cervical cancer

জরায়ুমুখের ক্যানসার আটকে দিতে পারে কিছু নিয়ম, কী ভাবে সতর্ক হবেন

কিছুটা সাবধান হলে ও সতর্ক থাকলে এই অসুখ থেকে অনেকটাই দূরে থাকা যায়। কী কী নিয়মে ঠেকাবেন অসুখ? চিকিৎসকরা বাতলালেন উপায়।

Advertisement

সুজাতা মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১২:০৯
Share:

জরায়ুমুখের ক্যানসার আটকাতে চাইলে পাতে রাখুন অ্যান্টিঅক্সিড্য়ান্ট খাবার। ছবি: শাটারস্টক।

ভিলেনের নাম হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা ‘এইচপিভি’ ৷ তবে সবাই নয়৷ এর মধ্যে নির্দিষ্ট দু’টি থেকেই কেবল ক্যানসার হতে পারে৷ আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির সমীক্ষা অনুসারে, নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখেন এমন মহিলাদের শতকরা ৮০ জন ৫০ বছর বয়সের মধ্যে তাঁর সঙ্গীর যৌনাঙ্গে থাকা এই ভাইরাস দিয়ে সংক্রমিত হন৷ ৩০–৩৪ বছর বয়স থেকে সে আশঙ্কা শুরু হয়৷ ৫৫–৬৫ বছর বয়সে তা সবচেয়ে বাড়ে৷

Advertisement

শরীরে ঢোকার পর এই ভাইরাস দীর্ঘ দিন চুপ করে থাকে৷ তার পর কোনও ইন্ধন পেলে বা কখনও হঠাৎই তা ক্ষত তৈরি করে জরায়ুমুখের ক্যানসার ডেকে আনে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই৷ কারণ যত জন সংক্রমিত হন, তার মধ্যে খুব কম সংখ্যকই আক্রান্ত হন ক্যানসারে৷

ক্যানসারের ইন্ধন বলতে? বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সোমনাথ সরকারের মতে, দীর্ঘ দিন গর্ভনিরোধক পিল খাওয়া, বেশি সংখ্যক বার নরমাল ডেলিভারি বা গর্ভপাত হয়ে জরায়ু–মুখে বার বার ঘষা লাগা, ১৭ বছর বয়সের আগে থেকে সহবাসের অভ্যাস, বেশি যৌন সঙ্গী থাকা, এইচআইভি জাতীয় যৌন সংক্রমণ, কোনও কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, যৌনাঙ্গের পরিচ্ছন্নতার অভাব, অ্যান্টিক্সিড্যান্টযুক্ত খাবার ও রঙিন শাকসব্জি–ফল কম খাওয়া, ধূমপান করা ইত্যাদিই উস্কে দিতে পারে এই ক্যানসারকে৷

Advertisement

আরও পড়ুন: কথায় কথায় গ্যাস-অম্বলের ওষুধ? বিপদ ডেকে আনছেন অজান্তেই

তবে কিছুটা সাবধান হলে ও সতর্ক থাকলে এই অসুখ থেকে অনেকটাই দূরে থাকা যায়। কী কী নিয়মে ঠেকাবেন অসুখ? চিকিৎসকরা বাতলালেন উপায়।

কন্ডোম ফুলপ্রুফ নয়৷ বিপদ এড়াতে ভ্যাকসিন নেওয়া ভাল৷ তিনটি ইঞ্জেকশন নিতে হয়৷ প্রথমটি নেওয়ার এক–দু’মাসের মাথায় দ্বিতীয়টি, আর তৃতীয়টি দেওয়া হয় প্রথমটি নেওয়ার ৬ মাস পর৷ ৯–১২ বছর বয়সে ভ্যাকসিন নিলে প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে জরায়ুমুখের ক্যানসার ঠেকানো যায়৷ ঠেকানো যায় ভালভা, ভ্যাজাইনা, অ্যানাল ক্যানসারও৷ যৌন জীবন শুরু হয়ে গেলেও, যদি ওই সংক্রমণ না হয়ে থাকে, ২৬ বছর বয়সের মধ্যে ভ্যাকসিন দিলে কাজ হয়৷ ছেলেদের থেকে রোগ আসে বলে তাঁদেরও দেওয়া উচিত৷ ভ্যাকসিন নিলেও সামান্য কিছু ক্ষেত্রে রোগ হতে পারে৷ কাজেই যৌন জীবন শুরু হওয়ার পর প্রতি বছর বা এক বছর অন্তর নিয়ম করে প্যাপ স্মিয়ার টেস্ট করতে হয়৷ যে যে উপসর্গ হলে সতর্ক হতে হবে, তা হল, পিরিয়ডের সময় ও ধরনের পরিবর্তন বা পিরিয়ডের সময় ছাড়া অন্য সময় রক্তপাত, বেদনাদায়ক সহবাস বা সহবাসের পর রক্তপাত, ঋতুবন্ধের পর রক্তপাত হওয়া, সাদা স্রাবের সঙ্গে অল্প রক্তের ছিটে বা দুর্গন্ধযুক্ত সাদা স্রাব৷ রোগ বেড়ে গেলে এর পাশাপাশি তলপেট ও কোমরে খুব ব্যথা, প্রস্রাবের সময় অসুবিধা, প্রস্রাব আটকে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি হতে পারে৷

আরও পড়ুন: নিয়ম মানলেও ঝরছে না মেদ? শুধু এই খাবারে রাশ টানলেই কেল্লা ফতে!​

৯–১২ বছর বয়সে ভ্যাকসিন নিলে প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে জরায়ুমুখের ক্যানসার ঠেকানো যায়৷

চিকিৎসা ও সেরে ওঠা

কলপোস্কোপ দিয়ে জরায়ু–মুখ পরীক্ষা করে টিস্যু বায়োপসিতে পাঠানো হয়৷ রিপোর্ট পজিটিভ হলে সোনোগ্রাফি, রক্ত পরীক্ষা, বুকের এক্স রে ও স্ক্যান করতে হতে পারে৷ প্রথম পর্যায়ে অস্ত্রোপচার করে জরায়ু–মুখ বাদ দিলেই চলে৷ অনেক সময় রে দিলেও হয়৷ দ্বিতীয় পর্যায়ে জরায়ু, টিউব, ওভারি এবং কিছু গ্ল্যান্ড বাদ দিয়ে রে দেওয়া হয়৷ পরের ধাপে লাগতে পারে কেমো–রেডিয়েশন৷ অ্যাডভান্স স্টেজে কেমোথেরাপি দিতে হয়৷ টার্গেটেড কেমোথেরাপিও দেওয়া যেতে পারে৷

ক্যানসার হওয়ার আগের পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে ছোট সার্জারিতে কাজ হয়৷ স্টেজ ১ ও ২–তেও রোগ সারে৷ রোগ এগিয়ে গেলে চিকিৎসায় অনেক দিন ভালও থাকেন রোগী৷

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement