দাবি, প্রয়োজনে ব্যবহারকারীর মুছে ফেলা ছবিও যাতে তৃতীয় ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া যায়, সে রকম নিয়ম চালু করতে চলেছে ফেসবুক।
নাম বদলে ‘মেটা’ হতেই ব্যবহারকারীর ছবি-ব্যবহার নিয়ে পুরনো বিতর্ক ফিরে এল। না জানিয়েই যে কোনও উদ্দেশ্যে ব্যবহারকারীর ছবি ব্যবহার করতে পারবে ফেসবুক থুড়ি মূল সংস্থা ‘মেটা’— এই অভিযোগ নিয়েই কার্যত তোলপাড় ফেসবুক। নাম বদল সম্পূর্ণ হতেই ওই নেটমাধ্যমের নিয়মবিধিতে বেশ কিছু বদল আনা হয়েছে বলেও দাবি করা হচ্ছে। যদিও সেই সব দাবি ভিত্তিহীন বলেই জানাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
ফেসবুকে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘আগামী কাল থেকে নতুন ফেসবুক/মেটা নিয়ম শুরু হবে, যেখানে তারা আপনার ছবি ব্যবহার করতে পারবে। ভুলে যাবেন না, শেষ তারিখ আজ! এটা আপনার বিরুদ্ধে মামলায় ব্যবহার করা যেতে পারে।’
ফেসবুকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ অবশ্য সাম্প্রতিক কালের নয়। ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে প্রথম নজরে এসেছিল এই রকম একটি পোস্ট। তখনও একাংশের দাবি ছিল, প্রয়োজনে ব্যবহারকারীর মুছে ফেলা ছবিও যাতে তৃতীয় ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া যায়, সে রকম নিয়ম চালু করতে চলেছে ফেসবুক। বর্তমানে যে পোস্টটি ফের ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে, তাতে সামান্য কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। ফেসবুকের বিরুদ্ধে অধিকার হননের অভিযোগ তুলে পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘ইউসিসি আইনের অধীনে ১-২০৭, ১-৩০৮... আমি আমার অধিকার সংরক্ষণ আরোপ করছি।’
অন্য ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে ওই পোস্টটি শেয়ার করার আবেদন জানিয়ে শেষে লেখা হয়, ‘আমি ফেসবুক/ মেটাকে তাদের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা, আমার তথ্য শেয়ার করার অনুমতি দিচ্ছি না। ছবি, বর্তমান বা অতীত, জনসংখ্যা, ফোন নম্বর বা পোস্ট... একদম আমার লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনও কিছু কোনও রূপে ব্যবহার করা যাবে না।’
এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ জানিয়ে মূল পোস্টটিকেও ‘গুজব’ বলে দাবি করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ফেসবুকও পোস্টটিকে ‘ভুয়ো খবর’ হিসেবেই চিহ্নিত করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূল সংস্থার নামবদল হলেও ফেসবুক যে পরিষেবা দিয়ে থাকে, তাতে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। তা লেখাও রয়েছে ফেসবুকের ‘টার্মস অব সার্ভিস’-এর পাতায়।
আরও বলা রয়েছে, ব্যবহারকারী ফেসবুকে যে বিষয়বস্তু (কনটেন্ট) তুলে ধরেন, তার উপর ব্যবহারকারীর মেধাস্বত্বের অধিকার থাকে। কোনও নিয়মই সেই অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। এই বক্তব্য তুলে ধরেই ফেসবুকের বিরুদ্ধে ছবি, পোস্টের যথেচ্ছ ব্যবহার সংক্রান্ত অভিযোগ খারিজ করছে বিশেষজ্ঞ মহল। যদিও এ বিষয়ে সরকারি ভাবে ‘মেটা’-র তরফে কোনও বিবৃতি সামনে আসেনি এখনও।