সিটেড দ্বিকোণাসন অর্থাৎ চেয়ারে বসে দ্বিকোণাসন। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
চেয়ার যোগ– সিটেড দ্বিকোণাসন অর্থাৎ চেয়ারে বসে দ্বিকোণাসন
মূলত দাঁড়ানো অবস্থায় এই আসনটি করা হয়। কিন্তু অনেকেরই দাঁড়িয়ে আসন করতে অসুবিধে বোধ করেন। তাঁদের জন্যেই এই চেয়ার যোগার ভাবনা। হাত, কাঁধ ও পিঠের জন্য দ্বিকোণাসন অত্যন্ত উপকারী। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের হাঁটাচলা কমে গেলে এই আসন তাঁদের সচল রাখতে সাহায্য করে। দ্বিকোণের অর্থ দু’টি কোণ। দুই হাত একসঙ্গে তুলে শরীর আনত করে কোণের মতো ভঙ্গীই দ্বিকোণাসন।
কী ভাবে করব
• দুই হাত কোলের ওপর রেখে চোখ বন্ধ করে চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন। পা সোজা করে মাটিতে রাখুন। ঘাড়, পিঠ ও মাথা টানটান থাকবে।
• এই অবস্থানেই চেয়ারের সামনের দিকে কিছুটা এগিয়ে আসতে হবে। খেয়াল রাখবেন, দুই হাঁটু একসঙ্গে জড়ো করে দৃঢ় ভাবে মাটির ওপর রাখতে হবে। এটিই আসন শুরুর অবস্থান।
• দুই হাত পিছনের দিকে নিয়ে গিয়ে আঙুল ইন্টারলক করুন। দুই হাতের আঙুল যেন পরস্পর আবদ্ধ থাকে। খেয়াল রাখবেন, আঙুল খুলে না যায়।
• শ্বাস নিতে নিতে দুই হাত একসঙ্গে যতটা সম্ভব ওপরের দিকে তোলার চেষ্টা করুন। বেশি স্ট্রেন করার দরকার নেই। মাথা, ঘাড় সোজা রেখে হাত তুলতে হবে।
• এ বারে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে দুই হাত নীচে নামান। এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল। এই ভাবে পাঁচ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে।
• আসনটি করার সময় খেয়াল রাখবেন যেন দুই কাঁধে টান পড়ে। এটিই দ্বিকোণাসনের ইউএসপি। দুই হাতের সঙ্গে কাঁধের দু’টি কোণ তৈরি হবে। তাই এই নামকরণ।
• অভ্যাস শেষ হলে চোখ বন্ধ করে চেয়ারে বসে কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিন।
আরও পড়ুন: ৯৪তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
সতর্কতা
পিঠে, হাতে বা কাঁধে অল্প ব্যথা থাকলে আসনটি করতে কষ্ট হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে অভ্যাস করতে হবে। দরকার হলে হাত তোলার জন্যে কারও সাহায্য নেবেন। তবে অতিরিক্ত ব্যথায় এই আসন করা যাবে না।
আরও পড়ুন: ৯৩তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
কেন করব
দ্বিকোণাসন অভ্যাস করলে কাঁধ ও মেরুদণ্ডের বক্রতা দূর হয়। যাঁরা ভুল ভঙ্গিমায় বসে কাজ করেন, তাঁদের শরীরের উপরিভাগের ত্রুটি দূর হয় এবং কাঁধ, হাত, ঘাড়ের পেশী উজ্জীবিত হয়। মেরুদণ্ড ও শ্রোণীদেশের হাড়ের জড়তা কেটে গিয়ে শিরদাঁড়া টানটান থাকে। ঘাড়, কাঁধের অস্থিসন্ধি এবং কোমরের পেশীতে রক্ত চলাচল বাড়ে, ব্যথা বেদনার হাত থেকে রেহাই মেলে। নিয়মিত আসনটি অভ্যাস করলে সামগ্রিক ভাবে সুস্থ ও চনমনে হয়ে কাজে উৎসাহ পাওয়া যায়।