কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয়ের তরফেই অবিরাম সতর্কতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে। ট্রেন-মেট্রো-সহ সব জায়গায় সব সময়ই কী করবেন, কী করবেন না— সেগুলো সম্বন্ধে অবগত করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
তা সত্ত্বেও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নানা ভুল ধারণা। এবং অনেকেই চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়া সে সব ভুল বার্তায় বিশ্বাস করে ফেলছেন। করোনাভাইরাস নিয়ে এমনই কিছু ভুল ধারণা তুলে ধরা হল।
প্রথমেই জেনে রাখা দরকার, এখনও করোনাভাইরাস প্রতিরোধের কোনও চিকিত্সা বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। তাই এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার কোনও অ্যান্টিবায়োটিক নেই। সবাইকে তাই বাড়িতে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিত্সকেরা এবং প্রচুর পরিমাণে জল খেতে বলছেন।
অনেকেরই ধারণা বাদুড় থেকেই করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। সেই আতঙ্ক থেকে মুরগির মাংস খেলেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্ক তৈরি হয়েছে মানুষের মধ্যে। মুরগির মাংসের দামও কমে গিয়েছে। বিক্রি কমে যাওয়ায় মাংস ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মুরগির মাংস থেকে এই সংক্রমণ ছড়ানোর কোনও সংযোগসূত্র খুঁজে পাননি গবেষকরা।
করোনা আক্রান্ত বাইরের দেশ থেকে আসা মালপত্রের মাধ্যমেও কি এই অসুখ ছড়াতে পারে? এমন আশঙ্কাও দেখা গিয়েছে মানুষের মধ্যে।
তবে জেনে রাখা ভাল, জড় পদার্থের উপর এই ভাইরাস খুব বেশি সময় সক্রিয় থাকে না। কয়েক ঘণ্টার জন্য সক্রিয় থাকে মাত্র। তাই অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই।
মিরাকল মিনারেল সলুউশন, গোমূত্র এগুলোর কোনওটাতেই এই ভাইরাস মোকাবিলার ক্ষমতা নেই। অথচ অনলাইনে মিরাকল মিনারেল সলুউশন বা রাস্তাঘাটে গোমূত্র কেনার হিড়িক পড়েছিল। এটা উল্টে ক্ষতিকরই।
অনলাইনে মিরাকল মিনারেল সলুউশন বলে যে তরল বিক্রি হচ্ছিল, সেটায় আসলে বিশুদ্ধ পাণীয় জলের সঙ্গে ২৮ শতাংশ সোডিয়াম ক্লোরাইড মেশানো রয়েছে।
রসুনের অনেক গুণ। রসুনের মধ্যে অর্গানোসালফার রয়েছে, যা হার্ট, মস্তিষ্ক এবং খাদ্যনালী ভাল রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু বেশি করে রসুন খেলেই করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা যাবে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রসুনের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল কিছু গুণাগুন রয়েছে ঠিকই, কিন্তু রসুনে করোনাভাইরাস মোকাবিলার কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি।
নাক-মুখ-চোখ দিয়েই এই ভাইরাস শরীরে ঢুকছে। তাই বারবারই হু-র তরফে নাক-মুখ-চোখে হাত নিয়ে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে এবং বারবার অ্যালকোহল জাতীয় স্যানিটাইজার দিয়ে বা সাবান দিয়ে হাত ঢোওয়ার কথা বলা হচ্ছে। সচেতন মানুষ এই নির্দেশিকা মেনেই চলছেন, তার বাইরেও ভুল ধারণার জেরে অতিরিক্ত কিছু সুরক্ষা নিচ্ছেন।
যেমন, নাকে নুন জল ঢুকিয়ে নাক পরিষ্কার করছেন, মাউথ ওয়াশ দিয়ে বারবার গার্গল করছেন। চিকিত্সকেরা জানিয়েছেন, এতে অনেক জীবানুই মারা যেতে পারে, কিন্তু করোনাভাইরাসের কোনও ক্ষতি হবে না।