Life style news

কম্পিউটার গেমে আসক্তি? এটাই হতে পারে পেশা

চেনা খেলাগুলোর বাইরেও এমন এক খেলার বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ হয়, যার খবর আমরা অনেকেই জানি না।

Advertisement

শান্তনু বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৮ ১৫:৩৫
Share:

রাশিয়ায় এখন ফুটবল বিশ্বকাপ মধ্যগগনে। তা নিয়ে আমাদের দেশে উৎসাহের শেষ নেই। পরের বছর আবার ইংল্যান্ডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। তা নিয়েও আমাদের যথেষ্ট উন্মাদনা। অন্য দিকে, হারানো বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ পুনরুদ্ধারের জন্য দাবায় তাল ঠুকছেন বিশ্বনাথন আনন্দ। এই চেনা খেলাগুলোর বাইরেও এমন এক খেলার বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ হয়, যার খবর আমরা অনেকেই জানি না।

Advertisement

কম্পিউটার গেমসের ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের কথা বলছি। তার পুরস্কারমূল্যও চমকে দেওয়ার মতো। কখনও লাখখানেক, তো কখনও কোটি টাকা। আমি নিজে সেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছি। আর পাঁচটা খেলার মতো সেটাও অবশ্য এক দিনে সম্ভব হয়নি।

হাওড়া স্টেশনে ৩০ টাকার ভিডিয়ো গেমে হাতেখড়ির পর আজ অবধি ৫০টি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় তেরঙা পতাকার মান রাখার দায়িত্ব ছিল আমার কাঁধে। সাত বছর বয়সে একটা অস্ত্রোপচারের পর আমার আউটডোর গেম খেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই অপূর্ণতা মিটিয়েছে সাইবার গেমিং।

Advertisement

আদ্যিকালের ভিডিয়ো গেম কিংবা অধুনা ভিডিয়ো গেম— এ সবের নেশা থাকা মানেই মা-বাবার বকুনি অবধারিত। আমার ক্ষেত্রেও এর অন্যথা হয়নি। ২০০৭ সালে যখন ওয়ার্ল্ড সাইবার গেমসে অংশগ্রহণ করতে মুম্বই যাই, বাড়ির সায় ছিল না। সম্বল বলতে কোনওমতে জোগাড় করা ৫০০ টাকা। বিনা টিকিটে মুম্বই গিয়ে সে বার ঘরে ফিরেছিলাম মুম্বইয়ের এক সংস্থার গেম্স প্রমোশনের চাকরি পকেটে নিয়ে। প্রতিযোগিতায় জিততে না পারলেও ফাইনালে ওঠার সুবাদেই চাকরির যোগাযোগ। তারাই কেটে দিয়েছিল কলকাতায় ফেরার টিকিট।

আরও পড়ুন: বাচ্চার হাতে মোবাইল ধরিয়ে দেন? বড় বিপদ ডেকে আনছেন কিন্তু

এর পর ২০০৯ সালে চেন্নাইয়ে ওয়ার্ল্ড সাইবার গেমসের ন্যাশনাল জয়। ২০১৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় ইন্ডোর এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণ করতে পেরেছি নিজের প্যাশন নিয়ে পড়ে থেকেছি বলে। এসেছে স্পনসরশিপও। ২০১৫ চিনে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে তৃতীয় হওয়ারও সৌভাগ্য হয়েছে।

তবে আমি যখন গেমিং শুরু করি, সে সময়ের থেকে এখনকার সুযোগ অনেকটাই বেশি। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, এ দেশে প্রতি ৩ জন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ১ জন সাইবার গেম খেলে। আগামী ২৪ জুন খাস কলকাতাতেই বসছে এশিয়ান ফুটবল গেমিং চ্যাম্পিয়নশিপের ন্যাশনাল ফাইনাল, জুলাই মাসে যে টুর্নামেন্টের গ্র্যান্ড ফিনালে হবে সিঙ্গাপুরে।

বর্তমানে আমি পেশাদার গেমার, টেম্পস্টর্ম নামে একটি গেমিং দলের সদস্য। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম তিনে থাকার সুবাদে ইউবি সফট-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার গেম টেস্টারেরও কাজ করেছি। তাই বলব, কেউ যদি এই ভার্চুয়াল খেলার জগতকেই পেশা করতে চান, সেই সুযোগ আছে এবং তা বাড়ছেও। হয়তো সেই সুযোগ একটু কঠিন, কিন্তু মনের জোর হারালে চলবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement