সমীক্ষাতে দেখা গিয়েছে, ২৫ বছরের নীচে থাকা ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রায় ৮৪ শতাংশের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে। ছবি- সংগৃহীত
হালের গবেষণা বলছে, ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৬ শতাংশই ভিটামিন ডি-এর অভাবে ভোগেন। দেশের ২৭টি রাজ্যে ২ লক্ষেরও বেশি মানুষের উপর চলা সমীক্ষা থেকে এই তথ্য উঠে এসেছে। পুরুষদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ এবং মহিলাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশের শরীরে স্বাভাবিক ভাবে যে পরিমাণ ভিটামিন ডি থাকার কথা, তা একেবারেই নেই।
ব্রিটেনের ‘ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস’-এর তথ্য অনুযায়ী, শুধু হাড় মজবুত করতে নয়, হাড়ের নানা রকম রোগ, যেমন রিকেট, অস্টিওম্যালেশিয়ার মতো রোগ প্রতিরোধেও ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ। রক্তে কমতে থাকা এই ভিটামিনের মাত্রা প্রস্টেট ক্যানসার, অবসাদ, ডায়াবিটিসের মতো রোগকেও আমন্ত্রণ জানায়।
মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পর এই ভিটামিনের ঘাটতি হওয়া স্বাভাবিক। পুরুষদের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট একটা বয়সের পর রক্তে ভিটামিন ডি-এর অভাব দেখা যায়। কিন্তু চিন্তার বিষয়টি হল, শুধু বয়স্করাই নন, এই ভিটামিনের অভাবে নানা রকম শারীরিক জটিলতা বাড়ছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।
তরুণদের মধ্যে এর প্রভাব কেমন?
সমীক্ষাতে দেখা গিয়েছে, ২৫ বছরের নীচে থাকা ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রায় ৮৪ শতাংশের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে। ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এই হার প্রায় ৮১ শতাংশ।
কেন থেকে যাচ্ছে ঘাটতি?
চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদদের মতে, তরুণ প্রজন্মের সাম্প্রতিক জীবনধারাই এর জন্য দায়ী। স্বাভাবিক ভাবে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরির হওয়ার একমাত্র উপায় হল সূর্যের আলো। কিন্তু বেশির ভাগ জায়গায় নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ঘরের ভিতরে থাকার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। এর জন্য প্রযুক্তিও অনেকটাই দায়ী। যা মানুষকে অলস করে তুলেছে। এ ছাড়াও দুগ্ধজাত খাবার না খাওয়া, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনও এর জন্য দায়ী।
এর প্রতিকার করা আদৌ সম্ভব?
চিকিৎসকদের মতে, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং যে কোনও বয়স, পুরুষ এবং মহিলা নির্বিশেষে নিয়মিত রক্তে এই ভিটামিনের মাত্রা পরীক্ষা করা। আপাত ভাবে এ ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। তবে, অন্তঃসত্ত্বা বা স্তন্যপান করান এমন মহিলাদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট বা ওষুধ খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।