তুলসি পাতা ও বাসক পাতা গরম জলে ফুটিয়ে নিয়ে মধু মিশিয়ে খেলে কাশির দমক কমবে। ফাইল চিত্র
কোভিড সারার পরেও দুর্বলতা থেকে যায় মাস খানেকের বেশি। অল্প হাঁটাচলা করলে হাঁপিয়ে ওঠেন রোগী। হঠাৎ বুক ধড়ফড় করে। মাঝেমাঝে মাথা ঘোরে। সামগ্রিক ভাবে দুর্বল বোধ করা, ঘুমের অভাব বা হজমের গোলযোগ চলতে থাকে। এ সবের হাত থেকে রেহাই পেতে কিছু ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করে ভাল ফল পাওয়া যায়। কিছু খাবার কফ বাড়িয়ে দেয়। করোনা থেকে সেরে ওঠার পরে সে সব কিছু দিনের জন্য বন্ধ রাখা উচিত।
পুঁইশাক, কচু, বেগুন, ঢ্যাঁড়শ, দই এবং ফ্রিজে রাখা বাসি ও ঠান্ডা খাবার এখন না খাওয়াই ভাল। এমনই জানালেন বাঁকুড়ার পত্রসায়র ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার আয়ুর্বেদ চিকিৎসক সুমিত সুর। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে এক গ্লাস গরম জল খেয়ে দিন শুরু করতে হবে। যাঁদের কাশি আছে, তাঁরা কয়েকটি তুলসি পাতা ও বাসক পাতা গরম জলে ফুটিয়ে নিয়ে মধু মিশিয়ে খেলে কাশির দমক কমবে। ফুসফুসও ক্রমশ আগের অবস্থায় ফিরবে। কোভিড সংক্রমণের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে ফুসফুসের উপরে। একই সঙ্গে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। তাই নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া ও শ্বাসের ব্যায়াম করা দরকার। নিয়মিত অনুলোম-বিলোম করলে সুফল মিলবে।
পিৎজা, বার্গার, রোলের মতো বাইরের খাবার বন্ধ রাখা জরুরি। পাঁউরুটি খাওয়াও বন্ধ রাখতে পারলে ভাল। এ সবের পরিবর্তে বাড়ির সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে। কোভিডের পরে কিছু দিন লঙ্কা খাওয়াও ঠিক নয়। এর পরিবর্তে আদা, গোলমরিচ, লবঙ্গ ঝাল হিসেবে খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। অনেকে বাড়তি প্রোটিন খাবার কথা বলেন।
ভাইরাসের সংক্রমণে প্রোটিন বেশি খাওয়া দরকার। তবে কষে রান্না না করে গাজর, পেঁপে, গোলমরিচ দিয়ে রান্না করা মুরগির ঝোল, ডিম সেদ্ধ, মাছের হাল্কা ঝোল খাওয়া যায়। অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে ৩-৪ গ্লাস গরম জল খাওয়া দরকার। ডায়াবিটিস বা ক্রনিক কিডনির অসুখ না থাকলে গরম জলে মধু মিশিয়ে খেলে ভাল হয়। মেথি ভেজানো জল, আমলকি, হরতকি ও বহেড়া একসঙ্গে কাচের গ্লাসে উষ্ণ জলের মধ্যে প্রতি রাতে ভিজিয়ে রেখে, সকালে ছেঁকে নিয়ে খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। সঙ্গে হজমের গোলমাল এবং বায়ু ও পিত্তর প্রকোপ কমবে। গরম দুধে দুই চামচ হলুদ মিশিয়ে খেতে হবে নিয়ম করে। সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট কমাতে মধু দিয়ে পিপুল খেলে উপকার হয়।