ঘরোয়া উপায়েই ত্বকের যত্ন নিন। ছবি: আইস্টক।
লকডাউনের জেরে রূপচর্চা তো দূরস্থান, সাধারণ চুল কাটাটুকুও দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। হেয়ার ড্রেসারকে ঘরে ডাকা যেমন এই সময় বুদ্ধিমানের কাজ নয়, তেমনই লকডাউন উঠলেই যে পার্লারে যাওয়া ঠিক হবে, তেমন পরিস্থিতিও নেই।
কী করবেন তা হলে?
চুলের যত্ন
এ দিক-সে দিক দিয়ে বেড়ে যাওয়া চুলগুলোকে নিজেই কাটবেন নাকি চুল বড় রাখার চেষ্টাই করে দেখবেন? তা হলে হেয়ার ব্যান্ড দিয়ে অবাধ্য চুলগুলিকে পিছনে ঠেলে সময় গুনুন। সেই অবসরে স্পা ক্রিম দিয়ে ভাল করে স্পা করুন বা ডিম-দই-লেবু লাগিয়ে চুল একটু মোলায়েম ও ঝকঝকে করে তুলুন। তার পর প্রয়োজনমতো সেরাম লাগিয়ে চুল বশে রেখে মাসখানেক কাটাতে পারেন।
আরও পড়ুন: গর্ভাবস্থায় করোনা-হানা! বিপদ কতটা? কী ভাবেই বা ঠেকাবেন অসুখ?
মুখের হাল বেহাল
সে রকমই তো হওয়ার কথা। ঠোঁটের উপর গোঁফের যে হালকা রেখা সপ্তাহে সপ্তাহে উৎপাটিত হয়, সে এখন মহাসমারোহে বাড়ছে। ঘরবন্দি জীবনে এখনই এই অসুবিধা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। পরিস্থিতি যা, তাতে লকডাউন উঠলেও, মুখ তখনও ঢাকা থাকবে মাস্কে। কাপড়ে তৈরি যে মাস্ক পরার কথা বলেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক, লকডাউন উঠলেও সে পর্ব এত দ্রুত মিটবে না। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া অবধি অপেক্ষা করুন। অযথা তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে পার্লার থেকে রোগ ডেকে আনাটা বোকামি হবে।
ফেসিয়ালের দিন পেরিয়ে গেল
ফেসিয়ালের দিন পেরিয়ে গিয়েছে। ঘরে বসে রয়েছেন। ধুলো নেই। দূষণ নেই। দূষণ অবশ্য বাইরেও কম এখন। তার উপর মেক আপ করছেন না। ত্বক তো এমনিই হাঁফ ছেড়ে বাঁচছে। তার উপর যদি নিয়মিত সানস্ক্রিন মাখেন ত্বক এমনিই উজ্জ্বল হবে।বাইরে না বেরলেও মাখতে হবে। কারণ একেবারে ঘর অন্ধকার করে বসে না থাকলে সে ঘরেও ইউভি রে থাকে। এর সঙ্গে মুখ পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজ করাই যথেষ্ট। তার পর রাত্রে যদি নাইট ক্রিম লাগাতে চান, লাগাবেন। ঘরোয়া মাস্ক লাগানোর ইচ্ছে হলে, এক-আধ বার তাও লাগানো যায়। আর হ্যাঁ, লকডাউন খুললেই যেন পার্লার দৌড়বেন না। নিজের হাতই যেখানে ঘন ঘন মুখে লাগানো মানা, সেখানে অন্য কেউ হাত লাগাবে, মুখের সামনে ঝুঁকে পড়ে ম্যাসাজ করবে, এটা সেটা করবে, সেটা ঠিক হবে না। সামাজিক দূরত্বের কথাটা মাথায় রাখবেন। তা ছাড়া মুখের অর্ধেক তো ঢাকাই থাকবে মাস্কে, যত দিন না করোনা যায়। কাজেই চিন্তা কী!
আরও পড়ুন: মাস্ক পরব নাকি পরব না? কখন কেমন মাস্ক দূরে রাখবে করোনা?
পুরুষরাও যত্ন নিন চুলের।
ম্যানিকিওর, পেডিকিওর
ভাবছেন, হাত ধুতে ধুতে বরবাদ হচ্ছে চামড়া, সে হাতের নখে আবার ম্যানিকিওর!
অসুবিধে কী? গরম জল-সাবান-ব্রাশ দিয়ে হাত-নখ পরিষ্কার করে, নখের কোণার মরা চামড়া তুলে, নখ কেটে যদি একটু টিপটপ হন, বাধা নেই কোনও। হাত খসখসে হয়ে যাচ্ছে বলে চিন্তা? দিনে বার দু’য়েক ক্রিম মালিশ করুন। সব ঠিক হয়ে যাবে।
কিট থাকলে পেডিকিওর নিজেই করে নিতে পারেন। না থাকলে গরম জল-সাবান-ব্রাশ-ঝামা-ক্রিম সব দিয়ে বাড়িয়ে ফেলুন পায়ের সৌন্দর্য।
খাওয়া-ঘুম-ব্যায়াম
রসদের টানে খাওয়া সংক্ষেপে সারতে হচ্ছে, রেস্তরাঁয় খাওয়ার পর্ব নেই, এতে স্বাস্থ্য যেমন ভাল হচ্ছে, নেহাৎ ভুলভাল না খেলে ওজন কমছে, উপকার হচ্ছে ত্বকেরও। এর সঙ্গে যদি একটু ব্যায়াম করতে পারেন, লকডাউন শেষে দু’-চার কেজি ওজন নিশ্চয়ই ঝড়বে। ভাল করে গা ঘামালে ভাল থাকবে ত্বকও।
আর ঘুম? ভাল ঘুমের চেয়ে ভাল কিছু আর হয় না। সে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যা এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি দরকার, স্বাস্থ্য ভাল রাখে, বাড়ায় ত্বকের চাকচিক্য। কাজেই টেনশন না করে ভাল করে বিশ্রাম নিন। ঘুমোন। এ রকম সুযোগ কি আর বার বার পাবেন!
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)