এত খারাপের মধ্যেও নিজের বেঁচে থাকা অন্যের জন্য অর্থপূর্ণ করে তোলা যায়। ফাইল চিত্র
অতিমারির মাঝে রোজ আসছে খারাপ সংবাদ। ঘিরে ধরছে ভয়। আতঙ্ক। তার মধ্যেই ভাল থাকার চেষ্টা চলছে নানা ভাবে। শরীর ঠিক রাখতে যেমন চলছে নিত্য নতুন উপায়ের খোঁজ। মনের ক্ষেত্রেও তা-ই। মন সুস্থ না থাকলে শরীরের উপরেও চাপ পড়ে।
কিন্তু এমন সময়ে এত ভাল থাকা সম্ভব কী ভাবে? যখন সর্বক্ষণ মৃত্যু সংবাদ আসছে। সংক্রমিত হওয়ার ভয় ঘিরে ধরছে রাস্তায় বেরোতে হলেই। মনোরোগ চিকিৎসক রীমা মুখোপাধ্যায়ের পরামর্শ হল, ‘‘করোনা বিধি মানতে হবে। তবে সর্বক্ষণ অতিমারি নিয়ে ভাবলে চলবে না। প্রয়োজন মতো অন্য কাজেও মন দিতে হবে।’’ এ সময়ে অনেকেই একেবারে ঘৃহবন্দি। তার মধ্যে সর্বক্ষণ কানে আসছে সংক্রমণ ছড়ানোর খবর। এমন সময়ে কী ভাবে অন্য কাজে মন দেওয়া যায়? এ প্রশ্ন অনেকেরই মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে চিকিৎসকের বক্তব্য, খানিক খেয়াল রাখতে হবে সে দিকে। যেমন বাড়িতে সকলে মিলে দাবা বা লুডো খেলতে বসে আর করোনা নিয়ে আলোচনা না করা। যদি কোনও কাজ বিশেষ ভাবে করতে ভাল লাগে, তা বই পড়া হোক বা রান্নাবান্না— সে কাজ বেশি করে করা যায়। যাতে মন শুধু আটকে না থাকে খারাপ খবরে।
আমাদের অনেক সময়ে চারপাশ থেকে অনেক ধরনের তথ্য ঘুরছে। কোন খবরের সূত্র নির্ভরযোগ্য আর কোনটা নয়, তা বুঝে নিতে হবে। যেমন কোনও রকম অসুস্থতার পরিস্থিতি তৈরি হলেই এখন আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন অনেকে। মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিজে কোনও অসুখ সম্পর্কে চূড়ান্ত উপসংহার টানার আগে বা কোনও রোগ নিজে নির্ণয় করে ভয় পাওয়ার আগে আপনার পারিবারিক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। তাতে উদ্বেগকে খানিক সমাধানমূলক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সামাল দেওয়া যাবে।’’ মনোবিদের আরও পরামর্শ, জীবন বরাবরই অনিশ্চিত। এত খারাপের মধ্যেও নিজের বেঁচে থাকা অন্যের জন্য অর্থপূর্ণ করে তোলা যায়। তা দিয়ে জীবনের সংজ্ঞা নতুন করে নির্ধারণ করা যায় কি না, সে কথাও ভেবে দেখা যেতে পারে এমন কঠিন সময়ে।