ছবি : সংগৃহীত।
যিশু বা শ্রীচৈতন্য প্রেমের শিক্ষা দিয়েছিলেন। তবে সেই ‘প্রেম’-এ বলা হয়েছিল মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসার কথা। চিনের সরকারও সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের নতুন প্রজন্মকে প্রেমের শিক্ষা দেওয়ার। তবে সেই প্রেমের সঙ্গে বিশ্বমানবতা বা ‘জীবে প্রেম’-এর কোনও সম্পর্ক নেই। চিনের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সরকারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দেশের নয়া প্রজন্মকে নারী-পুরুষের প্রথাগত প্রেমের ব্যাপারে শিক্ষিত করে তুলতে। অর্থাৎ এমন প্রেম, যাতে পরষ্পরের প্রতি আকর্ষণ থাকবে, হরমোনের পাগলামি থাকবে, পূর্বরাগ-অনুরাগ-মিলন-বিরহ, তীব্র চাওয়া-পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা— সব থাকবে। পরিণতিতে বিয়ে এবং সন্তান-সন্ততি নিয়ে সুখী সংসারও থাকবে!
ছবি: সংগৃহীত।
কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিভাগে ওই শিক্ষা মিলবে, সেই পাঠক্রমের নাম হবে ‘লভ এডুকেশন’ অর্থাৎ প্রেমের শিক্ষা। তবে ‘লভ এডুকেশন’-এর আসল উদ্দেশ্য যত না প্রেম, তার চেয়ে অনেক বেশি সন্তান উৎপাদন এবং পারিবারিক সংস্কৃতির ইতিবাচক দিকগুলির প্রচার। গত দু’বছর ধরে লাগাতার জনসংখ্যা কমতে শুরু করেছে চিনে। তাতেই উদ্বিগ্ন চিন সরকার এখন চাইছে, দেশের কমবয়সি তরুণ-তরুণীরা আরও বেশি করে প্রেমে পড়ুন এবং বিয়ে করে সন্তান-সন্ততির জন্ম দিন। যাতে দেশে শিশুর জন্মের হার বা়ড়ে।
ছবি: সংগৃহীত।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল দেশ চিন। মোট জনসংখ্যা ১৪০ কোটি। যদিও চিনের সংবাদমাধ্যমগুলিতে ঘোরাফেরা করা তথ্য বলছে, সেই জনসংখ্যার অধিকাংশই দ্রুত বার্ধক্যের দিকে ঢলছে। অন্য দিকে, চিনের কর্মসংস্কৃতির দৌলতে এবং আরও নানা মানসিক চাপের কারণে চিনের তরুণ প্রজন্ম সন্তান জন্ম দেওয়া তো দূর, বিয়ে, এমনকি প্রেমে পড়ার ব্যাপারেও বিমুখ হয়ে পড়ছে। একটি সমীক্ষায় চিনের বিভিন্ন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ শতাংশ ছাত্রছাত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা প্রেম করতে চান না। কারণ, পড়াশোনা এবং কেরিয়ার সামলে ভালবাসার মানুষটির জন্য আলাদা করে সময় বার করতে পারবেন না।
—ফাইল চিত্র।
দেশের তরুণ প্রজন্মের ওই মনোভাব এবং জনসংখ্যায় হাতেনাতে তার প্রভাব দেখতে পেয়ে চিন্তিত চিন প্রশাসন তাই ঠিক করেছে, বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই পদক্ষেপ করার। দেশের ভবিষ্যৎ এবং আগামী দিনের অর্থনীতির কথা ভেবে তাই সক্রিয় হয়েছে চিনের প্রশাসন। একেবারে কলেজস্তর থেকেই পড়ুয়াদের পরিবার সংস্কৃতি এবং সন্তান ধারণের প্রতি ভাললাগা তৈরির চেষ্টা করবে তারা।