—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাচ্চার চোখ-মুখ ফোলা দেখেও অনেক সময়েই আমল দেন না বাবা-মায়েরা। মনে করেন, বেশি ঘুমের জন্য এমনটা হয়েছে। চিকিৎসকদের সতর্কবার্তা, দীর্ঘ দিন ফোলা ভাব থাকলে তা অবহেলা করলেই বিপদ। কারণ, বৃক্কের (কিডনি) সমস্যা ‘নেফ্রোটিক সিন্ড্রোম’-এ এমন উপসর্গ দেখা যায়। তবে ওই রোগ থেকে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
‘ইন্ডিয়ান সোসাইটি অব পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি’ আয়োজিত সম্মেলনের এক কর্মশালায় উঠে এল এই প্রসঙ্গ। ওই সম্মেলনের শুক্রবারের কর্মশালায় পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজিস্টরা জানিয়েছেন, ‘নেফ্রোটিক সিন্ড্রোম’-এ আক্রান্ত হলেও ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে শিশু পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠে। ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে হয়তো রোগটি থেকে যায়। তখন তাদের অনেক দিন ধরে ডায়ালিসিস কিংবা কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়।
বাড়িতেই যাতে শিশুদের ডায়ালিসিসের ব্যবস্থা করা যায়, এ বার সে দিকে জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরও। হেমোডায়ালিসিসের বদলে বাড়িতেই পেরিটোনিয়াল ডায়ালিসিস করার জন্য মায়েদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনাও হয়েছে। এসএসকেএম, এআরএস, আর জি কর, উত্তরবঙ্গ, বর্ধমান ও বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে মূল কেন্দ্র (হাব) করে বিভিন্ন চিকিৎসকদের নিয়ে সেই রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে।
ওই চিকিৎসকদের দলে থাকা, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পেডিয়াট্রিক ডায়ালিসিসের ইনচার্জ দিব্যেন্দু রায়চৌধুরী জানাচ্ছেন, তাঁরা প্রথমে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে প্রশিক্ষণ দেবেন। সেখান থেকে শিখবেন অসুস্থ শিশুর মায়েরাও। যাতে বাড়িতেই পেরিটোনিয়াল ডায়ালিসিসের বন্দোবস্ত করা যায়।
এ দিন কলকাতায় আয়োজিত পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সংক্রান্ত জাতীয় স্তরের ওই সম্মেলনের কর্মশালায় উঠে আসে, বৃক্কের ক্রনিক অসুখে আক্রান্ত শিশুদের পুষ্টির কথাও। জিনের মাধ্যমে কী ভাবে বৃক্কের সমস্যা নির্ণয় করা যায়, সে বিষয়েও আলোচনা হয় এ দিনের কর্মশালায়। ওই সম্মেলনের কর্মশালায় বিদেশ থেকেও চিকিৎসক প্রতিনিধিরা অংশ নেন। ছিলেন সম্মেলনের আয়োজক-চেয়ারপার্সন, চিকিৎসক অমিতাভ পাহাড়ী এবং আয়োজক-সম্পাদক, চিকিৎসক রাজীব সিংহও।