অফিসের চাপ থেকে মুক্তি পাবেন কী করে? ছবি: সংগৃহীত।
সরকারি অফিসের দশটা-পাঁচটার ডিউটি হোক কিংবা কর্পোরেট সেক্টরের টানা ন’দশ ঘণ্টার শিফ্ট, দিনের বেশির ভাগ সময়টাই কাটে কর্মজগতে। এর জেরে ধকল, উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তা জীবনের সঙ্গে না চাইতেও জড়িয়ে পড়েছে। অফিসের কাজ বাড়িতেও পিছু ছাড়ছে না। কাজ শেষ না হওয়ার চিন্তায় রাতের পর রাত ঘুম আসে না। কর্মজীবনের এই প্রবল চাপ প্রভাব ফেলছে সাংসারিক ক্ষেত্রেও। সমস্যার সমাধান কোন পথে?
‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ করতে না পারা, কর্মসংস্থায় সহকর্মী ও সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সমস্যা, সাফল্য পেতে সর্বক্ষণ প্রতিযোগিতা— কর্মক্ষেত্রে উদ্বেগ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তবে কিছু সহজ উপায় মানলে এই চাপ কিন্তু অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা যায়। এমনকি, সময়ে অফিস গিয়ে বরাদ্দ সময়ের মধ্যেই সেরে ফেলা যায় সব কাজ। জেনে নিন, কর্মক্ষেত্রে চাপ কমাতে কী কী নিয়ম মানতে হবে।
১) আগে থেকে পরিকল্পনা করুন: দিনের শুরুতেই ঠিক করে নিন, কোন সময় ঠিক কোন কাজটা করবেন। তবে দিন গড়নোর সঙ্গে সঙ্গে হাতে একাধিক নতুন কাজ আসতেই থাকে। এক এক করে নোট করে রাখুন সেই সব কাজের। তাদের গুরুত্ব অনুযায়ী ঠিক করে নিন, কোনটা আগে সারবেন।
২) সময়ের গুরুত্ব বুঝতে হবে: জমে থাকা অতিরিক্ত কাজের চাপই আপনার ধকল আর দুশ্চিন্তার মূলে। চেষ্টা করুন, অফিসের কাজ অফিসেই শেষ করার। দিনের কাজ দিনেই সেরে ফেলুন। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলে কিন্তু সময় মতো কাজ শেষ করা কঠিন হবে না। বাড়িতে যেটুকু সময় পাচ্ছেন, তা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটান।
৩) সহকর্মী এবং বসের সঙ্গে সম্পর্ক: কর্মক্ষেত্রে আপনার সহকর্মী এবং বসের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক ঠিক কেমন, আপনার চারপাশে কেমন লোকজন কাজ করছেন, তার উপরেও আপনার কাজ নির্ভর করে অনেকখানি। সকলের সঙ্গেই কাজ চালিয়ে যাওয়ার মতো সুসম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। বিশেষ করে টিম ওয়ার্কের ক্ষেত্রে এই পারস্পরিক বোঝাপড়া কাজের গতিকে বেঁধে রাখে। আবার সুসম্পর্কের জন্য সহকর্মীর কাজের ভার নিজের কাঁধে তুলে নেবেন না। সাহায্য করতে পারেন, তবে এ ক্ষেত্রে সমাজসেবা না করাই ভাল।
অফিসের কাজ বাড়িতেও পিছু ছাড়ছে না? ছবি: সংগৃহীত।
৪) আলোচনা: কোনও বিষয় সম্পর্কে কোনও রকম সন্দেহ থাকলে বা বুঝতে না পারলে সঙ্গে সঙ্গে অগ্রজ সহকর্মীদের পরামর্শ নিন। কাজ না বুঝে ভুল করার চেয়ে আগে থেকে খানিকটা সময় ব্যয় করে কাজটা ঠিক ভাবে বুঝে নেওয়াই ভাল। কাজে ভুল হলে মানসিক চাপ তৈরি হয়। তা ছাড়া, ভুল ঠিক করার জন্যও অনেক বেশি সময় ব্যয় হয়ে যায়।
৫) ব্রেক নেওয়া জরুরি: অনেকেই ভাবেন, একটানা বসে কাজ করে গেলে সময়ে কাজ শেষ হয়। তাই তাঁরা জায়গা ছেড়ে খুব একটা ওঠেন না। এই ধারণায় সায় নেই মনোবিদদের। বরং তাঁদের মতে, এক-দু'ঘণ্টা অন্তর আসন ছেড়ে উঠুন। সহকর্মীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলুন, কয়েক পা হেঁটে আসুন। এতে একটানা বসে থাকার বদভ্যাস থেকেও কিছুটা ছাড় মিলবে, কাজের গতিও ফিরবে। তবে কত ক্ষণ কোন আড্ডায় যোগ দেবেন, এই হিসেবটা কাজের চাপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ঠিক করুন। অফিসে মোবাইল ব্যবহার করুন সতর্ক ভাবে। মোবাইলে রিল দেখতে গিয়েও হাতের কাজ শেষ হয় না অনেকেরই।