কিডনির অসুখ বাড়ে কোভিডে। ফাইল চিত্র।
ডায়ালিসিসের রোগী হলে লকডাউনের মরসুমে কিন্তু তা বন্ধ করে দেওয়া চলবে না। এতে উল্টে ক্ষতি রোগীরই।
কিডনি বিশেষজ্ঞ সুব্রত ভৌমিকের মতে, “লকডাউন বলে তো আর ডায়ালিসিস বন্ধ করা যায় না! এমনিতেই অ্যাকিউট বা ক্রনিক কিডনি ফেলিওরের রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি। তার উপর সময় মতো ডায়ালিসিস না করলে শরীরে দূষিত পদার্থ জমে যুদ্ধ করার ক্ষমতা আরও কমে যায়। শরীরে জমা জলও বেরয় না। সারা শরীরের সঙ্গে সে তখন জমতে থাকে গলার শ্লেষ্মাঝিল্লিতে ও ফুসফুসে। তাই অতিরিক্ত কিছু সাবধানতা মেনে চলার পাশাপাশি সপ্তাহে দু-দিন, তিন দিন, যাঁর যেমন দরকার ডায়ালিসিস চালিয়ে যাওয়া হয়।”
কিডনির রোগীদের বিশেষ সাবধানতা
• কিডনি পুরোপুরি অকেজো হয়নি কিন্তু ক্রিয়াটিনিন লেভেল বেশি, এমন রোগীদেরও কিন্তু সংক্রমণ ও জটিলতার আশঙ্কা বেশি থাকে। কাজেই তাঁরাও কিছু বিশেষ সাবধানতা মেনে চলুন। যেমন:
• শরীর যে অবস্থায় আছে, তার চেয়ে যেন বেশি খারাপ না হয়ে যায়, সে দিকে খেয়াল রাখুন। যে রকম খাবার খেতে বলেছেন চিকিৎসক, যে রকম জীবনযাপন করতে বলেছেন, ঠিক সে রকমই করুন। কারণ শরীর বেশি খারাপ হলে এই মুহূর্তে চিকিৎসার সুযোগ যেমন কম, রোগের বাড়াবাড়ি হলে প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও কমে সংক্রমণের আশঙ্কাও কিন্তু বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন: করোনা থাবা বসাতে পারে শিশুর শরীরেও, কী কী সাবধানতা নেবেন
প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র খেতে যেন ভুল না হয়।
• চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বেরবেন না। কোভিড ঠেকানোর সাধারন নিয়ম মেনে চলুন অক্ষরে অক্ষরে।
• ডায়ালিসিসে আসা-যাওয়ার পথে মাস্ক পরে নিতে পারেন।
• কিডনির রোগ থাকলে আগের চেয়ে কম জল খান। কতটা জল শরীরের জন্য দরকার, তা চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন।
• ব্যথা-বেদনা হলে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনও ব্যথার ওষুধ খাবেন না। কারণ ওই সব ওষুধে শরীরে জল জমার প্রবণতা বাড়ে।
আরও পড়ুন: সংক্রমণ এড়াতে পুরনো ইস্ত্রি, রেকর্ড, ডিভিডি প্লেয়ার নিয়েও সতর্ক হোন
• বেশি ঠান্ডা ঘরে না শোওয়াই ভাল। কারণ নিয়মিত সার্ভিসিং না হলে এসি-র ডাক্টে জীবাণুর রমরমা হয়, দুর্বল প্রতিরোধশক্তির মানুষ চট করে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারেন। তা ছাড়া, এখন যেহেতু খুব একটা গরম পড়েনি, এসিতে শুলে গা-হাত-পা একটু ব্যথা ব্যথা হতে পারে। গা ম্যাজম্যাজ করতে পারে। তাতে অন্য বিপদ না হলেও গ্রাস করতে পারে কোভিডের আতঙ্ক।
• জ্বর-সর্দি-কাশি হলে আলাদা ঘরে থাকুন ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। রোগীর আত্মীয়রাও সাবধানতার সব নিয়ম মেনে চলুন।