মানসিক চাপ বাড়লে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে৷ সতর্ক থাকুন। ছবি: শাটারস্টক
দুশ্চিন্তার সঙ্গেই ঘর করতে হচ্ছে আপাতত। কবে সব মিটবে, জানা নেই। বন্ধ মন ভাল রাখার অনেকগুলো সব পথ। তার উপর যখন-তখন, যেখানে-সেখানে রোগের ভয়। কেউ একটা হাঁচি দিলে বা গা একটু গরম হলেই মনে হয়, করোনা নয় তো!
করোনা আবহে মানসিক চাপ ও মেজাজ খারাপের হাত ধরে অন্য রোগ যে এসে হাজির হবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কী রয়েছে তালিকায়? আসুন, দেখে নেওয়া যাক।
দুশ্চিন্তায় বাড়তে পারে যে রোগ
• উদ্বেগ বাড়লে অনেকেই যা খুশি খেতে শুরু করেন, শুয়ে-বসে থাকেন, নেশা করেন। তার হাত ধরে বাড়ে ওজন এবং ওজনের সঙ্গে সম্পর্কিত অসুখবিসুখের আশঙ্কা এবং রোগ থাকলে তার প্রকোপ। যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, হাই কোলেস্টেরল, ফ্যাটি লিভার, হৃদরোগ, গেঁটে বাত ইত্যাদি, এমনই জানান চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন:শৌচাগারে পড়ে গিয়েছিলেন প্রণববাবুও, বয়স বাড়লেই কি বাড়ে ঝুঁকি?
• মানসিক চাপের সঙ্গে সরাসরি যোগ আছে ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের। অনিদ্রা, খিটখিটে মেজাজের সম্পর্ক আছে মানসিক চাপের সঙ্গে। সবে মিলে জীবন বিপর্যস্ত হয় আর তাতে কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। বাড়ে সংক্রমণের আশঙ্কা।
• লাগাতার উদ্বেগে অম্বল, বদহজম বাড়ে। চিকিৎসা না হলে আরও বাড়ে।
• ঋতুস্রাব অনিয়মিত হওয়ার মূলেও হাত আছে উদ্বেগের।
আরও পড়ুন:বিখ্যাত মানুষের আত্মহত্যার খবরে কি মানুষ আরও বিপন্ন বোধ করেন? কী বলছেন মনোবিদরা
অতএব
দুশ্চিন্তা করে যখন করোনাকে ঠেকাতে পারবেন না, তখন দুশ্চিন্তাকেই ঠেকানোর চেষ্টা করুন। মনোচিকিৎসক শিলাদিত্য মুখোপাধ্যায়ের মত, "চাপকে চাপের মতো থাকতে দিন। নিজে সামান্য কয়েকটা নিয়ম মেনে চলুন, দেখবেন মূল সমস্যা না মিটলেও আপনার উপর তার প্রভাব কম পড়ছে।"
দুশ্চিন্তা ডেকে আনতে পারেন মারণ রোগকে ডায়াবিটিসকে। সতর্ক হোন আজই। ছবি: শাটারস্টক
জীবনযাপনের এই সব নিয়ম মেনে চলুন। যেমন-
• ‘নিউ নর্মাল জীবন’-কে মেনে নিন। যত তাড়াতাড়ি মানতে পারবেন, তত ভাল থাকবেন।
• মন হালকা করার নতুন পথ খুঁজুন। বই পড়া হোক কি গান শোনা, ঘরে বসে সিনেমা দেখা বা হালকা ব্যায়াম করা যে কোনও পথ বেছে নিন। যোগাসন ও মেডিটেশন অভ্যাসেও মন হালকা হয় ।
• টিভি-তে বা মোবাইলে হালকা অনুষ্ঠান দেখুন। হাসির অনুষ্ঠান দেখলে আরও ভাল।
আরও পড়ুন: আক্রান্তের সিংহভাগই মহিলা, মাইগ্রেনের সমস্যা সমাধানে এগুলি মাথায় রাখতেই হবে
• ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ওবেসিটি থাকলে নিয়ম করে ব্যায়াম করুন।
• খাওয়াতে রাশ টানুন। ডায়াবিটিস ও মেদ বাহুল্য থাকলে কার্বোহাইড্রেট ও মিষ্টি কম খান। রক্তচাপ বেশি হলে নোনতা খাবার ও ভাজাভুজি বাদ দিন।
• ঘন ঘন চা-কফি-সফ্ট ড্রিঙ্কস পান করে ঘুম নষ্ট করবেন না। মন ভাল রাখার অর্ধেক ওষুধ কিন্তু লুকিয়ে আছে ঘুমের মাঝেই।
• কোনও সমস্যা হচ্ছে মনে হলেই ডাক্তার দেখান। অনেকেই আজকাল অনলাইন রোগী দেখছেন। চেম্বারে যেতে সমস্যা মনে হলে ফোন করে পরামর্শ নিন। নিজে থেকে ওষুধ খেয়ে বিপদ বাড়াবেন না। সুস্থ থাকুন। ভাল থাকুন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)