প্রারম্ভিক শলভাসন। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
প্রারম্ভিক শলভাসন
সংস্কৃত শব্দ ‘শলভ’ এর অর্থ ‘পঙ্গপাল’। এই ছোট্ট পতঙ্গটির শারীরিক গঠনের বিন্যাস আশ্চর্যজনক ভাবে শক্তিশালী। আর এই আসন করার প্রধান উদ্দেশ্য এই ছোট পতঙ্গটির মতো সুবিন্যস্ত শারীরিক গঠন আয়ত্ত করা। যাঁরা নতুন ভাবে আসন করা শুরু করেছেন, তাঁরা সহজ ভাবে আসনটি অভ্যাস করে শারীরিক গঠনকে মজবুত করতে পারবেন।
কী ভাবে করব
• উপুড় হয়ে ম্যাটের উপর শুয়ে পা দু’টি একসঙ্গে টানটান করে রাখুন। দুই হাত কানের পাশ দিয়ে মাথার উপরে সোজা করে ছড়িয়ে দিন। হাতের চেটো থাকবে মাটির উপর। চিবুক ও কপাল মাটিতে ঠেকিয়ে রাখুন। এটিই শুরুর অবস্থান।
• ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে নিতে বাঁ পা, ডান হাত ও মাথা একইসঙ্গে মাটি থেকে ওপরের দিকে তুলুন। খেয়াল রাখবেন হাত ও পা যেন সোজা থাকে , ভাঁজ হয়ে না যায়।
আরও পড়ুন: ৫০তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
• এই অবস্থানে থাকুন ১০–২০ সেকেন্ড। তবে খেয়াল রাখবেন যেন শরীরে বাড়তি চাপ না পড়ে।
• এ বার ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাত, পা ও মাথা নিচে নামিয়ে শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন।
• একই পদ্ধতিতে শ্বাস নিতে নিতে ডান পা, বাঁ হাত ও মাথা উপরের দিকে তুলুন। কিছু ক্ষণ এই অবস্থানে থেকে শুরুর ভঙ্গিতে ফিরে আসুন। এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল।
• আসনটি অভ্যাস করার সময় কোনাকুনি হাতের আঙুল ও পায়ের বুড়ো আঙুল পর্যন্ত স্ট্রেচ বা টান অনুভব করুন।
• এই ভাবে তিন রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে। প্রতিটি রাউন্ড অভ্যাসের পর ১০ -২০ সেকেন্ড বিশ্রাম নেবেন।
সতর্কতা
গুরুতর কোনও শারীরিক সমস্যা থাকলে আসন শুরু করার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নেবেন।
আরও পড়ুন: ৪৯তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
কেন করব
যাঁরা নতুন ভাবে আসন শুরু করছেন তাঁদের জন্য এই স্ট্রেচিং আসনটি অত্যন্ত উপযোগী। বিশেষ করে যাঁরা নাগাড়ে বসে কাজ করেন ও পিঠের দিকের পেশী স্টিফ হয়ে গিয়েছে, তাঁদের জন্য আসনটি অত্যন্ত উপযোগী। নিয়মিত প্রারম্ভিক শলভাসন অভ্যাস করলে মেরুদণ্ডের সংলগ্ন পেশী ও নার্ভ উজ্জীবিত হয়। বিশেষ করে কোমরের দিকের শক্ত ভাব চলে যায়। ফলে পিঠ ও কোমরের স্টিফনেস চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নমনীয়তা ফিরে আসে। আসনটির অন্তিম অবস্থানে একইসঙ্গে হাত, পা, মাথা ও শরীরের উপরিভাগ নির্দিষ্ট ভাবে ধরে রাখার সঙ্গে সঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করলে শরীরে সাযুজ্য ফিরে আসে। প্রথম দিকে কিছুটা অসুবিধা হলেও নিয়মিত অভ্যাস করলে আসনটি অভ্যাস করা কঠিন নয়। এই আসনটি শ্রোণীদেশের স্টিফনেস দূর করে ওই অঞ্চলের নমনীয়তা বাড়াতে সাহায্য করে। সুতরাং ভাল থাকতে নিয়মিত আসন অভ্যাস করুন।