জলখাবারে ডিম সেদ্ধ খাওয়াই ভাল। ফাইল ছবি।
কম খরচে পুষ্টি। খেতেও ভাল। দাম খানিকটা হলেও সাধ্যের মধ্যেই। কলকাতা শহর এবং বাংলার নানা জায়গায়, এখনও সারা দিনে একটি ডিম সেদ্ধ, অল্প একটু ভাত বা রুটি খেয়ে দিন গুজরান করেন, এমন মানুষ প্রচুর। ডিমের উপর ভরসা করার মূল কারণ এটাই। স্বাদ, পুষ্টি ও সুষম আহারের খোঁজে ডিমের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো খাবার খুব কম। আগে মনে করা হত ডিম খেলেই মোটা হয়, ওজন বেড়ে যায়। ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরল বাড়ে এমন ধারণাও রয়েছে। কিন্তু আধুনিক গবেষণা প্রমাণ করেছে, এ ধারণার কোনও ভিত্তি সেইভাবে নেই। বরং ডিমের কুসুম খারাপ কোলেস্টেরলকে (এলডিএল) কমিয়ে ভাল কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়াতে সাহায্য করে।
পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তীর মত, ডিম কখন কীভাবে কে খাচ্ছে, সেটাই মূল কথা। ডিম খেলে কখনওই ওজন বাড়ে না। মোটা হয়ে যাওয়ার সঙ্গে ডিমের কোনও সম্পর্ক নেই মোটেও। প্রত্যেক সুস্থ মানুষই রোজ একটি করে ডিম খেতে পারেন। হার্টের রোগীদেরও একটি করে ডিম দেওয়া যেতেই পারে। কারও ক্ষেত্রে কিডনির সমস্যা থাকলে সে ক্ষেত্রে প্রোটিন নিয়ন্ত্রণের একটা ব্যাপার থাকে, ফলে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। তবে একসঙ্গে একাধিক ডিম খেলে ক্ষতি হতে পারে। হতে পারে বদহজমের সমস্যাও।
জলখাবারে ডিম সেদ্ধ খাওয়াই ভাল। অতিরিক্ত তেল মশলা-সহযোগে ডিম রান্না করতে বদহজম ও ওজন বাড়ার বিষয়টি আসতে পারে, এমনও উল্লেখ করেন সোমা।
আরও পড়ুন:মেদ ঝরানো, ব্যথা কমানো, কো-মর্বিডিটি ঠেকানো, এই সব ব্যায়ামেই কেল্লাফতে
স্যালাড হিসেবে: পালং, শশা, ব্রকোলি, সিদ্ধ করা গাজর, কড়াইশুটি, টোম্যাটো-পিঁয়াজের স্যালাডের সঙ্গে মিশিয়ে দিন সেদ্ধ ডিমের কুচি। উপর থেকে ছড়িয়ে দিন গোলমরিচ ও লেবুর রস। এতে গোটা ডিমের পুষ্টিগুণ যেমন মিলবে, তেমনই আবার সবুজ সব্জি, শাক ও গাজরের প্রভাবে মেদও বাড়বে না। ফলে ডিমে বাড়বে না ওজন।
ওটমিলের সঙ্গে: ডিমের সঙ্গে ওটমিল খান। ওটমিল পাচনমূলক অ্যাসিড ক্ষরণেও বাধা দেয়, তাই ওটমিল খেলে সহজে খিদে পায় না। ওটমিল শরীরে বাড়তি কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড জমার পথে বাধা দেয়। এ দিকে ডিম জোগান দেয় প্রোটিনের। ফলে ওটমিল ও ডিম একত্রে লড়াই করলে মেদ জমা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন:করোনা আবহে টিকায় গাফিলতি, মাম্পসের সংক্রমণ চিন্তা বাড়াচ্ছে
জল দিয়ে পোচ: তেল নয়। পোচ রাঁধুন জল ও ভিনিগারের সাহায্যে। একটি পাত্রে কিছুটা জল নিয়ে তাতে অল্প ভিনিগার যোগ করে জলটা নেড়ে নিন। এ বার খুব সাবধানে প্রথমে ডিমের সাদা অংশ ফেলুন জলে। তার উপর ফেলুন ডিমের কুসুম। এমন ভাবে কুসুম যোগ করতে হবে যাতে তা ভেঙে না যায়। খানিক পরেই ডিমের সাদা অংশ ফুলে উটে ঢেকে দেবে হলুদ কুসুমকে। সাদা আস্তরণের ভিতর টলটল করবে কুসুম। হাতা দিয়ে পোচটিকে আলতো করে তুলে নিন জল থেকে। তেল ছাড়া এমন পোচই গোটা বিশ্বে জনপ্রিয়। ডিমের সবটুকু পুষ্টিগুণ মেলে এই পোচ থেকে। মেদ জমার ভয় থাকে না।