শিরায় টান ধরে শরীরে জলের মাত্রা কমলে। ছবি: শাটারস্টক।
হঠাৎ হঠাৎ হাত-পায়ের পেশীতে টান ধরে? শীতে লেপ থেকে বেরনোর সময় বা অন্য ঋতুতেও সকালে প্রথম হাঁটা শুরু করলেই অনেকের পায়ের শিরার টান ধরে। কখনও বা হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎই বেঁকে যায় পায়ের আঙুল। হাতের ও কোমরের পেশীতেও টান ধরে যে কোনও সময়। আদতে এই টান ধরার নেপথ্যে রয়েছে ডিহাইড্রেশন। শরীরে জলের পরিমাণ কমে গেলে এই টান ধরার প্রবণতা বাড়ে। সঙ্গে থাকে তীব্র যন্ত্রণা।
চিকিৎসক গৌতম বরাটের মতে, ‘‘গরমে ঘাম হয়ে শরীর থেকে বেশি পরিমাণে জল বেরিয়ে যায় বলে শরীরে জলের ঘাটতি হয়। তাই ঘাটতি পড়ে পেশির স্থিতিস্থাপকতায়। শীতে আবার জল খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে ফেলেন অনেকে। এতেও শিরায় টান ধরা বা ক্রাম্পের প্রবণতা বাড়ে। পেশীর কোনও ক্রনিক অসুখ না থাকলে সাধারণত জলের ঘাটতি কমাতে পারলেই আরাম মেলে।’’
এমন টান ধরা রুখতে জলের পরিমাণ না হয় বাড়ানো গেল, কিন্তু অকস্মাৎ যেখানে সেখানে হানা দেওয়া এই সমস্যাকে মোকাবিলা করবেন কোন উপায়ে? সাধারণত ক্র্যাম্পের সমস্যা ঘরোয়া উপায়েই কমে। তবে ঘরোয়া এই সব উপায়েও সমস্যা না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
হাত-পা-আঙুল বা কোমরে ক্র্যাম্প থেকে মুক্তি পেতে আক্রান্ত স্থানে ও তার চারপাশে আঙুলের চাপে মাসাজ করুন। এমন ভাবে মাসাজ করতে হবে যাতে শক্ত হয়ে যাওয়া পেশী ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। পায়ে ক্র্যাম্পের ক্ষেত্রে মাসাজের পর জায়গাটা একটু স্বাভাবিক হলে খুব কম চাপ দিয়ে ধীরে ধীরে স্ট্রেচিং করুন। অন্য কোনও ব্যায়াম এই সময় না করাই ভাল। যে পায়ে টান, হাঁটু ভাঙুন সেই পায়ের। অন্য পা পিছনে টান টান করে ছড়িয়ে দিয়ে টান ধরা পায়ের হাঁটুর উপর শরীরের ভর ধীরে ধীরে ছাড়ুন। থাইয়ের পেশীতে টান লাগলে জায়গাটা নরম করে একটি শক্ত কিছুতে ভর দিয়ে দাঁড়ান। টান ধরা পাকে কোমর অবধি টানটান করুন ধীরে ধীরে।
জলের ঘাটতি যাতে না হয়, সে দিকে নজর রাখুন।
কোমর ও পায়ের ক্র্যাম্প হাঁটাহাঁটি করতে করতেও কমে। কোমরের টানের ক্ষেত্রে ভাল করে মাসাজ করে ভুজঙ্গাসন করলে ব্যথা কম হয়। টান ধরলে হট ব্যাগ টান ধরা জায়গায় রাখুন। দশ সেকেন্ড রাখার পর সেখানে বরফ সেঁক দিন। ফের দশ সেকেন্ড পর হট ব্যাগ। এই ভাবে ঠান্ডা ও গরম সেঁক চালিয়ে যান আরাম না মেলা অবধি। টান সরে শরীর স্বাভাবিক হলেও সঙ্গে সঙ্গে পেশীর উপর চাপ পড়ে এমন কাজ করবেন না। কয়েক মিনিট বিশ্রাম নিন।