Father's Day

Father’s Day: বাবাদের কর্তব্য বলতেই কি বাইরের কাজ বোঝায়? কী বলেন এ যুগের মায়েরা

বাবাদের কাজ আর মায়েদের কাজ যে আলাদা নয়, তা এ শহরের শিশু-কিশোরেরাও এখন দেখে শেখে। আগে হয়তো তেমনটা ছিল না। পাঠ্য বইয়ে অনেক কথা বলা হত। আর দেখা যেত হলিউডের সিনেমায়।

Advertisement

সুচন্দ্রা ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২১ ১২:২৭
Share:

সন্তান পালনের দায়িত্ব এভাবেও নেন বাবারা। ফাইল চিত্র

বাবার হাতের রান্না খেতে ভাল লাগে বললে ছোটবেলায় অনন্যার স্কুলের বন্ধুরা হাসত। বাবারা যে রান্না করেন, এমন ধারণা ছিল না বন্ধুদের। তাঁর বাবা পিকনিকে গিয়ে রান্না করতেন। মায়ের শরীর খারাপ থাকলেও করতেন।

Advertisement

পেশায় স্কুলশিক্ষিকা অনন্যা গঙ্গোপাধ্যায়ের স্বামী ঋতম কোনও গুরুতর কারণ ছাড়াও রান্না করেন। ছেলেমেয়েরা ঋতমের হাতে বানানো বিরিয়ানি আর ফিরনি খেতে ভালবাসে। শুধু রান্না নয়। সংসারের অন্য কাজও করেন ঋতম। তিনি একা নন। আরও অনেক বাবা এখন ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন। সকালে টিফিন গুছিয়ে দেন। মায়েরা তাতে অপরাধবোধে ভোগেন না। বাবারাও বাড়তি কিছু করছেন, এমনটা সবসময়ে ভাবেন না।

বাবাদের কাজ আর মায়েদের কাজ যে আলাদা নয়, তা এ শহরের শিশু-কিশোরেরাও এখন দেখে শেখে। আগে হয়তো তেমনটা ছিল না। পাঠ্য বইয়ে অনেক কথা বলা হত। আর দেখা যেত হলিউডের সিনেমায়। বাবা স্যান্ডউইচ বানাচ্ছেন। সে সময়ে মা ওয়াশিং মেশিনে কাপড় কাচার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এখন শহর কলকাতার বাস্তবও এর চেয়ে বেশি দূরের নয়। এ সময়ের মায়েরা তেমনই জানাচ্ছেন।

Advertisement

এ বিষয়ে মায়েদের কথা শোনা জরুরি। তাঁরা যে বাবাদের মতো বাইরে বেরিয়ে সব কাজ করতে পারেন, তা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে বহু বছর আগেই। ফলে মায়েদের উপরে পড়ত বাড়তি চাপ। অফিস যেতেন। সেখানে নিজের গুরুত্ব ধরের রাখার জন্য পদে পদে যোগ্যতা প্রমাণ করতেন। বাড়ি ফিরতেন। সংসারের প্রতি মনোযোগ অটুট আছে, সে কথা প্রমাণ করতে আবার খাটতেন। স্বামী-সন্তানের যত্ন হয়তো একটু বেশি করেই করতেন। অবশেষ বদল আসছে। এখনকার বাবারা সে কাজে সাহায্য করছেন।

এমন ভাবেও ঘর সামলান তাঁরা। ফাইল চিত্র

তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী অমৃতা মল্লিকের দুই সন্তান। একজন পঞ্চম শ্রেণি, অন্য জন নবম। মায়ের নিয়মিত রাতের শিফট থাকে। বাবা রাহুল ভোরবেলা উঠে ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। বাড়ির বাজার করেন। অমৃতা বলেন, ‘‘আমরা দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছি। সকালের দিকটা রাহুল সামলায়। তখন আমি ঘুমোই। আবার ও নিজের অফিসের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লে দুপুরের পর থেকে বাড়ির যাবতীয় খুঁটিনাটি আমি দেখি। তখন ওকে বিরক্ত করি না।’’ এমন ব্যবস্থায় দু’জনেই নিজেদের কাজে মন দিতে পারেন।

আরও অন্য ধরনের পরিবারও আছে। মা শুধুই বাইরের কাজ করেন। ব্যাঙ্কের কাজের জন্য দৌড়োদৌড়ি থেকে রোজের বাজার করা। এ সব কাজ সামলাতে ভাল লাগে বেসরকারি সংস্থার হিসাবরক্ষক স্নেহা রায়ের। রান্নাবান্নার শখ নেই। ইচ্ছা করে না ঘর গোছাতেও। তবে কি তাঁর বিয়ে ভেঙে গিয়েছে? মোটেও না। স্নেহার চার বছরের ছেলে ঋকের অধিকাংশ আবদার মেটায় বাবা সুপ্রতিম। শখের রান্না থেকে রোজের গল্প বলার দায়িত্ব তাঁর। স্নেহা বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে কোনও অশান্তি নেই। যাঁর যে কাজ করতে ভাল লাগে, সেটাই করি। এখন পর্যন্ত এর জেরে সংসার চালাতে কোনও সমস্যা হয়নি।’’

এ তো জনা কয়েকের কথা। তার মানেই কি বদলে গিয়েছে সমাজ? এটুকু জানানো যেতে পারে যে স্নেহা, অনন্যা আর অমৃতার বন্ধুরা এ সব শুনলে অবাক হন না। তাঁদের বহু সহকর্মী আছেন, যাঁদের স্বামীরাও সংসারের দায়িত্ব একই ভাবে সামলান। দেখভাল করেন সন্তানের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement