‘আর্ট মেলা’-এ শিল্পী গৌতম প্রামাণিকের কাজ। ছবি: সংগৃহীত।
শিল্প সাধ্যের বাইরে। এমনই মধ্যবিত্তের ধারণা। ফলে শিল্পের সঙ্গে সাধারণ সংসারের খানিক দূরত্ব থেকেই যায়। কিন্তু তাতে সংস্কৃতির ক্ষতি হয়। সংসার যত ক্ষণ না পাবে শিল্পের ছোঁয়া আর শিল্প যদি না পাবে সাধারণের ভালবাসা, তবে সংস্কৃতি বয়ে চলবে কী ভাবে!
সাধারণের জীবনের সঙ্গে শিল্পের দূরত্ব ঘোচানোর দায়িত্ব নিয়েছে দক্ষিণ কলকাতার সিমা গ্যালারি। সাধারণের আয়ত্তের মধ্যে শিল্পকাজ নিয়ে এসেছে তারা। সে সব শিল্পকর্ম নিয়েই শুরু হয়েছে এ বছরের আর্ট মেলা। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। চলবে রবিবার পর্যন্ত।
পরেশ মাইতির স্কেচও দেখা যাবে মেলায়। ছবি: সংগৃহীত।
শিল্পের সঙ্গে দূরত্বের অনেকটা কারণই হল তার মূল্য। অনেকের মধ্যেই ধারণা আছে যে, শিল্প এমনই জিনিস, যা সহজে কেনা যায় না। দাম হয় আকাশছোঁয়া। সে ধারণা সম্পূর্ণ ভুলও নয়। প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের কাজ তো হয়ই অনেক দামের। তবে এমনও শিল্প হয়, যা ততটাও দুষ্প্রাপ্য নয়। সে সব সকলের নাগালে নিয়ে আসে ‘আর্ট মেলা’। তাতে যেমন আছে যোগেন চৌধুরী, লালুপ্রসাদ সাউ, পরেশ মাইতি, সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়, বিমল কুন্ডুর মতো অতি পরিচিত শিল্পীদের কাজ, তেমনই আছে তরুণ প্রজন্মের নতুন নতুন শিল্পকর্ম। সিমা পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীরা যেমন আছেন তালিকায়, তেমনই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের পুরস্কার পাওয়া শিল্পীদের কাজও রয়েছে। গ্যালারির তরফে জানানো হয়, তরুণ সমাজের হাতের নাগালে শিল্পীদের কাজ নিয়ে আসার জন্য যথেষ্ট দাম কমিয়েই রাখা হয় এই মেলায়। নামী শিল্পীরাও এ সময়ে নিজেদের কাজ অনেক কম দামে দিয়ে দেন।
অনেকের মনে হতে পারে, শিল্প সকলের আয়ত্তে নিয়ে আসা নিয়ে এত ব্যস্ততা কেন। শিল্প নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে। তরুণরা প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের আঁকা, ভাস্কর্যের মতো জিনিস ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখতে উৎসাহী হচ্ছেন। আর তাঁদের উৎসাহ জোগাতেই এগিয়ে এসেছে সিমা গ্যালারি। সে কারণেই এই ‘আর্ট মেলা’-র আয়োজন। নভেম্বরের ২৪ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত বালিগঞ্জের এই গ্যালারিতে গিয়ে ঘুরে দেখা যাবে মেলা। চলবে প্রতি দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।