সিঙ্গল লেগ স্ট্রেচ। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
বয়স বাড়লে পায়ের ব্যথায় কাতর হতে হয় কমবেশি অনেককেই। বিশেষ করে যারা অল্প বয়সে কোনও আসন বা ব্যায়াম করার কথা ভাবেননি, ওজন স্বাভাবিকের থেকে বেশি, অনিয়ন্ত্রিত দিনযাপন করেছেন, একাধিক বার চোট-আঘাত লেগেছে এবং বংশগত আর্থ্রাইটিসের প্রবণতা আছে, তাঁরা বেশি বয়সে পায়ের ব্যথায় কষ্ট পান। একই সঙ্গে পা স্টিফ হয়ে নাড়াচাড়া করতেও অসুবিধে হয়। এঁরা নিয়মিত সিঙ্গল লেগ স্ট্রেচ যোগাসনটি অভ্যাস করলে পায়ের স্টিফনেস অনেকাংশেই কমে যাবে। ব্যথার হাত থেকেও কিছুটা রেহাই মিলবে।
কী ভাবে করব
• মেরুদণ্ড টানটান করে মাটিতে দুই পা রেখে চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন। মাথা ও ঘাড় একই সরলরেখায় থাকবে। দু’হাত রাখুন ঊরুর উপর। চোখ বন্ধ করে মন শান্ত রেখে বসুন। আসন শুরুর প্রারম্ভিক অবস্থান এটি।
• এ বার চেয়ারের সামনের দিকে কিছুটা এগিয়ে আসুন। পিঠ, কোমর বা ঘাড় যেন বেঁকে না যায়। ডান পা সামনের দিকে বাড়িয়ে দিন যতটা সম্ভব।
আরও পড়ুন: ৮৪তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
• গোড়ালির উপর পায়ের ভর রেখে পায়ের আঙুল উপরের দিকে তুলুন। এই অবস্থানে দুই হাত বাম ঊরুর উপর রাখতে হবে। মেরুদণ্ড সোজা রেখে সামনের দিকে ঝুঁকতে হবে। এই অবস্থানে মনে মনে ৮-১০ পর্যন্ত গুনতে হবে। আসন করার সময় শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে।
• এ বার বাঁ পা সামনের দিকে টানটান করে ডান ঊরুর উপর দুই হাত রেখে একই পদ্ধতিতে লেগ স্ট্রেচ করতে হবে। ডান ও বাঁ মিলে এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল।
• পর্যায়ক্রমে তিন রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে। ব্যথা বেশি থাকলে প্রথমে হয়তো পা টান টান করা সমস্যা হতে পারে। বেশি জোর করবেন না। যেটুকু সম্ভব হবে ততটুকুই স্ট্রেচ করুন। ধীরে ধীরে সময় ও স্ট্রেচিং বাড়াতে হবে। কোনও অবস্থাতেই জোর করে স্ট্রেচিং করার চেষ্টা করবেন না। ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।
• আসন অভ্যাস শেষ হলে প্রারম্ভিক অবস্থানে এসে চোখ বন্ধ করে বসে বিশ্রাম নেবেন।
• আসনটি অভ্যাস করার সময় যদি সামনে ঝুঁকতে অসুবিধে হয় তবে সোজা হয়েই অভ্যাস করা উচিত। কোমরে বা পিঠে যাতে ব্যথা না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
আরও পড়ুন: ৮৩তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
কেন করব
আর্থ্রাইটিসে কারণে অনেকেরই বেশি বয়সে পা ও হাঁটু স্টিফ হয়ে গিয়ে তা নাড়াচড়া করতে ও হাঁটাচলা করতে সমস্যা হয়। এ ছাড়া নাগাড়ে চেয়ারে বসে কাজ করার পর উঠে হাঁটতে অসুবিধা হয়। নিয়ম করে এই আসনটি অভ্যাস করলে হাঁটু ও গোড়ালির অস্থিসন্ধির সায়নোভিয়াল ফ্লুইড নিঃসরণ স্বাভাবিক থাকে। ফলে অস্থিসন্ধি সচল থাকে। বাতের ব্যথা কমার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবে হাঁটাচলা করতে অসুবিধা হয় না। যাঁরা ডেস্কে বসে কাজ করেন, তাঁরা কাজের ফাঁকে আসনটি অভ্যাস করলে পায়ের স্টিফনেস ও ব্যথার ঝুঁকি কমে।