রান্নার গ্যাস সাশ্রয় করা জরুরি। কয়েকটি সহজ উপায়ে সেটি করতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম এ বার আকাশছোঁয়া। মঙ্গলবার মধ্যরাতে রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ল ৫০ টাকা। ফলে কলকাতায় একটি সিলিন্ডার কিনতে খরচ পড়বে ১১২৯ টাকা। এর আগে শেষ বার গ্যাসের দাম বেড়েছিল গত বছর জুলাই মাসে। মধ্যবিত্তের পকেটে টান পড়লেও গ্যাস না কিনে তো কোনও উপায় নেই। সকালের টিফিন থেকে সন্ধের জলখাবার, সবই তৈরি হচ্ছে বাড়ির হেঁশেলে। এর ফলে মাস শেষ হওয়ার আগেই ফুরিয়ে যাচ্ছে গ্যাস। যে হারে গ্যাসের দাম বাড়ছে, তাতে এক মাসে দু’বার গ্যাস কেনা সত্যিই সমস্যার। তাই রান্নার গ্যাস সাশ্রয় করা জরুরি। কয়েকটি সহজ উপায়ে সেটি করতে পারেন। রইল তার কয়েকটি টোটকা।
১) নিয়মিত নজর রাখুন পাইপ, রেগুলেটর বা বার্নারে কোনও লিক হচ্ছে কি না। ছোটখাটো লিকও যদি চোখ এড়িয়ে যায়, তা হলে কিন্তু বিপদ। গ্যাস বেরিয়ে নষ্ট হবে। সেই সঙ্গে অন্য বিপদেরও আশঙ্কা থেকে যায়। তাই রান্না করার ফাঁকে গ্যাসের গন্ধ বেরোলে তা এড়িয়ে যাবেন না। যাচাই করে দেখে নিন, গ্যাসের পাইপে কোনও ফুটো রয়েছে কি না।
২) বার্নার সাফ করুন নিয়মিত। রান্নার গ্যাসের আগুনের রং নীল হওয়াই বাঞ্ছনীয়। লাল, হলুদ কিংবা কমলা রঙের আগুন দেখলে বুঝবেন গ্যাস ঠিক করে জ্বলছে না। রান্না হতেও দীর্ঘ সময় লাগবে। তাতে নষ্ট হবে গ্যাস। বার্নার ময়লা থাকলে এমন হয়। ঈষদুষ্ণ গরম জলে ন্যাকড়া ভিজিয়ে ঘষতে পারেন বার্নার। তাতেও সমস্যা দূর না হলে ডাকতে হবে এ বিষয়ে দক্ষ নির্দিষ্ট কর্মীদের।
৩) চেষ্টা করুন পাত্র ঢাকা দিয়ে রান্না করতে। যে কোনও পাত্রের ক্ষেত্রেই ঢাকা দিয়ে রান্না করলে অনেকটা গ্যাস বাঁচে। পাশাপাশি, সাধারণ বাসনের পরিবর্তে যত বেশি সম্ভব প্রেশার কুকার ব্যবহার করুন। গ্যাসের অপচয় কম হবে। গ্যাস অপচয় কমাতে প্রেশার কুকারের থেকে ভাল আর কিছু হয় না।
৪) রান্না করার আগেই তৈরি করে নিন সব উপকরণ। মশলা তৈরি থেকে সব্জি কাটা, সবই যদি আগে থেকে করা থাকে, তবে সময় ও গ্যাস দুয়েরই সঞ্চয় হয়। পাশাপাশি, রান্নায় কতটুকু জল দেবেন, তা-ও মেপে রাখার চেষ্টা করুন আগে থেকে।
বাড়িতে মাইক্রোওয়েভ থাকলে খাবার গরম করার জন্য আর বাড়তি গ্যাস খরচ হবে না। ছবি: সংগৃহীত।
৫) রান্নার বাসনের তলা যেন পরিচ্ছন্ন হয়। হাঁড়ি এবং কড়াইয়ের তলায় কালি থাকলে তাপের অপচয় হয়, গ্যাসও বেশি খরচ হয়। পাশাপাশি, খেয়াল রাখবেন যেন গ্যাসে বসানো বাসন শুকনো হয়। বাসনে জল লেগে থাকলেও তাপের অপচয় হয়।
৬। তরকারি বা কোনও ঝোল রান্না করার সময়ে আমরা যে জল রান্নায় দিই, সেটা আলাদা করে ইলেকট্রিক কেট্ল-এ গরম করে রাখতে পারেন। রান্নায় গরম জল দিলে তাড়াতা়ড়ি রান্না হবে এবং গ্যাস বাঁচবে। তা ছা়ড়াও চায়ের জল বা গরম জল করতে পারলে ইলেকট্রিক কেট্ল ব্যবহার করুন। বিদ্যুতের খরচ গ্যাসের খরচের চেয়ে কম হবে।
৭। বাড়িতে মাইক্রোওয়েভ থাকলে খাবার গরম করার জন্য আর বাড়তি গ্যাস খরচ হবে না। তা ছাড়াও আলু সেদ্ধ করতে পারেন মাইক্রোওয়েভে। কেক তৈরি করার শখ থাকলে মাইক্রোওয়েভে করা শিখে নিন। কারণ গ্যাসে চল্লিশ মিনিট বা পঞ্চাশ মিনিট ধরে কেক তৈরি করতে অনেকটাই গ্যাসের খরচ হয়ে যাবে।