—প্রতীকী চিত্র।
ঘরে ঘরে বাঙালিরা নাকি বই পড়েন। শুধু আমরাই নয়, শিক্ষিত ভারতীয় মাত্রেই এই ধারণা পোষণ করেন।
ভিন্ন মতও আছে। ইংরেজি বইয়ের প্রকাশকরা কিন্তু অন্য কথাই বলেন। কলকাতায় খুব বেশি বই বিক্রি হয় না। তাই হয়তো বেশি বইয়ের দোকানও নেই।
ছিল এক সময়ে। যেমন কলেজ স্ট্রিটের দাশগুপ্ত। সেখানে মূলত স্কুল-কলেজের লেখাপড়ার বই পাওয়া যেত। জায়গাটি গমগম করত পাঠকদের যাতায়াতে। ১৯ শতকে গিরিশচন্দ্র দাশগুপ্তের তৈরি এই দোকানে যাতায়াত ছিল কলকাতার শিক্ষিত মহলের। অমর্ত্য সেনের আত্মজীবনীতেও আলাদা করে উল্লেখ আছে দাশগুপ্তদের দোকানের। মাঝেমধ্যেই অনেকটা সময় সে দোকানে কাটাতেন তিনি। টিমটিম করে ছিল নিউ মার্কেটের মডার্ন বুক ডিপো, পানের দোকানের মতো ফরেন পাবলিশার্স, পার্ক স্ট্রিটের অক্সফোর্ড বুকস্টোর। আর মাঝেমধ্যে কিছু দিনের জন্য শ্বাস নিত এ দিক-ও দিক ছড়িয়ে থাকা কয়েকটি বাংলা বইয়ের দোকান।
সময়ের সঙ্গে দাশগুপ্তর মতো দোকানের কদর কমেছে। দপদপ করে জ্বলছে নিউ মার্কেট চত্বরের মডার্ন বুক ডিপো আর ফরেন পাবলিশার্সের বাতি। মোহনের বইয়ের দোকানে এখন শুরু হয়েছে কাপড়ের ব্যবসা। কিছু বইয়ের দোকান এখন শপিং মলের আকার নিয়েছে। বই ছাড়া প্রায় সব পাওয়া যায় সেখানে। কাঁচি, পেনসিল থেকে ফ্রিজ ম্যাগনেট, টেবিলের ঢাকা— সব!
বাঙালিরা শিক্ষিত বলে পরিচিত। কিন্তু বরাবরই শিক্ষিত বাঙালির বড় একটি অংশ হল ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল। বাড়িতে কোনও ছেলে (এখন মেয়েও) ভাল রেজাল্ট করলেই জয়েন্টে বসানোর চল। তার পর ডাক্তারি কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া। তার পর দৌড়ে অংশ নেওয়া। সেই যে বাকি লেখাপড়ার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার শুরু, অধিকাংশের ক্ষেত্রে পরবর্তী কালেও কর্মব্যস্ততার মাঝে সে ভাবে লেখাপড়ার অভ্যাস আর ফেরে না। নিয়মিত লেখাপড়ার সঙ্গে যুক্ত গোষ্ঠীটি কিন্তু বরাবর ছোটই ছিল। এখন ক্ষুদ্রতর হয়েছে। সে কালের কফি হাউসের পরিমণ্ডলও আর নেই। নিয়মিত কলেজ স্ট্রিটে যাতায়াত ছিল যাঁদের, সময়ের সঙ্গে লেখাপড়ায় উৎসাহী সেই বাঙালিদের দলও এখন প্রায় বিলুপ্ত। তাঁদের সঙ্গেই কমেছে বইয়ের প্রতি টান। বইপাড়ার বাতিও আগের মতো উজ্জ্বল নেই আর।
এ শহরে মনের আনন্দে বই দেখার চেষ্টা আর ইচ্ছাও বিশেষ দেখা যায় না। বাংলা বইয়ের প্রকাশকেরা প্রকাশ্যে এই পরিস্থিতির কথা স্বীকার করতে না চাইলেও ব্যক্তিগত স্তরে কিন্তু অন্য কথাই বলেন। সফলতম প্রকাশনা সংস্থার অন্দরের গল্পও বিশেষ আলাদা নয়। বাঙালি এখনও সেই শংকর-সুনীল-শরদিন্দু-সত্যজিতে আটকে। তা ছাড়া কোনও বই বিশেষ বিক্রি হয় না। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকাশক যেমন আবার সব দোষ দিচ্ছেন নতুন প্রজন্মের উপর। তাঁর বক্তব্য, ‘‘লেখক না থাকলে বই বিক্রি হবেই বা কোথা থেকে! আর বইয়ের চাহিদা না থাকলে দোকানই বা হবে কেন?’’ কিন্তু আর এক দল প্রকাশকের বক্তব্য, লেখকও তৈরি করা যায়। চাহিদা বুঝে বইয়ের বিষয় ঠিক করা যায়। সে সবের চেষ্টা নেই কারও মধ্যে। লেখক শংকর অবশ্য ঠিক লেখাপড়া কমে যাচ্ছে বলে মনে করেন না। এ সব বিতর্কের কথা শুনে তিনি বলেন, ‘‘বাঙালিকে তো অন্য কাজও করতে হবে। শুধু বই পড়লে চলে না। সময়ের সঙ্গে যে পরিবর্তন আসার, সে তো আসবেই।’’ পাশাপাশিই তাঁর আরও বক্তব্য, অনেকেই হয়তো না-কিনে গ্রন্থাগার থেকে বই নিয়ে পড়েন। এই অভ্যাস তো অনেকটা পাঠকের অর্থনৈতিক অবস্থার উপরেও নির্ভর করে। বিক্রি কম মানেই যে কম পড়া হচ্ছে, তেমনটা মনে করেন না শংকর।
সম্প্রতি দিল্লির ‘বাহরিসন্স বুকসেলার্স’ নতুন ঠিকানা তৈরি করেছে কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে। ছবি: সংগৃহীত।
এ সব বিতর্কের মধ্যেই সম্প্রতি দিল্লির ‘বাহরিসন্স বুকসেলার্স’ নতুন ঠিকানা তৈরি করেছে কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে। লন্ডন-প্যারিসের মতো বিদেশি শহরের পুরনো দোকানে এখনও মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে ‘লেদারবাউন্ড’ বই। এ শহরে সে সব জিনিস বিশেষ দেখা যায় না। বাহরিসন্স তেমনই নানা রকম বইয়ে তাক সাজিয়েছে। এভরিম্যান্স লাইব্রেরি থেকে পেঙ্গুইন ক্লাসিক্স— কী নেই সেখানে!
কিন্তু পাঠক আছে তো? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আন্তর্জাতিক স্তরের এক প্রকাশনা সংস্থার প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, কলকাতায় সে অর্থে তাঁদের বই বিক্রি হয় না। চাহিদা কম। নতুন বইয়ের চাহিদা সবচেয়ে কম। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সংস্থা থেকে সাধারণত কলকাতায় যায় সব পুরনো জনপ্রিয় বই। ডি এইচ লরেন্স, ভিক্টর হুগো, জেন অস্টেন, জর্জ এলিয়ট— এ ধরনের বই। নতুনদের লেখার প্রায় কোনও ক্রেতা নেই।’’ এমনই আর এক সংস্থার তরফে জানানো হয়, সারা দেশেই বইয়ের বিক্রি কমেছে। কলকাতায় আরও কম।
তবে বাহারিসন্সের মতো বিপণির কি কদর করবে কলকাতা? দিল্লির নানা প্রান্তে আছে বাহরিদের দোকান। শিক্ষক, গবেষক থেকে ছাত্রছাত্রী, নানা ধরনের মানুষের ভিড় জমে সে সব বিপণিতে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বই দেখেই কাটিয়ে দেন সেখানে। এখানে কি সে ভাবে বই পড়া, বই দেখার চলই আর নেই?
সময়ের সঙ্গে বইয়ের ধরনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিস্তারিত হচ্ছে বিষয়। চল বাড়ছে নন-ফিকশন বই লেখা ও পড়ার। বাস্তব অভিজ্ঞতা, গবেষণার উপর ভিত্তি করে বই লেখা হচ্ছে। দর্শন পড়া হচ্ছে। ইতিহাস নিয়ে বহুমুখী চর্চা হচ্ছে। সে সব কি কলকাতায় পৌঁছচ্ছে না? দেশের অন্যান্য প্রান্তের কিছু লেখা এ শহরে মাঝেমধ্যে পাওয়া গেলেও বিদেশি বই প্রায় পাওয়া যায় না বললেই চলে। এমনই মত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ঋক দাসের। তাঁর কথায়, ‘‘নতুন কিছু পড়তে ইচ্ছা হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনলাইনই ভরসা।’’ হাতে বই নিয়ে, দেখে কেনার বিশেষ উপায় নেই বলেই আক্ষেপ ঋকের।
বাহরিসন্সও এত দিন অনলাইনে কলকাতায় বই পাঠাত। এ বার সে সব পাঠকের কাছাকাছি পৌঁছনোর চেষ্টায় কলকাতায় পাড়ি দিয়েছে। দিল্লি থেকে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন বিপণির কর্তা অনুজ বাহরি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এখনও শুধুমাত্র বইয়ের দোকান। অন্য কোনও জিনিস রাখি না। কোন বই রাখব, কোনটা রাখব না, তা যত্ন করে ভেবে দেখায় বিশ্বাস করি।’’ কলকাতায় অনেকেই বই পড়েন। তাই এমন দোকানের কদর থাকবেই বলে আশা অনুজের কণ্ঠে।
পরিস্থিতি অবশ্য সে কথা বলে না। এ শহরে এমন দোকানের কদর আপাতত সে ভাবে নেই বললেই চলে। অক্সফোর্ড বুকস্টোর আর স্টারমার্কস আছে। তবে বহু পাঠকের অভিযোগ, সে সব জায়গাতেও তেমন ভিড় জমে না। তাই বুঝি এই দুই বিপণির কর্তাদেরও বই উদ্বোধন, স্টেশনারি বিক্রিতে বেশি মন দিতে হয়। বাহরিসন্স কলকাতায় এসে এমনই সঙ্কটে পড়বে না তো? পড়লে অবাক হবেন না প্রবীণ বইবিক্রেতা তরুণ সাউ। তাঁর মতে, দিন দিন কলকাতায় বই বিক্রি কমছে। তাই তো সে ভাবে নতুন দোকানও আর খোলে না। অনলাইনে বিক্রির এই যুগে প্রয়োজন মতো পেপারব্যাক বই কিনে নেন কলকাতার পাঠক। ভাল বইয়ের কদর অনেকটাই পড়ে গিয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তরুণ বলেন, ‘‘এ শহরে যাঁদের হাতে টাকা আছে, তাঁরা সে ভাবে বই কেনেন না। আর যাঁরা কিনতে চান, তাঁরা বেশি খরচ করতে চান না। তাই বই বিক্রি হয় না।’’ আর সে কারণে তেমন বই পাওয়াও যায় না এ শহরে। একের পর এক দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ার নেপথ্যেও এই কারণই রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
ইংরেজি বইয়ের বিক্রি নেই। তাই কেনার জায়গা নেই। কিন্তু কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়া? অন্দরের খবর, ইংরেজি বইয়ের থেকে বেশি বিক্রি হলেও তেমন ভাল নয় বাংলা বইয়ের বিক্রিবাটাও। এখনও সেই হাতেগোনা কয়েক জনের বই বিক্রি হয় বলেই বক্তব্য একটি প্রকাশনা সংস্থার কর্তার। তিনি জানান, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সত্যজিৎ রায়, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বই-ই এখনও বিক্রি হয়। তাতেও ব্যবসা এত বছরে অনেক বেড়েছে বলে দাবি করা যায় না। এ সময়ের লেখক-প্রকাশকেরা অবশ্য সে কথা প্রকাশ্যে বলছেন না। তাঁদের বরং দাবি, সময়ের সঙ্গে বইয়ের বিক্রি বেড়েছে! সবচেয়ে বেশি ব্যবসা বইমেলার সময় হয় ঠিকই। এ বছর তো রেকর্ড ১০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে কলকাতা বইমেলা। কিন্তু সারা বছরই নিয়মিত বিক্রি হয়। কবি শ্রীজাত যেমন বলেন, ‘‘বই পড়া কমেছে কি না, তা বোঝা কঠিন। কিন্তু বই কেনা বেড়েছে। শুধু কলকাতা বইমেলা নয়, বিভিন্ন জেলাতেও যে বইমেলা হয়, সে সব জায়গা থেকেও খবর পাই, আজকাল অনেক বই বিক্রি হয়।’’ কবির বক্তব্য, বইমেলা ছাড়াও যে সারা বছরই কেনাবেচা চলে, তিনি তা দিব্যি টের পান বিভিন্ন বইয়ের রয়্যালটি থেকে। শ্রীজাতর কথার জোর বাড়িয়ে দে’জ পাবলিশিংয়ের কর্তা শুভঙ্কর (অপু) দে জানান, বইপাড়া এখনও বাঙালির জনপ্রিয় ঠিকানা। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতায় যত পাঠক আছেন, সারা দেশে তত নেই। আমার ধারণা, জাতীয় স্তরের প্রকাশকদের অভিজ্ঞতাও এমনই হবে। সাহিত্য পড়ার চল কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাঙালিদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি। সে ইংরেজি হোক কিংবা বাংলা।’’
লন্ডন-প্যারিসের মতো বিদেশি শহরের পুরনো দোকানে এখনও মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে ‘লেদারবাউন্ড’ বই। ছবি: সংগৃহীত।
তবে একের পর এক বইয়ের দোকান কলকাতা শহর থেকে উধাও হয়ে গেল কেন, সে প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক খাবেই। প্রথমত, কখনওই সে ভাবে খুব বড় বইয়ের দোকান তৈরি হয়নি এ শহরে। দিল্লির নানা প্রান্তে বাহরিসন্স ছাড়াও জনপ্রিয় বহু পুস্তক বিপণি রয়েছে। কুনজুম থেকে জৈন বুক এজেন্সি, ওম বুক শপ থেকে ফকির চাঁদ— রয়েছে বইয়ের রকমারি ঠিকানা। কলকাতায় লেখাপড়ার চল থাকলেও সে ভাবে দেশ-বিদেশের বই হাতে নিয়ে দেখে কেনার জায়গা তৈরি হয়নি বিশেষ। বাহরিসন্সের আগমন সে কথা ভাবাচ্ছে না কি?
তরুণের কাছে এর একটি ব্যাখ্যা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতায় তেমন বই কেনার লোকের অভাব রয়েছে। ধরুন লা মিজ়ারেবলসের খুব দামি কোনও বই এল। সুন্দর প্রোডাকশন হল। তা দেখে কেনার মতো পাঠক কিন্তু এ শহরে নেই। এখানকার পাঠক আগেই ভাববেন, অনলাইনে পেপারব্যাক কিনে নিলে কতটা ছাড় পাওয়া যাবে!’’ একই সঙ্গে তরুণের বক্তব্য, এখানে বিক্রিবাটা যতটুকু হয়, তা মূলত বাংলা বইয়ের। বাংলা বই আর ইংরেজি বইয়ের বাজার কিন্তু আলাদা বলে মনে করান তরুণ। এ বিষয়ে একমত অপুও। তিনিও বলেন, ‘‘বাংলা বইয়ের ক্রেতাদের ধরন আলাদা। বাংলা বই কিনতে গেলে ক্রেতারা আগেই জানতে চান, ছাড় কতটা পাওয়া যাবে। তাঁরাই যখন ইংরেজি বই কিনতে যাচ্ছেন, তখন অন্য ভাবে চলেন।’’ তবে ছাড় না পাওয়া গেলে যে এ শহরে বেশি বই বিক্রি হয় না, সে কথাও বলছেন না প্রকাশক। তিনি মনে করাচ্ছেন, বইমেলায় ইংরেজি প্রকাশনা সংস্থাগুলি স্টলের আয়তন আরও আরও বড় চায়। অর্থাৎ, বেশি বই আনার প্রয়োজন তাদের আছে। এমনই ইঙ্গিত অপুর।
এ সবের মধ্যে আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সংস্থার রকমারি বই নিয়ে শহরে উপস্থিত হয়েছে দিল্লির সংস্থাটি। নিজের মতো করে বাজার পরীক্ষাও করেছে তারা। অনুজ বলেন, ‘‘কলকাতায় সবচেয়ে বেশি বই বিক্রি হয় বইমেলার সময়েই। সারা বছরেও ততটা হয় না। তবে অল্প অল্প করে যে হয়, সেই বাজারটাকেই ধরতে চাই আমরা।’’ তার জন্য যদি নিজেদের ‘কালেকশন’-এ কিছু পরিবর্তন আনতে হয়, তা-ও করা হবে। বাঙালিরা যে বাংলা বই দেখতে ভালবাসবেন, সে বিষয়ে ওয়াকিবহাল অনুজ। নিজেদের বাংলা বইয়ের জোগান যে বাড়াতে হবে, সে কথাও ইতিমধ্যেই ভেবেছেন।
অনুজের এই ভাবনা সেই পুরনো প্রসঙ্গেই ফিরিয়ে নিয়ে যায়। তবে কি বাঙালিরা আর বিশেষ বই পড়েন না? চিরকালের পছন্দের কিছু বইয়ের জোগান দিতে পারাই পুস্তক বিপণিগুলির একমাত্র দায়িত্ব এ শহরে?