ক্যালোরি ঝরানোর নানা পদ্ধতিতেই নিয়ন্ত্রণে রাখুন ওজন। ছবি: শাটারস্টক।
ব্যায়াম করেই ক্যালোরি ঝড়াতে হবে এমন নয়৷ কথা বললে, খেলে, হাসলে, এমনকি ঘুমোলেও ক্যালোরি খরচ হয়৷ আমরা যে শ্বাস নিই, খাবার হজম হয়, ঘাম হয়, তাতেও টুকটাক খরচ হয় ক্যালোরি। ঘরের কাজ, বাজার–হাট, সিঁড়ি ভাঙাতেও খরচ হয় ক্যালোরি। শ্রমের কাজে ক্যালোরি খরচের হার বেশি, আরামের কাজে কম। তবে একটু হিসেব করে চললে, এত দিন যা খরচ হচ্ছিল তার চেয়েও ১০০–২০০ ক্যালোরি খরচ বাড়াতে পারবেন অনায়াসে।
তার সঙ্গে দু’–চারটে খাবারের সময় ও ব্যবহারকে একটু এ দিক ও দিক করলে আরও ২০০–৩০০ ক্যালোরি কমানো সম্ভব৷ আর এটুকুতেই মাসে দু’–এক কেজি ওজন কমে যাবে। ৬–৮ মাস লেগে থাকলে ৭–৮ কেজি ওজন কমার কথা, যদি না মাঝপথে ভুলভাল কিছু করে বসেন।
কাজেই শুধু ডায়েট বা ব্যায়ামই ওজন কমানোর শেষ কথা বলে না, এ সবের সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ঘাম ঝরিয়ে কিছু কাজেরও দরকার পড়ে। কিন্তু কোন কাজে কতটা ক্যালোরি খরচ হয় আর কী ভাবে তা জানলে মেদবৃদ্ধি প্রতিরোধ ও কাঙ্ক্ষিত ওজন ধরে রাখা অনেক সহজ হয়।
আরও পড়ুন: শীতে পা ফাটাকে ভয়? নামমাত্র খরচে এই উপায়ে দূরে রাখুন সমস্যা
বাজার-দোকান সারতেও ঝরে মেদ।
ক্যালোরি খরচের পন্থা
পুষ্টিবিদ সুমেধা সিংহের মতে, দিনান্তে এক বার যদি সিঁড়ি ভেঙে উঠুন। ওজন ৭০ কেজির মতো হলে ৫ মিনিট টানা উঠলে খরচ হবে ৯০–৯৫ ক্যালোরি। ওজন বেশি হলে এক তলা, দোতলা করে উঠে অভ্যাস তৈরি করুন৷ আর নামুনও নিয়মিত। ৫ মিনিট নামলে খরচ হবে ৪০–৫০ ক্যালোরি৷ বাজার করেন? ধারে–কাছের বাজারে গিয়ে, বাজার করে হেঁটে বাড়ি ফিরতে ১০ মিনিটে ৩৫–৪০ ক্যালোরির মতো খরচ হয়৷ ১০ মিনিট স্ট্রেচিং করলে, বাসন ধুলে বা ইস্ত্রি করলে পুড়বে ২৫–৩০ ক্যালোরি। ১০ মিনিট ঘর মুছলে ৪০–৪৫ ক্যালোরি, রান্না করলে ৩৫–৪০ ক্যালোরি খরচ হবে। ৭০ কেজি–র মানুষ ১০ মিনিট নাচলে ৫৫–৬০ ক্যালোরি খরচ হয়। খেলে ঝরে ১৮, টিভি দেখলে ১১, ঘুমোলে ১০৷ যৌন সম্পর্কেও ঝরে ক্যালোরি। শারীরিক সঙ্গমে ঝরে ২৫–৩০ ক্যালোরি।
শ্রমের কাজের পাশাপাশি জেনে নেওয়া প্রয়োজন খাওয়াদাওয়ায় কত খরচ হতে পারে। যেটুকু ঝরছে, তার চেয়ে আরও ১০০–২০০ খরচ বাড়াতে কী কী করতে হবে সে সব জানাও বেশ জরুরি। সেগুলি করার পাশাপাশি খাওয়াবাবদ ক্যালোরি কমানোর চেষ্টা করুন।
আরও পড়ুন: শুধু যৌন সংসর্গই নয়, এডস ছড়াতে পারে এ সব কারণেও!
খাবারের পরিমাণ কমান।
কম ক্যালোরি খান
আগে যত খেতেন তার চেয়ে ৪০০–৫০০ ক্যালোরি কম খান। এই নিয়ম বরাদ্দ থাকুক সপ্তাহে ৫–৬ দিন। ব্রেকফাস্টে লো ক্যালোরির সুষম খাবার পেট ভরে খান৷ না হলে দুপুরে বেশি খেয়ে ফেলবেন৷ ডিনার করুন শুতে যাওয়ার অন্তত দু’ ঘণ্টা আগে৷ এতে শরীরে চর্বি কম জমবে। দিনে তিন বার মূল খাবার ও দু’–বার হালকা কিছু খান। চিনি, ময়দা, পাস্তা, নুডলসের মতো সিম্পল কার্বোহাইড্রেটের বদলে খান কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট, যেমন— ব্রাউন রাইস, ব্রাউন ব্রেড, আটার রুটি বা আটা নুডল, শাক–সব্জি–ফল। খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে খান ফ্রুট স্যালাড। জাঙ্ক ফুড ও প্যাকেট করা খাবারের বদলে খান কম তেলে বাড়িতে বানানো খাবার। আগের চেয়ে কম খান৷ ব্যাতিক্রম শুধু শাক–সব্জি–ফল ও জল।