্ট সময় হাঁটার চেষ্টা করুন। খুব ঘড়ি ধরে না পারলেও অন্তত ওই সময়টা মেনে চলুন। এতে শরীরের বায়োলজিক্যাল ক্লক খুব বেশি হেরফের হবে না। যে কোনও রুটিনেই এটা বজায় রাখা জরুরি। সকালে হেঁটে এসেই অনেকে চা-কফি খেয়ে ফেলেন, কেউ বা ঘুমিয়েও নেন একটু। এ সব করবেন না। এতে যেটুকু মেদ ঝরিয়ে এলেন, তার অনেকটাই আবার শরীরকে ফেরত দেওয়া হয়।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পোষ্য নিয়ে হাঁটতে বের হন অনেকে। এতে হাঁটার গতি বাড়ে না, হাঁটায় বাধাও আসে। তাই ওই ভুল নয়। বরং পোষ্য নিয়ে পরে বেড়াতে বেরোন, হাঁটার সময় একা হাঁটুন। এই সময় মোবাইল বা বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতে করতে হাঁটবেন না। মোবাইল ঘাঁটলে বা গল্পের প্রভাবে হাঁটার গতি ও প্রকৃতি স্বাভাবিক থাকে না। হাঁটার সময় চেষ্টা করুন স্বাভাবিক পোশাক পরতে। খুব খোলামেলা বা খুব আঁটসাঁট পোশাক শরীরের রক্ত সঞ্চালনকে স্বাভাবিক রাখে না।
ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।