চেয়ার যোগ— শোল্ডার শ্রাগ। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
জীবনভর নানা কাজকর্ম সামলাতে গিয়ে হাত ও কাঁধের উপর যথেষ্ট চাপ পড়ে। ইদানীং দীর্ঘ ক্ষণ কম্পিউটারে বসে কাজ করতে গিয়েও কাঁধের অস্থিসন্ধি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। বয়স বাড়লে কাঁধ ও ঘাড়ের ব্যথায় কাবু হতে হয়। নিয়ম করে কাঁধের কয়েকটি আসন অভ্যাস করলে কাঁধের অস্থিসন্ধি সচল থাকে। দাঁড়িয়ে আসন করতে সমস্যা হলে দিনের শুরুতেই চেয়ারে বসেই শোল্ডার শ্রাগ অভ্যাস করুন।
কী ভাবে করব
মাটিতে দুই পা রেখে মেরুদণ্ড আরামদায়ক ভাবে সোজা রেখে চেয়ারে বসুন। মাথা ও ঘাড় সোজা থাকবে। দু’হাত আলগা করে রাখুন কোলের উপর। চোখ বন্ধ করুন। এই হল আসন শুরুর অবস্থান।
পদ্ধতি ১: দুই হাত চেয়ারের পাশে আলতো করে ঝুলিয়ে দিন। এ বার শ্বাস নিতে নিতে দুই কাঁধ কান পর্যন্ত উঁচু করুন। শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কাঁধ নামিয়ে নিন।
• এইভাবে ৭–১০ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে। তবে জোর করে কাঁধ ওঠানোর চেষ্টা করবেন না। যেটুকু সম্ভব হবে সেটুকুই অভ্যাস করবেন।
আরও পড়ুন: ৮২তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
পদ্ধতি ২: দুই হাত চেয়ারের পাশে ঝুলিয়ে দিন। এ বার ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে নিতে বাঁ কাঁধ কানের নীচে তুলুন। শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কাঁধ নামান। একই ভাবে শ্বাস নিতে নিতে ডান দিকের কাঁধ কান পর্যন্ত তুলে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে নামিয়ে নিন।
• দুই কাঁধ তোলা ও নামানো হলে এক রাউন্ড হয়। এই ভাবে ১০-১২ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে।
• জোর করে অভ্যাস করার দরকার নেই। কষ্ট হলে অভ্যাস করা থামিয়ে দিতে হবে। শুরুতে অল্পস্বল্প অভ্যাস করতে পারেন।
• আসন অভ্যাস শেষ হলে শুরুর অবস্থানে ফিরে আরাম করে বসুন। চোখ বন্ধ করে কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিন।
• যাঁরা দীর্ঘ ক্ষণ ডেস্কে বসে কাজ করেন, তাঁরা কাজের ফাঁকে এই আসনটি অভ্যাস করলে ঘাড় ও কাঁধের স্টিফনেস চলে যাবে।
• বয়স্ক মানুষরা আসন অভ্যাসের সময় ধীরে ধীরে কাঁধ তোলার চেষ্টা করবেন। নইলে আচমকা ব্যথা লেগে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ৮১তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
কেন করব
দৈনন্দিন কাজকর্মে কাঁধের অস্থিসন্ধির উপর যথেষ্ট চাপ পড়ে। আসন না করলে অস্থিসন্ধির নমনীয়তা নষ্ট যায় ও ব্যথার কষ্টে ভুগতে হয়। নিয়ম করে এই আসনটি অভ্যাস করলে কাঁধের ও ঘাড়ের সংযোগ স্থলের ট্র্যাপিজিয়াস পেশী নমনীয় হয়। ফ্রোজেন শোল্ডারের মত ব্যথাবেদনা ও হাত নাড়াচাড়ার অসুবিধা দূর হয়। বিশেষ করে নাগাড়ে কম্পিউটারের কাজ বা ভারী ব্যাগ বহন করলে কাঁধের ব্যথায় কষ্ট পেতে হয়। শোল্ডার শ্রাগিং অভ্যাস করলে ব্যথার কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার পাশাপাশি কাজে বাড়তি এনার্জি পাওয়া যায়।