চেয়ার যোগ– শোল্ডার উইংস। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
চেয়ার যোগ– শোল্ডার উইংস
এই চেয়ার যোগাসনটিকে আসনের পরিবর্তে ফিজিওথেরাপিও বলা যেতে পারে। দুর্ঘটনায় চোট-আঘাত থেকে বা বেশি বয়সে স্ক্যাপুলা উইনিং নামে কাঁধের এক মারাত্মক ব্যথার সমস্যা হতে পারে। কাঁহাতক আর ব্যথার ওষুধ খাওয়া যায়! আসন অভ্যাস করলে ব্যথা কমানো-সহ কাঁধ ও ঘাড়ের অস্থিসন্ধিকে সচল রাখতে সাহায্য করে।
শোল্ডার উইংস অর্থাৎ কাঁধকে ডানার মতো করে ব্যায়ামটি অভ্যাস করতে হয়। নানা কাজের সময় তো বটেই, ভারী জিনিস বহন করলেও ঘাড়ে, কাঁধে ও পিঠের দিকে ব্যথার ঝুঁকি থাকে। নিয়মিত আসন অভ্যাস করলে অস্থিসন্ধি সচল থাকে বলে তুলনামূলক ভাবে ব্যথা বেদনা অনেক কম হয়।
কী ভাবে করব
• শিরদাঁড়া সোজা করে চেয়ারে বসুন, পা রাখা থাকবে মাটিতে সোজা হয়ে। মাথা ও ঘাড় যেন এক সরলরেখায় থাকে খেয়াল রাখুন। চোখ বন্ধ করে দুই হাত রাখুন কোলের উপর। এটি আসন শুরুর প্রাথমিক অবস্থান।
আরও পড়ুন: ৭২তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
• এ বার দুই হাত ধীরে ধীরে কানের পাশ দিয়ে মাথার উপরে তুলুন।
• নমস্কারের ভঙ্গিতে দুই হাত জড়ো করে আঙুল একসঙ্গে ইন্টারলক করুন।
• এই অবস্থায় দুই হাত ঘাড়ের পেছনে আনুন। মাথা সোজা থাকবে।
• শ্বাস নিতে নিতে ভাঁজ করা দুই কনুই যতটা সম্ভব প্রসারিত করতে হবে। এ বার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে দুই কনুই একসঙ্গে কাছাকাছি আনতে হবে।
• এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল। এই ভাবে ৭ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে।
• ৭ রাউন্ড অভ্যাস হয়ে গেলে শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন।
• আসন অভ্যাসের সময় শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর খেয়াল রাখতে হবে। আসন করার সময় ঘাড়, মাথা ও পিঠ সোজা রাখুন।
আরও পড়ুন: ৭১তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
সতর্কতা
ফ্রোজেন শোল্ডার কিংবা হাতের কনুই, ঘাড় ও কাঁধে ব্যথা-যন্ত্রণা থাকলে এই আসনটি করা চলবে না।
কেন করব
বয়স বাড়লে হাত ও কাঁধের অস্থিসন্ধির সচলতা কমে যায়। বিশেষ করে নাগাড়ে বসে কাজ করলে হাত, কাঁধ ও ঘাড়ে ব্যথা হয় এবং অসাড় হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ছাড়া অস্থিসন্ধি ক্ষয়ে গিয়ে এবং অন্যান্য কারণে কনুই, ঘাড় ও কাঁধে ব্যথা করে। নিয়মিত এই আসনটি অভ্যাস করতে পারলে এক দিকে গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার ফলে ফুসফুস প্রসারিত হবে এবং কাঁধ ও মেরুদণ্ডের উপরের দিকের সচলতা বাড়ার ফলে ব্যথার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। স্ট্রোক বা অন্যান্য রোগের কারণে হাত নড়াচড়ার সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।