ডায়াবিটিসের সঙ্গে দাঁতের যোগ রয়েছে? ছবি: সংগৃহীত।
দাঁতে পোকা, মাড়ি থেকে রক্তপাত, মুখে দুর্গন্ধ!
এই সমস্ত উপসর্গের কথা শুনলে হয়তো যে কেউ জিজ্ঞেস করে বসবেন, “ভাল করে দাঁত মাজা হয় না নিশ্চয়ই?”
তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, দিনে দু’বার নিয়ম করে দাঁত মাজা, মাউথওয়াশ দিয়ে কুলকুচি করার পরেও কিন্তু মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। তার জন্য মাজন বা মাজার ধরন, কোনওটিই দায়ী নয়। বরং রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে যোগ রয়েছে পেরিয়োডন্টাইটিসের।
পেরিয়োডন্টাইটিস হলে মাড়ি বা দাঁত সংলগ্ন নরম টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ছোট ক্ষত বা ঘা বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করে। দাঁতে প্রবল যন্ত্রণা হয়। মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, মুখে দুর্গন্ধ, এমনকি খাবার চিবিয়ে খেতেও সমস্যা হয়।
ডায়াবিটিসের সঙ্গে দাঁত বা মাড়ির রোগের সম্পর্ক কী?
চিকিৎসকেরা বলছেন, রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে থাকলে লালার মধ্যেও কিছু রাসায়নিক হেরফের ঘটে। মুখগহ্বরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যায় এবং মুখের ভিতরে থাকা খারাপ ব্যাক্টেরিয়াদের জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। দাঁত ক্ষয়ে যায়, মাড়ি থেকে রক্তপাত হতেও দেখা যায়।
দাঁত এবং মাড়ির যত্ন নেবেন কী ভাবে?
১) পেরিয়োডন্টাল সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রথমেই বাড়তি শর্করা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। ওষুধের পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা, পরিমিত খাওয়াদাওয়া করলে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
২) মুখগহ্বরের যত্ন নিতে হবে। দিনে অন্তত দু’বার দাঁত মাজতে হবে। ফ্লুয়োরাইড-যুক্ত মাজন ব্যবহার করতে পারলে আরও ভাল হয়।
৩) দাঁত এবং মাড়ির ক্ষতি আটকাতে হলে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। সমস্যা বুঝে বছরে অন্ততপক্ষে বার দুয়েক পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।
৪) দাঁতের ‘গয়না’ থেকেও মাড়ি বা মুখগহ্বরে সংক্রমণ হতে পারে। তাই নির্দিষ্ট সময় অন্তর সেগুলিও পরিষ্কার করাতে হবে। কৃত্রিম দাঁত বা ব্রেস থেকেও মাড়িতে সমস্যা হতে পারে। সে সব দিকেও নজর রাখা জরুরি।
৫) দাঁতের ছোটখাটো সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে ধূমপানের অভ্যাসে। ডায়াবিটিসের পাশাপাশি ধূমপানে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলে এই ধরনের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।