কলকাতার সিমা গ্যালারি এই গ্রীষ্মে জলরঙের কিছু কাজ প্রদর্শন করছে।
জলরং জলের মতো সরল নয়। জলের ব্যবহারে রঙের মাধুর্য ফুটিয়ে তোলা সহজ নয়। বরং শিল্পের সবচেয়ে কঠিন মাধ্যমের মধ্যে একটি। আর সে কারণেই বুঝি জলরঙের শিল্প আলাদা ভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে এসেছে সেই প্রাচীন কাল থেকে।
কলকাতার সিমা গ্যালারি এই গ্রীষ্মে জলরঙের কিছু কাজ প্রদর্শন করছে। সাত তরুণ শিল্পীর সে সব কাজে কখনও দেখা যাবে দেশের নানা প্রান্তের জলছবি, কখনও ফুটে উঠবে অতিমারির এ সময়ের ছোট ছোট গল্প। জলরং নিয়ে কাজ অনেক হয়েছে। হয়েছে পরীক্ষাও। সময়ের সঙ্গে ছবি আঁকার এই মাধ্যম এনেছে বৈচিত্র। তরুণ শিল্পীমন সেই মাধ্যমকে কী ভাবে আপন করেছে, কতটা নিজের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছে, এ প্রদর্শনী তারই নির্দশন।
জলরঙে আঁকা ছবি যেমন আপাত ভাবে সরল দেখায়, ঠিক ততটাই সতর্কতার দাবি জানায়। অঙ্কন বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যরঞ্জন দাস, সাদিকুল ইসলাম, বাবলি পাল, সন্দীপ রায়, শান্তনু রায়, প্রভাকর সিংহ— এই সাত শিল্পীর কাজও সে কথা তুলে ধরে।
শিল্পী: শান্তনু রায়
শিল্পী: প্রভাকর সিংহ
ভারতের পাশাপাশি, প্রাচীন মিশর এবং চিনের গুহাচিত্রে জলরং ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে এই মাধ্যমটি ততটাও জনপ্রিয় ছিল না কাগজের ব্যবহার প্রচলিত হওয়ার আগে পর্যন্ত। কাগজে ছবি আঁকার প্রচলন যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে জলরং নিয়ে কাজ। এখন নানা ধরনের কাগজের ব্যবহার দেখা যায় শিল্পীদের মধ্যে। আর তার ভিত্তিতে জলরঙের কাজও হয় রকমারি। জলরং নিয়ে সে সব পরীক্ষার প্রদর্শনও এ বার মিলবে সিমা গ্যালারিতে। কোনও ক্যানভাসে যেমন ফুটে উঠছে উনিশ শতকের ধারা, কোনও ফ্রেমের বাধানো হ্যান্ডমেড পেপার আবার দেখাচ্ছে কী ভাবে জলরং ধরে রাখার ধরন বদলে গিয়েছে। তুলির টানের উপর কী ভাবে নির্ভর করে জলরঙে কথোপকথন, তা নিয়েও হয়েছে নীরিক্ষা। সব ধরা থাকছে এই প্রদর্শনীতে।
‘ওয়াটারকালার’ শীর্ষক সেই প্রদর্শনী সূচনা হবে আজ, ১ এপ্রিল, শুক্রবার সন্ধ্যায়। চলবে আগামী ৩০ তারিখ পর্যন্ত। রবিবার ও ছুটির দিন বাদে যে কোনও দিন সন্ধ্যা ৭টার আগে পৌঁছে গেলে দেখা যাবে শিল্পীদের তুলির টানে জলরঙের সেই গভীর কারুকাজ।