এখনও কোথাও কোথাও বাজারে এমন ভিড় দেখা যাচ্ছে, যা হওয়ার কথা নয়। -ফাইল ছবি।
লকডাউনের মধ্যেও আমাদের কখনও না কখনও বাড়ি থেকে বেরতেই হচ্ছে। যদিও এই সময় বাড়ি থেকে না বেরনোই সবচেয়ে ভাল। কিন্তু বাজার না করলে রান্নাবান্না হবে কী ভাবে? যেতে হচ্ছে দোকানেও। চাল, ডাল, মশলাপাতি আনতে হবে তো। তাই এখন খুব ভেবেচিন্তে দোকান, বাজার করতে হবে আমাদের। চার-পাঁচ দিন পর আবার বাজারে যাবেন, এটা ভেবে নিয়েই বাড়ি থেকে বেরতে হবে। দোকানের ক্ষেত্রেও তাই। বাজার, দোকানে কোন সময়ে গেলে ভিড় এড়ানোর সুযোগ তুলনামূলক ভাবে বেশি পাওয়া যাবে, সেটাও আগেভাগে ঠিক করে নিতে হবে। আর বাড়ি থেকে বেরলেই মাস্ক পরাটা তো একেবারে বাধ্যতামূলক।
জেনে নেওয়া যাক, কী ভাবে বাজার-দোকান করবেন লকডাউনের সময়
বাজার, দোকানে যে দিন যাবেন বলে ঠিক করেছেন, তার আগের দিন রাতেই বাড়িতে কী কী আনাজপাতি, শাকসব্জি, মশলাপতি কতটা আছে, দেখে নিন। বুঝে নিন কোনটা একেবারেই ফুরিয়ে গিয়েছে আর কোনটা এক-দু’দিনের মধ্যেই নিঃশেষ হয়ে যাবে। আর কোনটা আনাই হয়নি এর আগে। সেই মতো বাজার আর দোকান থেকে জিনিসপত্র আনার জন্য আলাদা আলাদা ভাবে দু’টি ফর্দ তৈরি করে নিন। ফর্দ বানানোর সময় মা, স্ত্রী, বোনেদের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন। জেনে নিন, তাঁদের কোনও কিছুর প্রয়োজন আছে কি না। কোন আনাজপাতি কী পরিমাণে আনা দরকার, মাছ, মাংস কত দিনের জন্য কতটা পরিমাণে আনা উচিত, সেই সব জেনে-বুঝে নেওয়ার জন্য বাড়ির লোকজনের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে ভাল। মাথায় রাখবেন, বাজার ও দোকানে আবার যাবেন চার কি পাঁচ দিন পর।তাই এমন ভাবে ফর্দ বানাবেন, যাতে আগামী চার-পাঁচ দিনের বাজার আর দোকান থেকে আনার জিনিসপত্র ঘরে মজুত করে রাখতে পারেন। বাজার, দোকানে গিয়েসেই ফর্দ মিলিয়ে জিনিসপত্র কিনে নিন। দেখবেন, তাতে আপনি দু’ভাবে উপকৃত হচ্ছেন। এক, যে কোনও জিনিসই বাজার ও দোকান থেকে এক সঙ্গে অনেক বেশি পরিমাণে কিনছেন বলে দামও কিছুটা কম হচ্ছে। তাতে গাঁটের কড়ি কিছুটা বাঁচছে। দুই, বাজার ও দোকানে কম যাওয়ার জন্য কমে যাচ্ছে আপনার সংক্রমণের আশঙ্কাও। আনাজপাতি, শাকসব্জি, ফলমূল কিনতে খুব ভোরে বা একটু বেলার দিকে বাজারে যেতে পারেন। তাতে ভিড়টা এড়াতে পারবেন। তবে মাছ, মাংসের জন্য সকালের দিকেই বাজারে যাওয়া উচিত। বেলা বাড়লে মাছ, মাংসের কাঙ্খিত গুণমান না-ও থাকতে পারে। দোকানে একটু সকালের দিকে যান। তাতে ভিড়টা এড়াতে পারবেন। কারণ, সকালে বাজারে যাওয়ার পর চাল, ডাল, মশলাপাতির জন্য একটু বেলার দিকে দোকানে যাওয়ার অভ্যাস আমাদের। তাই খোলার সঙ্গে সঙ্গেই দোকানে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
আরও পড়ুন- লকডাউনে বাড়ির লোকজনকে কী ভাবে সময় দেবেন?
আরও পড়ুন- পরোক্ষে ঘ্রাণশক্তিকে নষ্ট করে কোভিড-১৯, জানাল গবেষণা
বাজার বা দোকানে যেতে বাড়ি থেকে বেরনোর সময় মাস্ক পরে নেওয়াটা একেবারে বাধ্যতামূলক। বাজার বা দোকানে জিনিসপত্র কিনবেন লাইন দিয়ে।
এই ভাবে লাইন দিয়ে, বিক্রেতা ও অন্য ক্রেতাদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে জিনিসপত্র কেনা উচিত। ছবি- পিটিআই।
দেখে নেবেন সেই লাইনে আপনার আগে ও পরে যাঁরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তাঁরা মাস্ক পরে আছেন কি না। তাঁরা অন্তত এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখছেন কি না। না থাকলে তাঁদের মাস্ক পরে ফেলতে বলুন। অন্তত এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে বলুন। বাজার, দোকানে যাঁদের কাছ থেকে জিনিসপত্র কিনছেন, দেখে নিন, তাঁরাও মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরে আছেন কি না। বিক্রেতাদের থেকেও অন্তত এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বাজার, দোকান থেকে ফিরে দু’টি হাত সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজারে খুব ভাল ভাবে ধুয়ে নেওয়ার পর আনাজপাতি, শাকসব্জিও খুব ভাল ভাবে জলে ধুয়ে নিতে হবে। গরম জল হলে আরও ভাল। খুব ভাল ভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে মাছের থলে।মাছের বাজারে গিয়ে যদি হাত, পা, গায়ে রক্তের ছিটে লাগে, তা হলে বাড়িতে ফিরে খুব ভাল ভাবে স্নান করে নেওয়া উচিত। ওষুধের দোকানে গেলেও বাড়ির কার কার কোন কোন ধরনের ওষুধ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে লাগবে, জেনে নিন। একটা ফর্দ করে নিন। এ ছাড়াও মাথাব্যথা, পেটের অসুখ, জ্বর, সর্দি, কাশি, বমি, হজমের গোলমালের কিছু ওষুধ বাড়িতে আগেভাগে মজুত করে রাখা ভাল। যাঁরা ডায়াবিটিস,অন্যান্য জটিল রোগ বা নানা ধরনের হার্টের অসুখে ভোগেন, তাঁদের জন্য অনেক দিনের ওষুধ মজুত করে রাখা দরকার। কারণ, তাঁদের নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন। কোনও কারণে দোকানে গিয়ে সেই ওষুধ যদি কোনও দিন না পান, তা হলে ওই সব রোগীর খুব অসুবিধা হবে। সেটা ভেবেই কিছু ওষুধ বাড়িতে মজুত করে রাখা উচিত এই লকডাউনের সময়।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।