প্রেমের ফাঁদে পা দেবেন, অথচ ঝগড়াঝাঁটি হবে না, তর্কে-বিতর্কে মাঝে মধ্যেই কাক-চিল বসবে না এমনটা কি হয়? তবে ভালবাসার মাঝে ঝগড়া যতই বন্ধনকে আরও গাঢ় করুক না কেন, ঝগড়া অশান্তির রূপ নেওয়ার আগেই সতর্ক হোন। মধুরেন সমাপয়েৎ ঘটাতে এই রাশ টানাটুকু দু’জনের জন্যই জরুরি।
কিন্তু কী এমন বিষয়ে সতর্ক হলেই অধিকাংশ অশান্তি কমিয়ে ফেলা যায় জানেন? মনোবিদদের মতে, সম্পর্কে থাকতে এড়িয়ে চলুন বেশ কিছু কথা, যা সুন্দর সম্পর্কের মাঝেও আনতে পারে দোষারোপ ও বিতৃষ্ণার ছায়া। ঝগড়াঝাঁটি হলেও ভাল থাকাই যায়, যদি তা সহজেই পেরিয়ে আসা সম্ভব হয়। কিন্তু কিছু কথা আছে যা এই পথকে সমস্যাসঙ্কুল করে তোলে। জানেন সে সব কী কী?
আদৌ সত্যি বলছ তো: এ এক মারাত্মক প্রশ্ন। সম্পর্ক শুরুর দিকে তো বটেই এমনকি, মানুষটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ার পরেও এই প্রশ্ন একেবারেই নয়। সঙ্গী যদি এক বার বুঝে ফেলেন যে আপনি তাঁকে খুব একটা বিশ্বাস করেন না, তাতে সমস্যার জল অনেক দূর গড়াতে পারে।
বরং তেমন সন্দেহ হলে তাঁর গতিবিধি বুঝে দেখুন, দরকারে এই প্রশ্নই একটু নরম করে ঘুরিয়ে বলুন। আর যদি সত্যিই মিথ্যের আনাগোনা বেশি দেখেন, তা হলে খোলাখুলি কথা বলুন, দরকারে সম্পর্ক নিয়ে আবার ভাবুন।
সব দোষ তোমার: এ কথাটা খুবই সাধারণ। তর্ক-বিতর্ক বা নেহাত মাথা গরমের ফাঁদে পড়ে এ কথা অনেকেই বলে ফেলেন সঙ্গীকে। কিন্তু দিনের পর দিন সব অশান্তির উপসংহার যদি এ কথা হয়, তা হলে কিন্তু সমস্যা আছে। কাজেই দোষারোপের অভ্যাস থাকলে তাতে রাশ টানুন।
বরং সাফল্য যেমন ভাগ করে নেন, ব্যর্থতার দায়টাও একসঙ্গেই বহন করুন, তাতে আপনার হাত না থাকলেও। এতে সঙ্গী বুঝবেন, আপনি তাঁকে ভরসা করেন। পাশে আছেন সব সময়। সঙ্গীর প্রকৃতই অন্যায় থাকলে তার প্রকাশ হোক অন্য ভাবে। দরকারে কড়া হতে হলেও তার ভঙ্গিমায় সৌজন্য ও শালীনতা বজায় রাখুন।
সঙ্গীর মা-বাবা সম্বন্ধীয় কথা: সঙ্গীর মা-বাবার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক যেমনই হোক, কিছু বিষয় মাথায় রাখুন। তাঁদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক ভাল না থাকলেও কখনওই তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলবেন না। সঙ্গী দু’জনের মধ্যে আপনাকে বেছে নিলেও নয়। নিজের মা-বাবা যা-ই করুন না কেন, তাঁদের সম্পর্কে কোনও কথা শুনতে কোনও মানুষেরই ভাল লাগার কথা নয়।
কাজেই সতর্ক থাকুন এ বিষয়ে। শুধু তা-ই নয়, সঙ্গীর বাবা-মা’র প্রতি আপনার সম্মান ও নির্বিরোধ মনোভাব আপনাকেই তাঁর চোখে সম্মানীয় করে তুলবে। তাই কিছু ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে শান্ত থাকার চেষ্টা করুন। একেবারে অসহনীয় পরিস্থিতি হয়ে উঠলে অবশ্যই তার প্রতিবাদ করুন। জানান সঙ্গীকেও, তবে তা নিয়ন্ত্রণে থেকেই।
প্রাক্তনের সঙ্গে তুলনা: সঙ্গীর সঙ্গে আপনার সম্পর্ক যতই মাখোমাখো হোক, আর তাঁর অতীত সম্পর্ক যতই খারাপ হোক, কখনও তাঁর অতীত সঙ্গীর সঙ্গে নিজেকে তুলনা করবেন না। এতে আপনি তাঁর অতীত নিয়ে অতিরিক্ত সচেতন বলে ভাবতে পারেন তিনি। সেখান থেকে তৈরি হতে পারে নানা জটিলতা। তাই কথায় কথায় অতীত সঙ্গীর সঙ্গে তুলনা একেবারেই নয়।
তুমি জানো না: সঙ্গী কি একটু ইগোর সমস্যায় ভোগেন? তা হলে এই কথা ব্যবহারে সচেতন থাকুন। হতে পারে, কোনও বিষয় সত্যিই সঙ্গী জানেন না। না জেনেই ভুল মন্তব্য করেছেন। কিন্তু তা নিয়ে তর্কের সময় ‘তুমি কিছু জানো না’ এমনটা না বলাই ভাল।
আদৌ ভালবাস: সমস্যা যতই গহীন হোক, সঙ্গীর ভালবাসাকে কখনও অসম্মান নয়। তাই পান থেকে চুন খসলেই ভালবাস না-র জালে তাঁকে জড়াবেন না। ভালবাসা মানেই সারাক্ষণ সুসম্পর্ক বা হ্যাঁ-তে হ্যাঁ বলে যাওয়া নয়। কাজেই এ সব কথা খুব ব্যক্তিগত সময়ে এক আধ বার অনুযোগের স্রোত ধরেই নামুক। এর বাইরে যখন তখন এ সব কথা ব্যবহার করে সম্পর্ককে জটিল করে তুলবেন না।
ব্যস্ততায় সন্দেহ: ফোনে অনেক ক্ষণ না পেলেই বা বাড়ি ফিরতে দেরি হলেই সন্দেহের বশে যা মুখে আসে তাই? তা হলে এ বার তাতে রাশ টানুন। ফোনে অন্য কেউ ব্যস্ত থাকতেই পারেন। দরকারি কথা বা নিছক আড্ডাও হতে পারে, তার মানেই তা নিয়ে জটিল কোনও ইঙ্গিতে একা একাই পৌঁছে যাবেন না, আর তা নিয়ে কখনওই জবাবদিহি করবেন না।