প্রতীকী ছবি।
প্রায় ৪৪ বছর আগে সংক্রামক রোগের একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল রাজ্য শিক্ষা দফতর। বলা হয়েছিল, ওই তালিকাভুক্ত কোনও রোগে আক্রান্ত হলে কোয়রান্টিনে থাকার ছুটি পাবেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষাকর্মী। সেই তালিকায় আজও রয়ে গিয়েছে স্মল পক্স। অথচ, কোভিড ১৯-এর ঠাঁই হয়নি সেখানে। এ বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘‘পৃথিবী থেকে স্মল পক্স কিন্তু অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।’’
তথ্য ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, ভারতে শেষ বার স্মল পক্স দেখা গিয়েছিল অসমে, ১৯৭৫ সালে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ১৯৯৪ সালে এ দেশে শেষ যে মহামারি হয়েছিল, তা ছিল প্লেগ। ১৯৭৭ সালে স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত ওই তালিকায় প্লেগও রয়েছে। রয়েছে ‘স্কারলেট ফিভার’, ‘টাইফাস’ এবং ‘সেরিব্রো স্পাইনাল মেনিনজাইটিস’-এর মতো রোগও। স্কারলেট আজকাল খুবই কম দেখা যায়। দ্বিতীয়টি অবশ্য এখনও রয়েছে।
ওই তালিকায় অবশ্য নাম নেই করোনার। কারণ, করোনার বয়স মাত্র এক বছর। সেই কারণে সরকারি নিয়ম অনুসারে কেউ করোনায় আক্রান্ত হলেও কোয়রান্টিনে যাওয়ার ছুটি তিনি পাবেন না। আর সেখানেই আপত্তি শিক্ষকদের। তাঁদের দাবি, ৪৪ বছর আগে প্রকাশিত সংক্রামক রোগের ওই তালিকার পরিমার্জন করা হোক। শিক্ষকদের বক্তব্য, ওই তালিকায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া রোগের নাম আছে, অথচ, যে সংক্রমণ নিয়ে বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক, সেটির নাম নেই। তালিকায় নেই চিকেন পক্স বা জলবসন্তের মতো সংক্রামক রোগের নামও।
শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, যে সমস্ত সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মীরা কোয়রান্টিনে যাওয়ার ছুটি পান, সম্প্রতি অর্থ দফতর তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। তার মধ্যে করোনার জন্য কোয়রান্টিনে থাকার ছুটির উল্লেখ রয়েছে। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, সরকারি কর্মীদের মধ্যে সরকারি স্কুলের শিক্ষকেরা পড়লেও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল বা সরকার-পোষিত স্কুলের শিক্ষকেরা পড়েন না। অথচ, রাজ্যের বেশির ভাগ স্কুলই সরকার-পোষিত। ফলে শিক্ষকদের আশঙ্কা, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বা সরকার-পোষিত কোনও স্কুলের শিক্ষকের করোনা হলে তিনি কোয়রান্টিনে যাওয়ার ছুটি পাবেন না।
‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘তালিকার পরিমার্জন চেয়ে আমরা শিক্ষা দফতরকে অনেক বার চিঠি দিয়েছি। বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে প্রায় ৪৪ বছরের পুরনো কোয়রান্টিন ছুটির তালিকা পরিবর্তন করে জরুরি ভিত্তিতে চিকেন পক্স ও করোনাকে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।’’ শিক্ষা দফতরের কর্তাদের আশ্বাস, এ নিয়ে শিক্ষা দফতর আলাদা করে বিজ্ঞপ্তি জারি না করলেও সরকার-পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষকদের করোনা হলে তাঁরাও যাতে কোয়রান্টিনের ছুটি পান, তা দেখা হচ্ছে।