বিভিন্ন সময়ে নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া নানা জনের কণ্ঠস্বর এ বার নতুন করে ভাবতে শেখাচ্ছে পড়ুয়াদের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’ শিশু সাহিত্য হিসাবে এখন জনপ্রিয় বললে কম বলা হয়। কিন্তু এই বই যে এক কালে নিষিদ্ধ ছিল, তা ক’জন জানেন!
নিষিদ্ধতার মানে সময়ের সঙ্গে বদলে যায়। তা নিয়মই হোক কিংবা বই-সিনেমা। এক সময়ে যা পাপ, তা-ই আবার আর এক সময়ে হয়ে ওঠে স্বাধীন চিন্তার পাঠ। বিভিন্ন সময়ে নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া নানা জনের কণ্ঠস্বর এ বার নতুন করে ভাবতে শেখাচ্ছে পড়ুয়াদের। সংস্কৃত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের পড়ুয়ারা হাত মিলিয়ে সেখানে আয়োজন করেছেন নিষিদ্ধ বইয়ের প্রদর্শনীর।
সংস্কৃত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের পড়ুয়ারা হাত মিলিয়ে আয়োজন করেছেন নিষিদ্ধ বইয়ের প্রদর্শনীর। —নিজস্ব চিত্র।
সে বিভাগে পুজোর ছুটি পড়ার আগে দু’দিন ধরে হচ্ছে অন্য রকম পড়াশোনা। তাতে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সকলকেই। সোমবার ও মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নানা সময়ের নিষিদ্ধ বই প্রদর্শন করা হচ্ছে সেখানে। চসারের ‘ক্যান্টারবারি টেল্স’ থেকে তসলিমা নাসরিনের ‘দ্বিখণ্ডিত’— আছে নানা সময়ের নানা ভাষার বই। বিভাগের প্রধান সুবর্ণা মণ্ডল আনন্দবাজার অনলাইনকে জানান, নিষিদ্ধ মানেই যে খারাপ নয়, পড়ুয়াদের সে কথা বোঝাতেই এই প্রদর্শনীর ভাবনা। তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, নিষিদ্ধ বই খুঁজতে গিয়ে সামগ্রিক ভাবে বইয়ের প্রতিও খানিকটা আকর্ষণ বাড়বে পড়ুয়াদের। ওরাই ইন্টারনেট ঘেঁটে ঘেঁটে নানা বইয়ের কথা খুঁজে বার করেছে।’’ ইংরেজি বিভাগ, ফলে ইংরেজি সাহিত্যই বেশি স্থান পেয়েছে এই প্রদর্শনীতে। তবে আছে অন্যান্য ভাষার বইও। আর তার সঙ্গেই বানানো হয়েছে বিভিন্ন নিষিদ্ধ সিনেমার অংশ নিয়ে একটি মনতাজ।
সোমবার ও মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রদর্শনী চলবে। —নিজস্ব চিত্র।
যে সব বইয়ের উল্লেখ পেয়েছেন পড়ুয়ারা, তার সব ক’টি কিন্তু হাতে পাওয়া সহজ নয়। সে সব বইয়ের জন্য পোস্টার বানানো হয়েছে। যেমন সালমান রুশদির ‘সেটানিক ভার্সেস’ এ দেশে বিক্রিই হয় না। তাই বলে সে বইটি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। বরং বইটির উল্লেখ করতে ব্যবহার করা হয়েছে নিজেদের কল্পনাশক্তি, জানালেন সুবর্ণা। সব মিলে পড়ুয়াদের আরও খানিকটা যুক্ত হতে হয়েছে বইয়ের জগতের সঙ্গে।
সোমবার প্রদর্শনীর প্রথম দিনেই অনেকে সাড়া দিয়েছেন পড়ুয়াদের এই আয়োজনে। নানা জনে এসে জেনেছেন, বিখ্যাত সব কাজের জন্য কেমন নিষিদ্ধ হতে হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে হার্পার লি-র মতো সাহিত্যিকদের।