করোনা রুখতে মনে রাখুন কিছু আবশ্যিক নিয়ম।
লকডাউনে মানুষে মানুষে সোশ্যাল ডিসট্যান্স নয়, ফিজিক্যাল ডিসট্যান্স বজায় রাখতে পারলেই সার্স কোভ-২ করোনাভাইরাস আটকানো যাবে। কিছু পরামর্শ দিলেন সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ অমিতাভ নন্দী।
দূরত্ব বজায় রাখুন
• ফিজিক্যাল ডিস্ট্যান্স বজায় রাখা আর পরিচ্ছন্ন থাকা কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসকে দূরে রাখার একমাত্র উপায়।
• বাড়িতে শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যরাই থাকুন, গৃহকাজের সহায়ক কর্মীকে ছুটি না দিলে আপনার থেকে তাঁর ও তাঁর থেকে আপনার সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায়।
• দোকান-বাজারে ভিড় থাকলে সেখানে যাবেন না। গোল গোল দাগের মধ্যে দাঁড়িয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আটকানো যায় না। তিন ফুট বা এক মিটারের চেয়ে বেশি দুরত্বে যে এই ভাইরাস যেতে পারে না— এমন তত্ত্বের কোনও প্রমাণ নেই।
• শুধু যে নাক-মুখ দিয়ে শরীরে ভাইরাসের প্রবেশ করা আটকালেই সুস্থ থাকবেন তা কিন্তু নয়। বাতাসে ভেসে থাকা ভাইরাস বাজারের ব্যাগে বা জামাকাপড়ে আটকে গিয়ে বাড়িতে চলে আসতে পারে।
• বাজারে যান সপ্তাহে দু’দিন। বাজার থেকে ফিরে সোজা বাথরুমে গিয়ে জামাকাপড় গরম জলে কেচে, হাত-পা সাবান দিয়ে ধুয়ে তবেই ঘরে যান। বাজারের ব্যাগও গরম জলে সাবান দিয়ে কেচে নিতে হবে। গরম জলে সব সব্জি ডুবিয়ে রেখে রোদে শুকনো করে ফ্রিজে তুলুন।
আরও পড়ুন: ডায়াবিটিসে ভুগছেন? করোনা থেকে বাঁচতে কী করবেন?
সোশ্যাল ডিসট্যান্স খুব গুরুত্বপূর্ণ।
• মাটিতে বসে যাঁরা ফল-সব্জি বিক্রি করেন সেখান থেকে ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি। তুলনামূলক ভাবে যাঁরা উঁচু বেদিতে বসে বিক্রি করেন তাঁদের থেকে সব্জি কেনা উচিত।
• বাড়ি থেকে বাজারের ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে যাওয়া উচিত, দোকানির প্লাস্টিক নেবেন না।
• মোবাইল থেকেও কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। তাই নিতান্ত দরকারে বাইরে যেতে হলে বাড়িতে মোবাইল রেখে যান।
• বাইরে থেকে ফিরে হাত কনুই অবধি সাবান দিয়ে ধুতে হবে। ওই সাবান দিয়ে কলও ধুয়ে নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
• বাইরে বেরলে ভুলেও নাকে-মুখে বা চোখে হাত দেবেন না।
• পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখলে মাস্ক থেকেও ভাইরাস ছড়িয়ে যেতে পারে। গ্লাভসের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
• জরুরি পরিষেবায় যাঁরা কর্মরত তাঁদের বিশেষ সাবধানতা না নিলে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত ঠেকানো মুশকিল।
• সাংবাদিক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ ও রাজনীতিক— প্রত্যেকেরই যথাযথ মাস্ক পরা উচিত।
আরও পড়ুন: অনেকেই উপসর্গ বুঝতে পারছেন না, কী হলে আপনার অবিলম্বে টেস্ট করানো উচিত?
• টেলিভিশনের সাংবাদিকদেরও বুমের ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া উচিত।
• ত্রাণ বিলিবণ্টনের ব্যাপারেও জনপ্রতিনিধিদের সচেতন হতে হবে। এক জায়গা থেকে ত্রাণ বণ্টন না করে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের সাহায্যে প্রত্যেকের বাড়ির সামনে রোদের মধ্যে ত্রাণ পৌঁছে দিলে ভাল হয়। কড়া রৌদ্রে ভাইরাস বেশি সক্রিয় থাকতে পারে না। তাই বেলা বাড়লে বাজার-দোকান যাওয়া ও ত্রাণ বিলি করলে ভাল হয়।
• মানুষে মানুষে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং হাত-মুখ সাবান দিয়ে ধুয়ে কাফ এটিকেট মেনে সার্স কোভ–২ করোনাভাইরাস দূর করতে শপথ নিতে হবে সবাইকে।