বাড়িতেই বানিয়ে নেওয়া যায় দোল উৎসবের জন্য বিশেষ পানীয়
দোলের দিন সকালে আর যা-ই খাওয়া হোক না কেন, কোনও মিষ্টি জিনিস চাই-ই। সে মালপোয়া হোক বা জিলিপি-বোঁদে, বাঙালি বাড়িতে মিষ্টিমুখ না করে রঙের উৎসব হয় না। সেই মতো নেওয়া হয় প্রস্তুতিও। এখনও বহু বাড়িতে দোল উপলক্ষে মিষ্টি খাবার বানানোর তোড়জোর চলে দিন কয়েক আগে থেকে। সেই ব্যবস্থাপনাতেই একটু ভিন্ রাজ্যের ছোঁয়া আনা যায় এ বছর।
ইতিমধ্যেই গরমটা ভাল ভাবে পড়ে গিয়েছে। বসন্তের মিঠে হাওয়া বেলা বাড়তেই বেশ তপ্ত হয়ে উঠছে। বাঙালি বাড়িতেও তৈরি করে রাখা যাক না উত্তর ভারতের ঠন্ডাই। রঙের উৎসব ‘হোলি’ উপলক্ষে দেশের বহু প্রান্তেই এই পানীয় বানানো হয়। বাংলার ঠান্ডা, হিন্দির ‘ঠন্ডা’। সেই শব্দ থেকেই নাম পেয়েছে ‘ঠন্ডাই’। গরমের মধ্যে হোলি খেলার সময়ে শরীর ঠান্ডা রাখতে এই পানীয় খাওয়ার চল। দুধ, মশলা আর বাদামের মিশেলে তৈরি ঠন্ডাই জমিয়ে তুলতে পারে বাঙালির দোলও।
কী ভাবে বানানো হবে সেই পানীয়?
বাড়িতে ঠন্ডাই বানানো কঠিন কাজ নয়। কাজু, পেস্তা, কাঠ বাদাম একসঙ্গে ভিজিয়ে রাখতে হবে। বাদাম ভাল ভাবে ভিজে গেলে তা মিক্সিতে দিয়ে বেটে নিতে হবে। আলাদা করে খানিকটা পোস্তো বাটাও দরকার। বাদাম আর পোস্তো বাটা তৈরি হয়ে গেলে মন দেওয়া যায় বাকি মশলার দিকে।
কী কী মশলা প্রয়োজন?
সাধারণত ঠন্ডাইতে পড়ে জিরে, বড় এলাচ, দাড়চিনি, গোল মরিচ আর কেশর। কেউ কেউ গোলাপ ফুলের পাঁপড়িও দেন। তবে তা বাধ্যতামূলক নয়। বাদাম আর পোস্তো বাটার সঙ্গেই মিক্সিতে দিয়ে দেওয়া যায় মাপ মতো সব গোটা মশলা। সবটা একসঙ্গে আবার বেটে নিলে একটা থকথকে বস্তু তৈরি হবে। তার মধ্যেই ঢালতে হবে দুধ। বেশি নয়। সামান্য। যাতে মশলা কিছুটা নরম হতে পারে।
এর পরে আলাদা একটি পাত্রে বাকি দুধটা ফুটিয়ে নেওয়া দরকার। ফুটন্ত দুধেই দিয়ে দিতে হবে স্বাদ মতো চিনি। যাতে চিনি ভাল ভাবে মিশে যায় দুধের সঙ্গে। ঠন্ডাই বানানোর জন্য তৈরি বাদাম আর মশলার মিশ্রণ দুধের সঙ্গে মেশাতে হবে গ্যাসটা বন্ধ করে। এর পরে ভাল ভাবে নেড়ে নিতে হবে সেই দুধ।
কিছুটা ঠান্ডা হয়ে গেলে বাদাম-মশলা দেওয়া দুধ ফ্রিজে ঢোকাতে হবে। অনন্ত ৪ ঘণ্টা লাগবে ঠান্ডা হওয়ার জন্য। একটু বেশি সময় দিলে আরও ভাল। ফ্রিজ থেকে বার করে আবারও নেড়ে নিতে হবে সবটা।
ঠন্ডাই এখনও তৈরি নয়। ছাঁকার পালা এ বার। বাদাম ও পেস্তা যদি বাটার আগে ভাল ভাবে ভেজানো হয়, তবে ছাঁকার সময়ে শুধু মশলাগুলোই বেরিয়ে আসবে। সবে মিলে খানিকটা ঘন হয় ঠন্ডাই। তাই এক বারে বেশি খাওয়া ঠিক নয়। ঠন্ডাই ঢালা ভাল মাঝারি মাপের পেয়ালায়। মাটির ভাঁড় কিনে আনলে দেখতেও সুন্দর লাগবে, আর এই পানীয়ের গন্ধটাও ভাল ভাবে বেরোবে।
ছোট ছোট পাত্রে ঢেলে নেওয়ার পরে একটু সাজিয়ে দেওয়া যায় দোল উৎসব উপলক্ষে তৈরি করা এই ঠান্ডা পানীয়। সাজানোর জন্য কেশর, পেস্তা-বাদামের কুচি যেমন ব্যবহার করা যায়, তেমন রাখা যায় গোলাপের পাঁপড়িও।
দেরি না করে এ বার দোলের আগেই বানিয়ে ফেলা যাক না ভিন্ রাজ্যের এই পানীয়!