শাড়ির যত্ন

বর্ষার আবহে করোনা দোসর, জামাকাপড় যত্নে রাখতে এই সব মানতেই হবে

এ দিকে বর্ষার আর্দ্র আবহাওয়া, অন্যদিকে  করোনা আবহে অনেক দিন না পরে আলমারিতে পড়ে রয়েছে দামি শাড়ি, গাউন, শার্ট। এগুলির অযত্ন হচ্ছে না তো? সে ক্ষেত্রে কী করতে হবে?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২০ ১৪:৫০
Share:

করোনা আবহে জামাকাপড়ের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। ছবি: শাটারস্টক

সাজাব যতনে ভাবলেই এখন হাজারো আতঙ্ক। দামি শাড়ি, দামি জামাকাপড়? উঁহু। সে সব বাড়িতে। জাঙ্ক জুয়েলারি ! ধুর পরলেই আবার সেটাও স্যানিটাইজ করা। নিতান্ত প্রয়োজনেও যাঁরা বাইরে বেরচ্ছেন, তাঁরাও এখন সুতির জামা হালকা কাপড় পরতে পছন্দ করছেন, বাইরে বেরনো মানেই তো জামাকাপড় সঙ্গে সঙ্গে কেচে ফেলা। বার বার দামি জামাকাপড় কাচা মানেই সেটা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ও আছে।এ দিকে বর্ষার আর্দ্র আবহাওয়া, অন্যদিকে করোনা আবহে অনেক দিন না পরে আলমারিতে পড়ে রয়েছে দামি শাড়ি, গাউন, শার্ট। এগুলির অযত্ন হচ্ছে না তো? সে ক্ষেত্রে কী করতে হবে?

Advertisement

করোনা আবহে জামকাপড় কাচা মানেই পরিষ্কার রানিং ওয়াটারে সাবান জলে কাচতে হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে গরম জলও ব্যবহার করা যায়, চেষ্টা করতে হবে ঢাকা পোশাক পরতে। পোশাক হবে সুতির, এমনই জানান মেডিসিনের চিকিত্সক অরিন্দম বিশ্বাস।

প্রায় সব ধরনের ডিটারজেন্ট বা লিকুইডে কম-বেশি একই রাসায়নিক থাকে। মূলত ফসফেট, কার্বনেট ও সোডিয়াম স্যালিকেট। এ সব রাসায়নিকের অণুগুলোর একাংশ ‘ওয়াটার লাভার’। যা সহজেই জলে মেশে। অপর অংশ কিন্তু ‘ওয়াটার হেটার’। যা মেশে তেলের সঙ্গে। বিভিন্ন রকমের ডিটারজেন্টে এর হিসেব আলাদা-আলাদা হয়। কাজেই কোন ধরনের পোশাকের জন্য কী সাবান বাছবেন, সেটাও সাবানের কম্পোজিশন দেখে ঠিক করুন।

Advertisement

আরও পড়ুন: আক্রান্তের বীর্যেও এ বার মিলল করোনাভাইরাসের আরএনএ!​

সিএমসি-র মাপ দেখে নিন
এক কথায় কার্বোক্সিমিথাইলসেলুলোজ। এই সিএমসি-র উপরই নির্ভর করে একটি ডিটারজেন্টের নোংরা পরিষ্কারের ক্ষমতা। সাবান যত মৃদু তার সিএমসি-ও তত কম। ফলে খুব ন‌োংরা হয়েছে এমন পোশাক কাচতে সিএমসি কম এমন মানের সাবান বাছলে ঠকবেন।

রোজের পোশাকও আলনায় নয়

আলনা নয়, চেষ্টা করুন আলমারি ব্যবহার করতে। আলনায় ঝুলিয়ে রাখলে পোশাকের বিশেষ অংশের উপর চাপ পড়ে। ফলে আলনার রডের সঙ্গে লেগে থাকা অংশে হ্যাঙ্গিং লাইন তৈরি হতে পারে। ক্ষতি হয় ওই জায়গার সুতোর অংশে। তার চেয়ে ন্যাপথলিন বা কালো জিরে বা শুকনো লঙ্কা বা নিম পাতা ছড়িয়ে আলমারিতে রাখুন। কফি বিনস কাপড়ে মুড়ে, বেকিং পাউডার বা এসেনশিয়াল ওয়েলের প্যাকেটও ড্রয়ার কিংবা তাকে রাখা যায়, এতে স্যাঁতস্যাঁতে ভাব দূর হবে, ভ্যাপসা গন্ধও হবে না, এমনই জানান অন্দরসজ্জা বিশেষজ্ঞ উর্বশী বসু। তাঁর কথায়, আলমারিতে হাওয়া-বাতাস চলাচল করা অত্যন্ত জরুরি। সে দিকটি খেয়াল রাখতে হবে।

আরও পড়ুন: প্রতিবেশী বা আবাসনে কেউ করোনা আক্রান্ত? যা যা খেয়াল রাখতেই হবে​

কী করতে হবে

• দামি পোশাক মাঝেমধ্যে ঘরে পরুন, ছবি তুলুন এতে মনও ভাল থাকবে। বেশি দিন শাড়ি বা সিল্কের শার্ট এগুলি না পরলে, সেটি বিবর্ণ হয়ে যায়।

• হালকা রোদে রাখুন জামাকাপড়।

• শিফন ও জর্জেটের পোশাকে সেফটিপিন আটকাবেন না। তাই মুড়েই রাখতে হবে। নরম ডিটারজেন্টে শ্যাম্পু মিশিয়ে হাতে কাচতে হবে।

• অন্য কোনও কাপড়ের সঙ্গে নয়, সিল্কের পোশাক আলাদা রাখতে হয়। জরি অংশ মলমল দিয়ে ঢেকে রাখুন।

• ছত্রাক থেকে বাঁচতে আলমারিতে সিলিকা জেল পাউচ রাখতে হবে।

• দামি পোশাকের উপরে সুগন্ধি ব্যবহার করবেন না। তুলোয় ভ্যানিলা এসেন্স জাতীয় পদার্থ দিয়ে আলমারির চারটি কোণে রাখতে হবে

• পরিষ্কার কাপড়ে পুঁটলি করে বা টিস্যু পেপারে মুড়ে ন্যাপথালিন রেখে দেওয়া যেতে পারে আলমারির প্রতিটি কোণে।

• সুতির কাচা কাপড় কড়া করে ইস্ত্রি করুন করোনা আবহে

আরও পড়ুন: বর্ষার মরসুমে চিন্তা বাড়াচ্ছে শিশুদের ডায়ারিয়া

শাড়ির ক্ষেত্রে

• মাসে এক বার ভাঁজ খুলে শাড়ি বা গাউনজাতীয় খোলা জায়গায়, ছায়ায় রাখতে হবে। তার পর তুলে ভাঁজ বদলে রাখতে হবে। বেশি দিন এক ভাবে ভাঁজ করে রাখলে ভাঁজে ভাঁজে সিল্কের পোশাক ফেঁসে যায়।

• পুরনো শাড়ির সঙ্গে পাকিয়ে পাকিয়ে মুড়ে কোলবালিশের মতো করে কভার পরিয়ে রাখা যেতে পারে দামি শাড়িগুলিকে

• শাড়ি ভাঁজ করে রাখলে, উপরে নীচে ও প্রতিটি ভাঁজের ভিতর ট্রেসিং পেপার রাখা যেতে পারে। তার মধ্যে শুকনো লঙ্কা, ন্যাপথালিন এগুলি ব্যবহার করা যায়।

• জরির কাজ, এমব্রয়ডারি নষ্ট হয়ে যেতে পারে বেশি দিন ভাঁজ না খুলে রাখলে প্লাস্টিকের ব্যাগে শাড়ি রাখলেও সূক্ষ্ম কাজগুলি কালচে হয়ে যাবে।

• আলমারির মধ্যে ঢাকাই বা এ জাতীয় শাড়ি বা পোশাককে নরম কাপড়ের উপর বা পারলে মসলিন দিয়ে ঢেকে রাখুন, জানান উর্বশী বসু।

• চেষ্টা করুন আলমারির অন্ধকারতম অংশে জরির শাড়িটি রাখতে। বেনারসি, তসর, ঘিচা, কাঞ্জিভরম প্রভৃতি সিল্ক এবং সব ডিজ়াইনার শাড়ি বা পোশাকের (পাঞ্জাবি, শার্ট, সালোয়ার নির্বিশেষে) ক্ষেত্রে এ ভাবেই যত্ন করতে হবে।

• শাড়ি বা শার্টের কভার পাওয়া যায়। তাতেও জামাকাপড় মুড়ে রাখা যেতে পারে।

কড়া ইস্ত্রি করতে হবে সুতির কাপড়ের ক্ষেত্রে। ফাইল ছবি

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement