করোনার ভয়ে মাংস খাচ্ছেন না অনেকেই।
মুরগীর মাংস কি উস্কে দিচ্ছে করোনাভাইরাসের আশঙ্কা? আতঙ্কের রেশ এত দূর ছড়িয়েছে যে পশ্চিমবঙ্গে শেষ তিন সপ্তাহে রাজ্যে মুরগির বিক্রি কমেছে ৪০%। পোলট্রি ফেডারেশনের এক কর্তা এই হিসেব দিয়ে জানান, করোনা, মরফিন ইত্যাদি মারণ ভাইরাসের নাম জুড়ে ও রুগ্ণ মুরগিদের ছবি পোস্ট করে নানা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু হতেই শঙ্কা বাড়তে থাকে। বাধ্য হয়ে ভুয়ো প্রচার রুখতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তেহট্টের পুলিশ প্রশাসন।
কিন্তু সত্যিই কি মাংসে এতটা ভয় আছে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা?
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ গৌতম বরাটের কথায়, ‘‘এ সবই মানুষের রটানো ভয়। করোনা ভাইরাসের যা প্রকৃতি তাতে তা নির্দিষ্ট কিছু চিনা বাদুড় ও সাপের মাংস থেকে ছড়াতে পারে। কিন্তু কিছুতেই মুরগির মাংসে তা আসতে পারে না। ভারতীয় মুরগির শরীরে এই ভাইরাস-বিষ থাকা অসম্ভব। তবে অসুখ ছড়ালে কিছু বাড়তি সতর্কতা আমরা সব সময় নিতে বলি। তাই কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।’’
আরও পড়ুন: এই সব নিয়ম মানতে ভুল করবেন না, অসতর্ক হলেই থাবা বসাতে পারে করোনাভাইরাস
‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’ (হু)-ও ভারতীয়দের মাংস খাওয়ায় কোনও সমস্যা দেখছে না। সেখানেও বিশেষজ্ঞদের মতে, মাংস থেকে করোনা ছড়াতে পার, এ সব ভুয়ো ও ভিত্তিহীন দাবি। এমন আতঙ্ক না ছড়াতেও অনুরোধ করেছে হু।
নিয়ম মেনে চলার কথা বললেন ভায়ারোলজিস্ট সুশ্রুত বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর মতে,‘‘মুরগির মাংসে বা খাসির মাংস থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার কথা একেবারেই ভিত্তিহীন। আমরা, ভারতীয়রা যে ভাবে মাংস রান্না করি, তাতে যে কোনও ভাইরাসই অত আঁচে বাঁচে না। তবে যে কোনও ভাইরাস থেকে বাঁচার সহজ উপায় হল, রান্নার সময় কিছু নিয়ম মেনে চলা।’’
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: নেই প্রতিষেধক, কী ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে জানলেই রোখা যাবে অসুখ
কী কী নিয়ম?
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাংস কেনার পর খুব ভাল করে ধুয়ে নিন। অসুস্থ মুরগি বুঝলে তা কিনবেন না। করোনাবাইরাস না ছড়ালেও অন্য অসুখ দানা বাঁধতে পারে এতে। রান্নার সময় ভাল করে সেদ্ধ করে নিন। প্যাকেটজাত মাংস বা ফুড চেনে কিনতে পাওয়া যায় যে সব মাংস, সে সবে প্রিজারভেটিভ মেশানো থাকে। করোনার ভয়ে নয়, প্রিজারভেটিভ থেকে হওয়া ক্ষতি আটকাতেই এ সব খাবেন না।
কাজেই ভাল ভাবে সেদ্ধ করে নিশ্চিন্তে খান মাংস।