ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসের হানাদারি রোখাটাই এখন সবচেয়ে জরুরি। -ফাইল ছবি।
লকডাউনে গৃহবন্দি হয়ে থাকার সময়েও করোনা সংক্রমণ এড়ানোর জন্য আমাদের নানা রকমের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। নিজেদের সব সময় পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখার পাশাপাশি বাড়ির অন্যদেরও সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হচ্ছে সব সময়। আবার এই লকডাউনে বাজারে, দোকানেও আমাদের যেতেই হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনার জন্য। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে আমাদের শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলাটাই সবচেয়ে জরুরি। তাতে ওষুধ লাগবে না, যে কোনও ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সংক্রমণ আমাদের শরীর আপনাআপনিই রুখতে পারবে। আর সেই প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার জন্য নিয়মিত ভাবে কয়েকটি বনৌযধি আমাদের খাওয়া প্রয়োজন। কারণ, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ওই বনৌষধিগুলিই আমাদের শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে।
তাই এখন জেনে নেওয়া প্রয়োজন, সেই বনৌষধিগুলি কী কী, যা আমাদের প্রতিরোধক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। কারণ, শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা কমে গেলেই যে কোনও ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসে আমাদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
রসুন
প্রথমেই বলতে হয় রসুনের কথা। রসুন আমাদের অনেক রকমের শারীরিক সমস্যা থেকে দূরে রাখে। গন্ধটা খুব কটূ হলেও এ উপকারিতা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের। সব বাড়িরই রান্নাঘরে রসুন থাকে। হয়তো তার উপকারিতার সব দিক জেনে বা না জেনেই।
রসুনের মতো অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যাকটেরিয়া বিনাশী এবং প্রদাহ প্রতিরোধী বনৌষধি খুব কমই আছে।
আদা
একই রকম ভাবে উপকারী আদাও। এমন কিছু যৌগ থাকে আদায়, যা আমাদের রক্তের শ্বেত কণিকার সংখ্যা বাড়ায়। আর শ্বেত কণিকাই আমাদের শরীরে ঢুকে পড়া ভাইরাস আর ব্যাকটেরিয়াদের মারে। আদা মেশানো চা খুব উপকারী। নুন দিয়ে কাঁচা আদা খাওয়াও খুব ভাল।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দেহের প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে এই সময় নিয়মিত আদা, রসুন খাওয়া উচিত।
গুলঞ্চ
খুব উপকারী গুলঞ্চও। বহু দিন ধরেই আয়ুর্বেদের বিভিন্ন ওষুধে গুলঞ্চের ব্যবহার চালু আছে। এগুলি আমাদের শরীরের বিষকে বের করে দিতে সাহায্য করে। রক্ত শোধন করে। আর শত্রু ব্যাকটেরিয়াদের বিরুদ্ধে জোর লড়াই চালাতে পারে।
গুলঞ্চ।
চিকিৎসকেরা বলছেন, গুলঞ্চ খেলে আমাদের হজম ও প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে। স্বাস্থ্য ভাল থাকে। গ্লাসে ১৫ থেকে ৩০ মিলিমিটারের মতো গুলঞ্চের রস নিয়ে রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে খাওয়া উচিত।
মেথি, কুমড়োর বীজ
মেথি, কুমড়ো বীজ খাওয়াও খুব উপকারী। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এদের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে থাকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। দু’টিই আমাদের প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। আমাদের প্রদাহ কমায়। প্রদাহ ঠেকানোর জন্য দেহে যে ব্যবস্থা রয়েছে, তাকে সক্রিয় করে তোলে।
মেথি।
কুমড়োর বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক (দস্তা), লোহা এবং ভিটামিন-ই। কুমড়োর বীজ আমাদের প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। কুমড়োর বীজ যেমন ভাইরাস বিনাশী, তেমনই তা ছত্রাকজনিত বিভিন্ন রোগও রুখতে পারে। তা কোষের বৃদ্ধিতেও সহায়ক। এমনকী, যাঁরা অনিদ্রাজনিত অসুখে ভোগেন, তাঁদের পক্ষেও খুব উপকারী কুমড়োর বীজ। স্যালাডে কুমড়োর বীজ রাখলে ভাল হয়।
সূর্যমুখী বীজ
নানা ধরনের পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ সূর্যমুখী বীজে প্রচুর পরিমাণে থাকে ভিটামিন-ই, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টও। এই বীজে থাকে সেলেনিয়াম, যা কয়েক ধরনের ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক। বাড়ায় দেহের প্রতিরোধক্ষমতাও।
সূর্যমুখী বীজ।
ত্বক ভাল রাখতেও সাহায্য করে সূর্যমুখী বীজ। প্রাতঃরাশ বা স্যালাডে সূর্যমুখী বীজ রাখা উচিত, জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
হলুদ
প্রায় সকলেরই রান্নাঘরে থাকে হলুদ। ‘কারকামিন’ই হলুদের প্রধান যৌগ। যা আমাদের দেহের প্রতিরোধক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়ে তোলে। কারকামিন রক্তের শ্বেত কণিকার সংখ্যাও বাড়ায়। যা ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস মারতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়।
দারুচিনি
খুব উপকারী দারুচিনি। বহু দিন ধরে খাবারদাবারে দারুচিনি ব্যবহারের চল রয়েছে, এর নানা ধরনের গুণের জন্য। প্রদাহ রুখতে এর বড় ভূমিকা রয়েছে। পারে নানা ধরনের সংক্রমণ রুখতে। নষ্ট কোষগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করে তুলতেও এ ভূমিকা রয়েছে। ‘‘ডায়াবিটিস ও হৃদরোগের চিকিৎসাতেও দারুচিনির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য’’, বলছেন চিকিৎসকেরা।
-ফাইল ছবি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)